ঋতু অনুযায়ী পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। দেশে সাধারণত অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও মধ্য ফাল্গুন পর্যন্ত শীত বিরাজ করে। ইংরেজি মাস হিসাবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিকে শীতের মাস বলা হয়। তবে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকেই অর্থাৎ বাংলা আশ্বিনের শেষে কার্তিক মাসের শুরু থেকেই অনেক অঞ্চলে শুরু হয় সাদা মেঘের কুয়াশা। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা কমতে থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বদলে গেছে ঋতুবৈচিত্র। অকালে বন্যা, বর্ষায় অনাবৃষ্টি, দেরিতে শীতের আগমন, গ্রীষ্মে অস্বাভাবিক গরম এসব এখন প্রকৃতিতে বিরাজমান।
কার্তিক শেষ হয়ে অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি চলে এলেও দেশে এবার এখনো শীতের দেখা নেই। ঋতু বৈচিত্র্যের হিসাব অনুযায়ী কার্তিক মাসেই দেশে শীতের আমেজ বিরাজ করার কথা। কিন্তু এই মধ্য অগ্রাহয়ণে এসেও কুয়াশা ঢাকা শীতের সকাল দেখা যাচ্ছে না। উত্তর জেলাগুলোতে কিছু কুয়াশা পড়লেও দেশের অন্যান্য এলাকায় সকালের কুয়াশার চাদরমুড়ে মানুষের ঘুম ভাঙার সে দৃশ্য চোখে পড়ে না। সারা দিনের তাপমাত্রা এখনও মোটামুটি স্বাভাবিক।
দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক স্থানে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলেও আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, প্রকৃত শীত আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। শীতের আমেজ পুরোপুরি পাওয়া যাবে, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। বঙ্গোপসাগরে ডিসেম্বরের শুরুতে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিম্নচাপ কেটে গেলে প্রকৃতিতে নেমে আসবে শীত।
কার্তিক শেষ হয়ে এখন মধ্য অগ্রহায়ণ তবুও কোথাও শীতের পরশ নেই। প্রকৃতিতে কাঠফাঁটা রোদ আর ভ্যাপসা গরম। হেমন্তের শুরুতে আগে যেমন শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যেত, তেমনটা এখন আর মিলছে না। গ্রামগঞ্জে ভোররাতে কুয়াশার দেখা মিললেও তাতে শীতের অনুভূতি তেমন নেই। কেন এমন হচ্ছে, শীত আসবে কবে এসব প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিচ্ছে।
শীতের দেখা মিলছে কবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, শীত আসতে আরও একটু সময় লাগতে পারে। বিশেষ করে, শহরে শীতের দেখা পাওয়ার অপেক্ষার কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে। অন্তত সপ্তাহ দুয়েক পর গ্রামে শীতের অনুভূতি টের পাওয়া যেতে পারে। পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ রয়েছে। এটি সরে যাওয়ার সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেতে পারে। ওই সময়ে আবহাওয়া শীতের আমেজ ফিরে পাবে।
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, দেশে মূলত নভেম্বর মাসে শীতের আমেজ ভালোভাবে টের পাওয়া যায়। তবে এবার একটু দেরি করে শীতের আমেজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখনও মৌসুমি বায়ু শতভাগ শেষ হয়ে যায়নি। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শেষ হয়েছে। এটি শেষ হলে শীত অনুভূত হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন