স্টাফ রিপোর্টার : রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা যদি সত্যিকার অর্থে চান তাহলে যে কোনও মুহূর্তে দুর্নীতি রোধ করা যায়। তবে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। আর ঘুষ লেনদেনকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের সমাজ থেকে বয়কট করার আহŸানও জানান তিনি। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর এফডিসিতে ‘ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট’ শিরোনামে দুর্নীতি বিরোধী এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি একথা বলেন।
দুদক কমিশনার বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে জনগণের নৈতিকতার উন্নতির পাশাপাশি সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যার যার ধর্ম মেনে চলতে হবে। অল্পতে তুষ্ট থাকার মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে এবং ঘুষের কুফল ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিতার্কিকদের বক্তব্য উপস্থানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আজকের বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক সদিচ্ছা নয় জনসচেতনতাই পারে দুর্নীতি রোধ করতে। এটা সময়ের একটি যুক্তিসঙ্গত বিতর্কের বিষয় ছিল।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ সবুর। প্রতিযোগিতায় সরকারি দল ‘ইবাইস ইউনিভার্সিটি’কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় বিরোধী দল ‘প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি’।
অনুষ্ঠানে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনসচেতনতা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পৃথিবীর কোনও দেশেই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের নজির নেই।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশের প্রথম এবং প্রধান সমস্যা হলো দুর্নীতি। এই দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হলে সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা সম্ভব।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ সবুর বলেন, রাজনীতিবিদরাই দেশ গঠনে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা জনগণের প্রতিনিধি। তাই তাদের জনগণের কথা বলা উচিত। আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি ব্যাংকিং সেক্টরে বড় বড় দুর্নীতির সঠিক কোনও বিচার হয়নি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল ও এটিএন বাংলার উপদেষ্টা নওয়াজীশ আলী খান।
বাছাইয়ের মাধ্যমে দেশের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় বছরব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রানার আপ ইবাইস ইউনিভার্সিটি ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। পুরস্কার হিসাবে চ্যাম্পিয়ান দলকে ১ লাখ টাকা, রানার আপ দলকে ৫০ হাজার, তৃতীয় স্থান অধিকারী দল ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’কে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। এছাড়া তাদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়। চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির বক্তারা হলো হাফিজ উদ্দিন মুন্না, জহিরুল হক, জোবায়ের সর্দার মার্জিন এবং রানার আপ দল ইবাইস ইউনিভার্সিটির বক্তারা হলো রিয়াজুল ইসলাম, অনিতা ইসলাম, এবং মাসুদ সিকদার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন