টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাস চাপায় নির্মাণ শ্রমিক এলিম সিকদার নিহতের সাত দিনের মাথায় একই স্থানে রাশেদুজ্জামান রাশেদ (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার রাত দুইটার দিকে মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুত গতির অজ্ঞাত গাড়ী চাপা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রাশেদ পাকুল্যা বাজার বণিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক ও পাকুল্যা পুর্বপাড়ার সিরাজুল ইসলাম ননি মিয়ার ছেলে। এদিকে দীর্ঘদিনেও ব্যস্ততম পাকুুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আন্ডার পাস নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আন্ডার পাস নির্মাণের দাবিতে যে কোন সময় তারা আবার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে অবরোধ সৃষ্টি করতে পারে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড একটি ব্যস্ততম এলাকা। জেলার নাগরপুর, দেলদুয়ার উপজেলাসহ আশপাশের অধিকাংশ এলাকার মানুষ রাজধানী ঢাকা ও জেলা সদরে পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া উপজেলাস্থ জামুর্কী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা মানষসহ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে শতশত মানুষ পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করে থাকে। ব্যস্ততম এই বাসস্ট্যান্ড পারাপার হতে গিয়ে ইতিমধ্যে অর্ধ শতাধিক মানুষ গাড়ী চাপায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৬ জুলাই দুপুরে পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়ক পারাপারের সময় পারভীন আক্তার (২৭), তার মেয়ে সাদিয়া (৯) ও ছেলে সুমন (৭) মারা যান। এছাড়া ১৮ অক্টোবর সকালে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক এলিম সিকদার নিহত হন। এসব কারণে দীর্ঘদিন ধরে পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ডে একটি আন্ডার পাস নির্মাণের দাবি করে আসছে এলাকাবাসী। আন্ডারপাসের দাবিতে ইতিমধ্যে একাধিকবার মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ করে অবরোধ করে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসকসহ সাসেক প্রকল্পের কর্মকর্তারা আন্ডার পাস নির্মাণের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনও আন্ডার পাস নির্মাণ হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত তাজা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেই চলছে।
এদিকে আজও পাকুল্যা বাজারের ব্যবসায়ী রাশেদ নিহতের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় তারা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে অবরোধ সৃষ্টি করতে পারে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
পাকুল্লা গ্রামের বাসিন্দা রিপন চৌধুরী, শামীম আল মামুন চৌধুরী ইমরানসহ অনেকে বলেন, এ পর্যন্ত এই স্থানে প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গেছে। তারপরও জনগুরুত্বপূর্ণ এই জায়গায় একটি আন্ডার পাস নির্মাণ করা হচ্ছে না। অথচ এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আন্ডার পাস নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে মাননীয় এমপি মহোদয়, জেলা প্রশাসকসহ সাসেক প্রকল্পের কর্মকর্তারা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন একমাসের মধ্যে আন্ডার পাস নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু বাস্তবে কোন কাজ হয়নি। তারা অনতিবিলম্ব পাকুল্যাতে আন্ডার পাস নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে সাসেক। তারা ডিসেম্বর মাসে এই প্রকল্প সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবে। এরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগ পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ওড়াল সেতু নির্মাণ করে দেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন