স্টাফ রিপোর্টার : আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাচ্ছে সরকারের তিনটি সংস্থা। রাজধানী ঢাকার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত বুড়িগঙ্গার ঐতিহ্য ফেরাতে নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকা জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ অভিযানের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার আদি বৈচিত্র্য ফিরে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল ইসলামবাগ হতে শিকদার মেডিক্যাল পর্যন্ত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও অপসারণ শুরু করা হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের নদীগর্ভে বিস্তৃত এলাকা অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে রেখেছে দখলদাররা। এছাড়া এসব দোকান ও স্থাপনা থেকে বর্জ্য ফেলে ভরাট করে নদী দূষণ করা হচ্ছে। হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের বর্জ্যরে কারণেও নদীটি দূষিত হচ্ছে।
জানা গেছে, উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। এছাড়া ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাহারুল ইসলাম, ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
অভিযানে ঢাকা জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নদী দখল ও দূষণরোধে পর্যায়ক্রমে সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্ক্যাভেটর ডিএসসিসি থেকে ৪টি বর্জ্যবাহী গাড়ি ও জনবল নিয়োজিত থাকবে। নদী থেকে উত্তোলনকৃত বর্জ্য দ্রুততার সঙ্গে কর্পোরেশনের জন্য মাতুয়াইল ল্যান্ডফিলে ফেলার ব্যবস্থা নেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক গুলজার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে এ অভিযান তিন মাস চলবে। সম্পূর্ণ নিজস্ব জনবল এবং যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজটি শুরু করা হবে। পরবর্তীতে একটি প্রকল্পের আওতায় এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। ইসলামবাগ হতে শিকদার মেডিক্যাল পর্যন্ত খননকাজ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও অপসারণ করা হবে।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর রাজধানী ঢাকার চার পাশের নদীগুলোকে অবৈধ দখলদারদের থেকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়। নদী উদ্ধারে একাধিক অভিযানও শুরু করা হয়। প্রথমদিকে বেশ কিছু সাফল্যও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কিছুদূর যেতে না যেতেই তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। নদী দখল করে নির্মিত বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কিছুদিন পরই সেগুলো আবার বেদখল হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, বুড়িগঙ্গা নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা এ নদীটি উদ্ধারে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। হাতিরঝিলের আদলে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এর আগে আমরা নদীর অবৈধ দখল উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এ অভিযান শুরু হবে। তিনি বলেন, শিগগিরই নদী দখলমুক্ত হবে। প্রাণের বুড়িগঙ্গায় সাগরের মাছ ফিরে আসবে। আশা করি সে দৃশ্য আপনারা আবার দেখতে পারবেন। আমরা সে জন্যই কাজ করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন