শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

তাকওয়াবানরাই তাকদীরে বিশ্বাস রাখে

মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চিত থাক, আল্লাহ তাদেরই সাথী, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা ইহসানের অধিকারী হয়। (সূরা নাহল : ১২৮)। যে আল্লাহকে স্মরণ রাখে, আল্লাহও তাকে স্মরণ রাখেন। সুখ ও সচ্ছলতায় যে আল্লাহকে স্মরণ রেখে তাঁর হুকুম মোতাবেক চলে দুঃখ ও অনটনে আল্লাহ তাকে স্মরণ রাখেন ও তার নুসরত করেন। আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন : সুখের সময় তুমি আল্লাহর পরিচয় লাভে সচেষ্ট থাক, দুঃখের সময় আল্লাহ তোমাকে চিনবেন। (মুসনাদে আহমাদ : ২৮০৩)। প্রার্থনা ও ফরিয়াদ শুধু আল্লাহর কাছে।

এই শিক্ষাই তো দেয়া হয়েছে সূরা ফাতিহায় : আমরা তোমারই ইবাদত করি, আর তোমারই কাছে সাহায্য চাই। (সূরা ফাতিহা : ৪)। আল্লাহই মানুষের সকল প্রয়োজন পূরণ করেন, সকল অভাব দূর করেন। ইরশাদ হয়েছে : আল্লাহ যদি তোমাকে কোনো কষ্ট দান করেন, তবে তিনি ছাড়া এমন কেউ নেই, যে তা দূর করবে এবং তিনি যদি তোমার কোনো মঙ্গল করার ইচ্ছা করেন, তবে এমন কেউ নেই যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ দান করবেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা ইউনুস : ১০৭)।

সুতরাং যার হাতে সব তাঁর কাছে চাওয়াই তো বুদ্ধিমানের কাজ। এরপর তিনি কোন উপায়ে কার মাধ্যমে প্রয়োজন পূরণ করবেন তা তো তিনিই ভালো জানেন। সুতরাং যখন কোনো বৈধ উপায়ে বান্দার প্রয়োজন পূরণ হয় তখন সেই উপায়ের যথাযথ মূল্যায়ন করাও বান্দার কর্তব্য। লাভ ও ক্ষতি তাকদীর অনুযায়ী। কমও নয়, বেশিও নয়।

মানুষের জীবনে কী ঘটবে তা সবই তাকদীরে লেখা আছে। কারো এমন কোনো ক্ষতি হবে না, যা তাকদীরে লেখা নেই। এমন কোনো লাভও হবে না, যা তার জন্য নির্ধারিত ছিল না। ‘বলে দাও, আল্লাহ আমাদের তাকদীরে যে কষ্ট লিখে রেখেছেন, তা ছাড়া অন্য কোনো কষ্ট আমাদের কিছুতেই স্পর্শ করবে না।’ (সূরা তাওবা : ৫১)। ‘পৃথিবীকে অথবা তোমাদের প্রাণের ওপর যে মুসিবত দেখা দেয়, তার মধ্যে এমন কোনোটিই নেই, যা সেই সময় থেকে এক কিতাবে লিপিবদ্ধ না আছে, যখন আমি সেই প্রাণসমূহ সৃষ্টিও করিনি।’ (সূরা হাদীদ : ২২)।

দুনিয়ার সকল মানুষ মিলেও তাকদীরের বিপরীত কোনো কিছু করতে পারবে না। যা লেখা আছে তা ঘটবেই। আর যা লেখা নেই তা কখনো ঘটবে না। তাকদীরের ওপর ঈমান হচ্ছে ঈমানিয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাসূল (সা.) এক হাদীসে একে ঈমানের হাকীকত বলেছেন : ‘আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, প্রত্যেক জিনিসেরই একটি হাকীকত আছে। আর ঈমানের হাকীকত পর্যন্ত কোনো বান্দা পৌঁছুতে পারে না, যতক্ষণ না তার এ দৃঢ় বিশ্বাস অর্জিত হয়েছে। যা কিছু (ভালো বা মন্দ) তাকে স্পর্শ করেছে তা ভ্রষ্ট হবার ছিল না। আর যা (তাকে স্পর্শ করেনি) লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে তা তাকে স্পর্শ করার ছিল না।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২৭৪৯০)।

যেহেতু সবকিছু তাকদীর অনুযায়ী হয় তাই বালা মুসিবতে অধৈর্য হওয়া উচিত নয়। মুমিনের পক্ষে তো কোনো অবস্থাই মন্দ নয়। সহীহ মুসলিমের এক রেওয়ায়েতে এসেছে : ‘মুমিনের ব্যাপারটি সকল অবস্থাই কল্যাণকর। আর এ কেবল মুমিন বান্দার জন্যই। (কননা) সুখের অবস্থায় থাকলে সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর দুঃখের অবস্থায় থাকলে ধৈর্য্য ধারণ করে, ফলে তাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’ (সহীহ মুসলিম : ২৯৯৯)।

‘যারা সবর অবলম্বন করে তাদেরকে তাদের সওয়াব দেয়া হবে অপরিমিত।’ (সূরা যুমার : ১০)। তাই তাকদীরে ঈমান রাখতে হবে। তাকদীরের ফয়সালায় নারাজ বা অসন্তুষ্ট হওয়া যাবে না। তাকদীরের প্রতি নারাজ হওয়া জায়েয নয়। রাসূল (সা.) অনেক হাদীসে তাকদীরে সন্তুষ্টির জন্য দুআ শিখিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন