যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এক প্রধান শিক্ষকের হটকারিতার কারণে একটি অটিজম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে। স্কুলের কমিটি, শিক্ষা অফিস এমনকি ইউএনওকে থোড়াই কেয়ার করছেন ওই শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকারা এমনটি জানিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের নামে ৮ শতক জমি দান করে তিনি বিদ্যালয়টিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুই বোনসহ (রোজিনা সুলতানা ও পলি খাতুন) নিজেই ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি স্ত্রীকে শিক্ষক পদে এবং ভগ্নিপতিকে নাইটগার্ড পদে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করার হুমকি প্রদান করছেন। তাছাড়া তিনি মাসের পর মাস বিদ্যালয়ের মূল্যবান অনেক কাগজপত্র নিজ বাড়িতে আটকে রেখে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছেন। শিক্ষকতা না করে তিনি একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানিতেও চাকরি করছেন বলেও তিনি দাবি করেন। অভয়নগর উপজেলা অটিজম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক তুহিন রায়, সঞ্জয় গাইন, অপি দত্ত, কল্পনা রায়, মঞ্জুয়ারা আক্তার, সবিতা বিশ্বাস জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহিম বিদ্যালয়ে দুই বোনকে চাকরি দেয়ার পর এবার তার স্ত্রী ও ভগ্নিপতিকে চাকরি দিতে ব্যর্থ হয়ে গত ৩মাস আগে থেকেই নিজেই বিদ্যালয়ে বিনা ছুটিতে অনুপস্থিত রয়েছেন। এমনকি বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বহিসহ অনেক মূল্যবান কাগজপত্র তিনি নিজ বাড়িতেই আটকে রেখেছেন। বিষয়টি নিয়ে গত দেড় মাস আগে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সকল শিক্ষক, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এক বৈঠকে তিনি আর শিক্ষকতা করবেন না বলে জানিয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আরও জানান, প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি মাসাধিককাল অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় তাকে পুনরায় দুইবার নোটিশ প্রদান করা হলে তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃত জানান।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহিম তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিষ্ঠানে ৮ শতক জমি দেয়া আছে ওই জমি ফেরত না দেয়া পর্যন্ত তিনি কাগজপত্র ফেরত দিবেন না। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন না, কাগজপত্রও ফেরত দিচ্ছেন না, এটাতো হতে পারে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্র নিজ বাড়ি আটকে রেখে বিনা অনুমতিতে স্কুলে অনুপস্থিত থাকতে শুরু করেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়। তিনি কারণ দর্শানো নোটিশের কোন উত্তর দেন নাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন