বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইসলামের পুনর্জাগরণ কিছু কথা-২

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইসলামের ইতিহাস পাঠে জানা যায় যে, খৃস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীতে তিনটি ইসলামী আন্দোলনের অভ্যুদয় হয়েছিল। এগুলো আদর্শ ও নীতিগতভাবে একই ছিল। বিশ^ মুসলিমের ঈমান ও আমল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই আন্দোলন ত্রয়ের প্রথমটি ঘটে ইমাম রাব্বানী শায়খ আহমাদ সেরহিন্দী (রহ.) এর মারফত। তিনি ছিলেন একাধারে মুজাদ্দিদ, কঠোর পরিশ্রমী আধ্যাত্নিক সাধক, দ্বীনের নবায়নকারী এবং ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বিশে^র সর্বত্র ইসলামের পূর্ণ শক্তিদানকারী। যিনি ইসলামী বর্ষপঞ্জি অনুসারে দ্বিতীয় সহস্র বর্ষের সংস্কারক।

দ্বিতীয় আন্দোলনটি ঘটে আলজেরিয়ায় হযরত আবদুল হামিদ ইবনে বাদীস (রহ.)-এর মাধ্যমে এবং তৃতীয়টি হচ্ছে তুরস্কে হযরত বদিউজ্জমান সাঈদ নুরসী (রহ.)-এর মাধ্যমে। এসব আন্দোলনের ফলেই ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক, নাস্তিক সম্প্রদায় ও কাফের-মুশরিকরা শতচেষ্টা করেও ইসলামের অনির্বান শিখাকে নির্বাপিত করতে পারেনি।

ভারতবর্ষে মুজাদ্দিদ আলফেসানী (রহ.)-এর উত্তরাধিকারী হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রহ.) ও হযরত সৈয়দ আহমাদ শহীদ (রহ.) আসেন সংস্কারকের ভূমিকা নিয়ে। আরো লক্ষ্য করা যায় যে, ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু হতে সারা পৃথিবীতে মুসলিম উম্মাহর চরম দূর্দিনে বিশ^ময় স্থানে স্থানে সংস্কারকদের আগমন ঘটে। হেজাজে মোহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহাব নজদী (রহ.), মিশরে হাসানুল বান্না (রহ.), পাকিস্তানে দার্শনিক আল্লামা ইকবাল (রহ.) ভারতবর্ষে মাওলানা আশরাফ আলী থানুভী (রহ.), মাওলানা মোহাম্মাদ ইলিয়াস (রহ.) প্রমুখের আবির্ভাব ইসলামের প্রকৃত সত্য ও মাহাত্ম উপলদ্ধির পথ প্রশস্ত করে।

আর ফুরফুরার মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.) সংস্কারকের ভূমিকায় পূর্ব ভারত ও বাংলা ছাড়াও সারা ভারতে ও আসামে এবং অন্যান্য স্থানে আধ্যাত্মিকতার জোয়ার ও বিদআতমুক্ত শরঈ সমাজ ব্যবস্থার নতুন প্রাণ সঞ্চার করে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি বলে গেছেন, আমার পরে যিনি বিশ^ময় তাজদীদে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দেবেন, তিনি হলেন খলীফাতুল্লাহ, আল্ মাহদী, আল আমীন, ইমামুল মিল্লাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন (আ.)। (আওলাদে রাসূল (সা.)।

তিনি বিশ^ময় ইসলাম এবং আলকুরআন ও সুন্নাহর আইন ও বিধান প্রতিষ্ঠা করবেন। তাঁর মাঝে থাকবে আল্লাহ প্রদত্ত ঈমান ও বিশ^াসের শক্তি, যা দ্বারা কুফর ও অস্বীকৃতির মোকাবেলা করবেন। তাঁর মাঝে থাকবে হক, সত্য ও ন্যায়ের শক্তি, যা দ্বারা সকল মিথ্যা ও অসারতার মোকাবেলা করবেন। তাঁর মাঝে থাকবে জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্নিক শক্তি। যা দ্বারা সকল কুসংস্কার ও অজ্ঞতার মোকাবেলা করবেন। তাঁর মাঝে থাকবে শৌর্য-বীর্য ও বীরত্বের শক্তি। যা দ্বারা হত্যা, লুণ্ঠন, ও আগ্রাসী মনোবৃত্তির মোকাবেলা করবেন।

এতে প্রতীয়মান হয় যে, পৃথিবীতে যখন প্রজ্ঞা, বিজ্ঞান ও জ্ঞানাহরম সর্বব্যাপি ছড়িয়ে যাবে, তখন নিশ্চিত কুরআন সবকিছুর উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে ও বিশ^শাসন করবে। ভবিষ্যৎ হবে ইসলামের এবং সার্বভৌমত্ব হবে শুধু কুরআনের সত্যতার ও ঈমানের শক্তির। একমাত্র ইসলামের সভ্যতা যা ভবিষ্যৎকে শাসন করবে এবং সব মহাদেশে অবধারিত সার্বভৌমত্ব অর্জন করবে। এটাও নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতের আকাশ ও এশিয়া মহাদেশ একসঙ্গে ইসলামের পরিচ্ছন্ন উজ্জ্বলতায় নিজেকে সমর্পণ করবে। আর চাঁদ তাঁরা খচিত পতাকাটি আল্লাহরবাণী সমুন্নতকারীব্যানার হয়ে একদিন উঠবেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন