ইনকিলাব ডেস্ক : দেশের পুঁজিবাজারে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এরই সুবাধে বিনিয়োগের পালে লেগেছে হাওয়া। কেননা মাঝে মধ্যে দু-একদিন সংশোধন হলেও পরের দিন ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। লক্ষ্য যেন স্থিতিশীলতার সঠিক পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়া। এরই জের ধরে মূল্যসূচকের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বাজার মূলধন। আসছে বিদেশী বিনিয়োগ। দেশী বড় বিনিয়োগকারীরাও আস্থাশীল হচ্ছেন বাজারের প্রতি। আর সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি দিনের পর দিন বাড়িয়ে যাচ্ছে তাদের বিনিয়োগ। এরই ধারাবাহিকতায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ছাড়িয়েছে ৯৩৪ কোটি টাকা। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর লেনদেন বেড়েছে ২৭.৯২ শতাংশ।
পুঁজিবাজার উন্নয়নে স¤প্রতি সরকারের নেয়া বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক ভূমিকায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। এর মধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্র সুদের হার কমানো, ব্যাংক সুদের হার হ্্রাস, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারি শেয়ার অফলোডের খবর। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে ছোট-বড় সব শ্রেণীর উদ্যোক্তারাই এখন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন, যা বেসরকারি খাতে সার্বিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করছে। ফলে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ব্যবসাও স¤প্রসারণ হচ্ছে। এই ইন্ডিকেটরগুলো মাথায় রেখেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয় করছেন, যা শেয়ারহোল্ডারদের ভালো মুনাফা দেয়ার পাশাপাশি বাজারকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজারই পারে অর্থনীতির অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে। সে হিসেবে আমাদের পুঁজিবাজারও গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে ভালো অবস্থায় রয়েছে। ক্ষুদ্র, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করছে। বর্তমানে মার্কেটে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শিগগিরই এই মার্কেটে ১৫’শ কোটি টাকার লেনদেন হবে। যার সুবাতাস আগামী বছরজুড়ে বিদ্যমান থাকাবে বলেও মনে করছেন তারা।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। সূচকের পাশাপাশি গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে দুই দিন কমেছে সূচক। তবে সূচক কমলেও এর মাত্রা খুবই সামান্য। গড় লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। আর সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ৯৩৪ কোটি টাকা।
সাপ্তাহিক ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩১.০১ পয়েন্ট বা ০.৬৩ শতাংশ বেড়েছে। আর ডিএসইএক্স শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ৩.৬৮ পয়েন্ট বা ০.৩১ শতাংশ ও ডিএসই ৩০ সূচক কমেছে ৯.৩৬ পয়েন্ট বা ০.৫২ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৩১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৮টি, কমেছে ১১৩টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি এবং লেনদেন হয়নি ৩টি কোম্পানির।
আর গত সপ্তাহজুড়ে মোট ৪ হাজার ৬৭২ কোটি ৫৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯৩ টাকা লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় হিসাবে এ লেনদেন হয়েছে ৯৩৪ কোটি ৫০ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮৭ টাকা, যা আগের সপ্তাহে মোট ৩ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৬ লাখ ১ হাজার ৮০৯ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সে হিসেবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ২৭.৯২ শতাংশ। মোট লেনদেনের ৯৩.৯৬ শতাংশ এ ক্যাটাগরিভুক্ত, ১.৮২ শতাংশ বি ক্যাটাগরিভুক্ত, ২.৯৮ শতাংশ এন ক্যাটাগরিভুক্ত এবং ১.২৪ শতাংশ জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে হয়েছে।
এদিকে, দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসইএক্স বেড়েছে ৮২.২৬ পয়েন্ট ০.৯৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৮৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৪টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ৯৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ২৫৩ কোটি ৩৯ লাখ ১১ হাজার ৪৬৭ টাকার শেয়ার। এর আগের সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসইএক্স বেড়েছিল ১২.০৮ পয়েন্ট ০.১৩ শতাংশ। আর সিএসইতে টাকার অংকে মোট লেনদেন হয়েছিল ২৫৪ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। Ñওয়েবসাইট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন