শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহ তায়ালার মোবারক নামসমূহ-২

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিশুদ্ধ ছয় হাদীস গ্রন্থের (সিহাহসিত্তায়) এর মধ্যে কেবল মাত্র তিরমিজি শরীফে আল্লাহর ৯৯টি নামের উল্লেখ পাওয়া যায় এবং তিরমিজির বরাতে মেশকাত শরীফেও ৯৯টি নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একই সূত্রের বরাত দিয়ে তফসী ‘জালালাইনে’ও এসব নাম উদ্ধৃত করা হয়েছে। তবে বোখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে শুধুমাত্র ৯৯টি সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে। বোখারী শরীফে সাহাবী হজরত আবু হোরায়রা (রা.) এর বরাতে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘নিশ্চয় আল্লাহতায়ালার ৯৯টি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি সেগুলো মুখস্থ করবে, সে বেহেস্তে প্রবেশ করবে। (প্রথম খণ্ড, পৃ:৩০৩ ও দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ: ৯০০)।

কোরআন গবেষক ও বিশেষজ্ঞগণ যুগে যুগে আল্লাহতায়ালার গুণবাচক, সুন্দরতম নামসমূহের ওপর ব্যাপক গবেষণা অনুসন্ধান চালিয়ে খোদ কোরআন হতেই ৯৯টি নাম উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। হজরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গুনিয়াতুত তালেবীন’এ ৯৯টি নামের উল্লেখ করলেও কয়েকটি নামের পূনরাবৃত্তি ঘটায় সেই হিসাবটি যাচাই সাপেক্ষ ব্যাপার।

তবে হজরত মওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) আয়াত ‘ওয়ালিল্লাহিল আসমাউন হোসনা ফাদউহু বিহা’ অর্থাৎ আল্লাহর সুন্দরতম নামসমূহ দ্বারা দোআ কর! এর ‘খাসিয়ত’ বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি ‘আমালে কোরআনী’ এর দ্বিতীয় অংশে ৯৯টি নাম উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে, ‘আসমায়ে হোসনা ’মুখস্থ করার এবং আমল করার বরকতে জান্নাতে প্রবেশ করার সুসংবাদ রয়েছে এবং এসব নামের উসিলায় দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার কারণ হয়।

তিরমিযি প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থে বর্ণিত ৯৯টি নাম প্রসঙ্গে হজরত থানভী (রহ.) সে নামগুলো কোরআনের কোনো কোনো সূরায় বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোর সংখ্যা নামসহ উল্লেখ করেছেন। সর্বসম্মত মত অনুযায়ী, সমগ্র কোরআন মজিদে আল্লাহর সর্বপ্রকারের গুণবাচক নামের সংখ্যা মোট ৯৯টি। একই আয়াতে বা একই স্থানে একটি নাম এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুইটি গুণবাচক নামের উল্লেখ করা হয়েছে এবং একেকটি গুণবাচক নাম ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে। যেমনÑ ‘আল্লাহ’ ইসমে আজম নামটি ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় তিন সহস্রাধিক বার। অন্যান্য নামও অনুরূপভাবে নানাস্থানে অসংখ্যবার ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্যেকটি নাম ব্যবহৃতের সংখ্যাও হবে বিপুল।

সারকথা এ যে, আল্লাহ ইসমে আজম’ মানব হৃদয়ে, কীভাবে জাগরুক রয়েছে, তা বাস্তব জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিফলিত। আল্লাহতে বিশ্বাসী প্রত্যেক মোমেন মুসলমানের ব্যবহারিক জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই আল্লাহÑ ‘ইসমে আজমে’র প্রভাব প্রতিক্রিয়া জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে অনুভব করা যায়। আল্লাহর নূরী-সত্তার দ্বারা মানুষ কীভাবে পরিচিত হয়ে আসছে, তা চিন্তা করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়। সকল মানুষের হৃদয়ে আল্লাহ বিরাজমান, একথা বর্তমানে বৈজ্ঞানিকভাবেও স্বীকৃত। মানুষের হৃদয়ে ‘আল্লাহ’ শব্দ অংকিত, আধুনিক গবেষণায় তা প্রমাণিত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন