স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না মন্তব্য করে বিচার বিভাগীর তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণার পর দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, নাসিক নির্বাচনে বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের বাতাবরণ সৃষ্টি করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সত্যিকারের গণরায়ের প্রতিফলন ঘটলে আমরা সেটিকে শুভেচ্ছা জানাই। তবে ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না।
তিনি বলেন, একটি কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে এক হাজার, অথচ সেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল নৌকা প্রতীকের ৮০০ এবং ধানের শীষ ৫০০। পরে সাংবাদিকেরা এ বিষয়টি উল্লেখ করলে প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল পাল্টে দেন। সেজন্য গতকালের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, গণনা, ফলাফল ইত্যাদির বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি করছি।
সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে সব প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের কাছে কেন্দ্রভিত্তিক লিখিত ফলাফল শিট সরবরাহ করার কথা থাকলেও নাসিক নির্বাচনে ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৪টি কেন্দ্রের স্বাক্ষর করা ফলাফলের শিট বিএনপির এজেন্টদের সরবরাহ করা হয়নি। সেনাবাহিনী মোতায়েন না করায় নির্বাচনী এলাকায় ভয়-ভীতির পরিবেশ বিদ্যমান ছিল। যার প্রতিফলন আমরা দেখলাম ভোটকেন্দ্রে স্বল্প সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। সার্বিকভাবেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে পরিমাণ ভোট পড়ার কথা, তার চেয়ে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। কোনো কোনো কেন্দ্রে সারাদিন ভোটারদের উপস্থিতি খুবই নগণ্য দেখা গেলেও ফলাফলে দেখা গেছে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
রিজভী বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নজীরবিহীন নিরাপত্তা বিধানের আড়ালে রাতের অন্ধকারে কী ভূমিকা রেখেছে তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। কারণ কারফিউ এর মতো পরিস্থিতিতে কোনো কিছু জনগণের নজরদারিতে থাকার কথা নয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফল অনুযায়ী, আইভী নৌকা পেয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাখাওয়াতের ধানের শীষ পেয়েছে ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট। সাত খুনের মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আলোচিত সাখাওয়াত ভোট গণনা নিয়ে সন্দেহের কথা বললেও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার কথা বলেননি। গতকাল সকালে বিজয়ী প্রার্থী আইভী মিষ্টি নিয়ে তার বাসায় গেলে নারায়ণঞ্জের উন্নয়নে মেয়রকে সহযোগিতা করার কথাও তিনি বলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, বিলকিস জাহান শিরিন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আফরোজা আব্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, অ্যালবার্ট পি কস্টা, মুনির হোসেন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন