স্টাফ রিপোর্টার : গত ২৩ জানুয়ারি ছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নায়করাজ রাজ্জাকের ৭৬তম জন্মদিন। এদিন তিনি চলচ্চিত্রের মানুষ এবং বিনোদন সাংবাদিকদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন। আবেগাপ্লুত হয়েছেন, আগতদের আবেগী করে তুলেছেন। এ প্রজন্মের তরুণ বিনোদন সাংবাদিকদের সঙ্গে অকপটে তার জীবনের অফুরন্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। বলেছেন বিনোদন সাংবাদিকতা, খ- খ- কিছু ঘটনা এবং বর্তমান চলচ্চিত্রের পরিস্থিতি নিয়ে। শুরুতেই তিনি বিনোদন সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা এসেছো আমি খুব খুশি হয়েছি। তোমরা সবাই আমার সন্তানের মতো। আমি যখন ১৯৬৪ সালে ইন্ডাস্ট্রিতে এলাম, আজ যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছো তখন তোমাদের কারোরই জন্ম হয়নি। এটাই ইতিহাস, এটাই স্বার্থকতা। অনেক মানুষ গেছে, অনেক সময় গেছে, অনেক গল্প হারিয়ে গেছে। আমি থেকে গেলাম তোমাদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হবো বলে। তোমাদের সঙ্গে এই প্রাণখোলা আড্ডায় শামিল হবো বলে। তোমাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আমি আমার সালাম দিতে চাই। সবাইকে বলো, আমার জন্য যেন দোয়া করে। অনেক অসুস্থ ছিলাম। আল্লাহর বিশেষ রহমতে ৭৬ বছরের অপেক্ষা করতে পারছি। অনেকটা সময় কিন্তু। হুট করেই যেন চলে গেল। আরো কতো কিছু করার বাকি রয়ে গেছে। যার জন্য জীবনটা উৎসর্গ করলাম আমার সেই প্রিয় চলচ্চিত্রের অবস্থা এখন ভালো নয়। কষ্ট পাই। অনেক কষ্ট। জানি না এই দুরবস্থা থেকে কবে, কীভাবে পরিত্রাণ পাবে ইন্ডাস্ট্রি। তোমরা পাশে থেকো। ইন্ডাস্ট্রির জন্য লেখো। সবাইকে পরামর্শ দাও, কীভাবে কী করা যায়। একটা সময় সাংবাদিকদের অনেক মূল্য ছিল। এখন তো তোমরা নিজেরাই নিজেদের সস্তা বানিয়ে ফেলেছো। যাকে তাকে তারকা বানিয়ে পাতার পর পাতা ভরিয়ে দিচ্ছ। সত্যিকারের তারকা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। একটা নতুন ছেলেমেয়ে কাজ করতে আসলেই তোমরা লিখছ নতুন রাজ্জাক, নতুন আলমগীর, নতুন কবরী, নতুন শাবানা। এটা ঠিক না। তাকে সময় দাও। সে নিজেকে প্রমাণ করুক। অথচ ওদের দর্শক নিচ্ছে না। তোমরা বলে দিচ্ছ সে রাজ্জাক, অমুক, তমুক। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার তখন অবুঝ মনসহ চারটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আমি বেশ জনপ্রিয় নায়ক। একদিন চিত্রালী থেকে সাংবাদিক এসে বললো আমার একটা স্টোরি করতে চায়। তাও কভার পেজে নয়। ব্যাক পেজে। আর এখন। একটা ছেলের সিনেমা মুক্তির আগেই তারকা হয়ে যাচ্ছে। এটা তোমাদের বন্ধ করতে হবে। তারকা বিষয়টি কী সেটা তাকে বোঝার সুযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, আমার আগে যারা নায়ক হিসেবে অভিনয় করতেন সবাই ছিলেন চল্লিশোর্ধ। আনোয়ার হোসেন ভাই, খলিল ভাই, শওকত আকবর ভাই। তাদের দর্শক কলেজ পড়–য়া রোমান্টিক হিরো হিসেবে মানতে পারতো না। আমি যখন এলাম রোগা পাতলা একটা যুবক। অনেকেই আমাকে দেখে বিরক্ত হয়ে অফিস থেকে চলে যেতে বলেছে। পরে সেইসব পরিচালকই আমাকে নিয়ে সিনেমা করেছেন। এটা আমার কাছে প্রাপ্তি। আমার চেহারাটা ফটোজেনিক ছিল। তবে অনেক রোগা পাতলা ছিলাম বলে লোকে ভাবতো এই ভাঙাচোরা দিয়ে কী হবে! অথচ আমি রোমান্টিক হিরো হয়ে পর্দায় আসতেই দর্শক লুফে নিলো। এটা ছিল আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আমি বদলেছি। যুদ্ধের পর দেখলাম দেশের যুবকদের মধ্যে একটা পরিবর্তন। তারা অনেক ফাস্ট হয়ে গেছে। ওরা যুদ্ধ দেখেছে। রক্ত দেখেছে। এখন অভাব দেখছে। কাজ নেই। হাতে পয়সা নেই। সমাজ তাদের জন্য কিছু করতে পারছে না। একটা অস্থিরতা সবখানে। মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়াচ্ছে। আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম নিজের ইমেজটাকে ভেঙে নতুন করে দাঁড় করাবো। রংবাজ সিনেমা করলাম। সমাজের অবহেলিত এক যুবকের অস্থিরতা, হতাশা ও সমাধানের গল্প। আমাকে কাছের সব পরিচালক ও প্রযোজকরা বাধা দিলেন। এটা করবেন না আপনি। দর্শক আপনাকে রোমান্টিক হিরো হিসেবে, আদর্শ যুবক হিসেবে মানে। তারা আপনার হাতে অস্ত্র, মদের বোতল এসব গ্রহণ করবে না। কিন্তু আমার মধ্যে বিশ্বাস ছিল সময় বদলে গেছে। তাকে ধরতে হবে। দর্শক এখন কলকাতায় গিয়ে হলে হিন্দি সিনেমা দেখছে। নিজের দেশের নায়ককে সেসব চরিত্রে পেলে কেন দেখবে না। আমার ধারণাই ঠিক হলো। রংবাজ সুপার-ডুপার হিট হলো। এরপর বেঈমান সিনেমাটি করলাম। সেটিও সুপারহিট। সবাই বুঝতে পারলো আমার ভাবনা অমূলক ছিল না। একজন হিরোকে এভাবে সময় ধরতে জানতে হয়। প্রযোজক-পরিচালকরা তাদের চাহিদা অনুযায়ীই ভাববেন। কিন্তু হিরোকে ভাবতে হয় সময় কী চাইছে। আমার পরবর্তীতে ইলিয়াস কাঞ্চন সেটা করতে পেরেছে। মান্না পেরেছে। কিন্তু শাকিবরা সেটা পারেনি। এখনো তাকে কলেজের ছাত্র হিসেবে দেখতে হয়। দর্শক তো বিরক্ত হবেই। সমাজে যদি একজন হিরোর প্রভাব না থাকে তবে সেই সমাজে ওই হিরোর প্রয়োজনীয়তা থাকে না। এখন কোনো হিরোরই সেই প্রয়োজনীয়তা নেই। সবাই তারকা হতে আসছে, পয়সা কামাতে আসছে। আমরাও এখানে পেশাদারিত্ব দেখিয়েছি। আজীবন যুদ্ধ করেছি ইন্ডাস্ট্রির জন্য। ভেবেছি কীভাবে কী করলে মানুষ সিনেমা দেখবে। তিনি তার সময়কার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, একবার একটা হলে গিয়েছিলাম ছদ্মবেশে। সিনেমাটিতে আমার তখন রোমান্টিক সিন চলছিল। দর্শক মজা করে চিৎকার করে উঠলো- আংকেল আর কতো। দিনে দিনে বেলা তো কম হলো না! ওই কথায় আমি বুঝলাম নিজের বয়স হচ্ছে। এসব প্রেমিক চরিত্রে দর্শক আমাকে আর চায় না। আমি নতুন নায়ক নিয়ে আসতে পরিচালক ও প্রযোজকদের পরামর্শ দিলাম। আলমগীর, ফারুক, সোহেল রানারা এলো। এদের সমসাময়িক প্রায় সবাই আমার হাত ধরে এসেছে। কোনো না কোনোভাবে তাদের চলচ্চিত্রে আগমনে আমার কন্ট্রিবিউশন আছে। আমি এটা কেন করলাম? আমি চেয়েছি ইন্ডাস্ট্রি যেন শূন্যতায় না ভোগে। আমি চলে যেতে যেতে যেন আরেকটা সার্কেল দাঁড়িয়ে যায়। হলোও তাই। ওরা সবাই সুপারহিট সিনেমা দিলো। আমিও তাদের অনেকের সঙ্গে অভিনয় করলাম। আমার নায়িকারাই তাদের নায়িকা হলো। কবরী, ববিতা, শাবানা, রোজিনারা সফল হলো ওদের সঙ্গে। ইন্ডাস্ট্রিতে শূন্যতা আসেনি। আমার এই প্রজন্মের পরপরই জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চনরা এলো। বেশ শক্তভাবেই তারা হাল ধরলো। কাঞ্চনের দুটো সিনেমা ফ্লপ হলো। সবাই নিরাশ হলো নতুন মুখ নিয়ে। কাঞ্চনকে বাসায় ডেকে আনলাম। দেখলাম সেও হতাশ। আমি সাহস দিলাম। বললাম আবার শুরু করো। শুরু করলো, সফলও হলো। ইন্ডাস্ট্রিতে কাঞ্চনের মতো জনপ্রিয়তা বা স্টারডম খুব কম নায়কই দেখেছে। এগুলো আমার করার কী দরকার ছিল? আমি নিজে সুপারস্টার। ইন্ডাস্ট্রির সবাই আমাকে সম্মান করে। আমি এসব করেছি শুধুই চলচ্চিত্রের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে আমার অনেক আগ্রহ ছিলো। আমি নিজে অনেক নতুন নায়িকাদের সঙ্গে কাজ করেছি। শাবানাকে পরিচালকরা নিতে চাইতো না। কারণ সে উর্দু সিনেমায় বেশ নাম করেছিল। আমি বললাম ও বাঙালি মেয়ে। ওকে অবশ্যই আমাদের সিনেমায় নেয়া উচিত। নেয়া হলো। বাকিটা ইতিহাস। তখন কেউ কেউ আমাকে বলতেন আমি নাকি কবরী, শাবানা, ববিতার দালালি করি। শবনমকে সুযোগ দেই না। শবনম ইজ নাইস লেডি। খুব ভালো মানুষ উনি। আগেও যেমন ছিলেন, এখনো তেমনি। আমি পরিচালকদের বললাম, আপনারা ভুল বলছেন। আমি শবনমকেও ইন্ডাস্ট্রিতে চাই। তার সঙ্গে সিনেমা করবো। করলাম। শুধু তাই নয়, তখন অনেক নতুন সংগীতশিল্পীরাও আমার ইশারায় ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছে। একদিন এক পরিচালক খুরশিদ আলমকে নিয়ে এলেন। রোগা পাতলা একটা লোক। বলল, সিনেমাতে গান করবো। আমি তো দেখেই বলি আরে না, হবে না। পরিচালক বললেন একটা গান শুনে দেখুন। শুনলাম। সত্যি ভালো লাগলো। তিনি গাইলেন এবং আজ তিনি কালজয়ী শিল্পীদের একজন। এমন অনেককেই আমি ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়ে এসেছি। নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। তাদের নিয়ে রিস্ক নিতে হবে। ভালো করে বড় আয়োজনে উপস্থাপন করতে হবে। দর্শকদের মনে প্রভাব ফেলতে হবে। তবেই দর্শক হলে আসবে। ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি নিয়ে নায়করাজ বলেন, আগে এতো এসোসিয়েশন ছিল না। কেবল প্রযোজকদের একটা সংগঠন ছিল। সবকিছু আমাকে সামলাতে হয়েছে। কারো কোনো ঝামেলা হলেই আমার কাছে ছুটে আসতো। আমি সমাধান দিতাম। একবার মেকআপ রুমে গিয়ে দেখলাম চেয়ার ভাঙা। মেজাজ খুব খারাপ হলো। এত পরিশ্রম করি। দিনে বিশ ঘণ্টা শুটিং করি। কার জন্য? এফডিসিতে দুটা ভালো চেয়ারও থাকবে না? শাবানাকে নিয়ে গেলাম এমডির রুমে। গিয়ে ভাঙা চেয়ারটা রেখে তার ভালো চেয়ারটা নিয়ে আসলাম। তিনি তো রেগে আগুন। আমাকে এসে বললেন, কেন এমনটা করলেন? বললাম, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাবো আর এসির বাতাসে হুইল চেয়ারে বসে আরাম করবেন আপনি? তিনি লজ্জা পেলেন। পুরো এফডিসি ঘুরে দেখলেন। কয়েকদিনের মধ্যেই এসি, চেয়ারের ব্যবস্থা করলেন। মজার কথা বলি, ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিন ছিল আমার জন্মদিন ও আমার মেয়ের জন্মদিন। এই দিনগুলোতে সবাই আসতো। অনেকে আসতো সমস্যা নিয়ে। আমার বাসায় বসেই সব সমাধান হতো। একবার এক পরিচালক তার প্রযোজককে নিয়ে এলেন জন্মদিনের পার্টিতে। তিনি জাফর ইকবালের নামে অভিযোগ করলেন। দুদিন পর শুটিংয়ের সিডিউল দিয়ে জাফর ইকবাল মাথার চুলে রঙ দিয়ে লাল করে ফেলেছে। এখন কী হবে। জাফর ইকবালও পার্টিতে ছিল। তাকে ডেকে বললাম এটা কেন করলি। তোর শখ হয়েছে চুল রাঙ্গাবি, শুটিং শেষ করে করতি। জাফর ইকবাল বললো আচ্ছা, আমি কাল চুল কালো করে ফেলব। এরকম ঘটনার শেষ নেই। আজ এসব কথা খুব মনে পড়ে। কখনো কেঁদে ফেলি আবেগে। কোথায় হারিয়ে গেল দিন সব। তোমরা একটু লেখালেখি করো। ইন্ডাস্ট্রিটাকে বাঁচাও। এতো রাজনীতি, এসোসিয়েশন দিয়ে কিচ্ছু হবে না। দলাদলির কারণেই সব উচ্ছন্নে গেছে। কাউকে কিছু বলা যায় না। অধিকার আর স্বাধীনতার নামে সবাই অন্যায় প্রভাব খাটায়। নায়কদের বিয়ে-শাদীর বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, বিয়ে লুকিয়ে রাখার ব্যাপার নয়। সবাইকেই মানুষ হিসেবে সমাজে থাকতে হবে। বিয়ে-শাদি করতে হবে। শাহরুখ খানও তো বিয়ে করেই নায়ক হয়েছে। আমির খান তো দুটা বিয়ে করেছে। আর শাকিব খান বিয়ে করে না। প্রত্যেক মাসেই একটা করে প্রেম করে। দেখো, তোমার যোগ্যতা তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবে। বিয়ে বা প্রেম নায়কের বাধা হতে পারে না। এদেশে কলকাতার শিল্পীদের আগমন নিয়ে তিনি বলেন, কলকাতার সাংবাদিকদের সম্পর্কে তোমাদের ধারণা আছে কি না আমি জানি না। দুনিয়ার আর কোনো সাংবাদিকদের সঙ্গে ওদের মেলানো যাবে না। সেই সত্তর দশক থেকে দেখে আসছি, এখনো গেলে দেখি সবকিছু বদলায় ওদের কোনো পরিবর্তন নেই। সেই কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ, ছেড়া স্যান্ডেল। তোমরা তো বেশ স্মার্ট। চকচকে চেহারা। আর ওদের দেখলেই কষ্ট হয়। তারা নিজেদের দেশের তারকাদেরই কথা ছাপাতে পারে না ঠিকমতো অন্য দেশেরটা ছাপাবে কী। আর আমাদের এখানে যেমন প্রত্যেক পত্রিকায় কয়েকজন করে বিনোদন সাংবাদিক থাকে ওদের মনে হয় অতো রিপোর্টার নেই। তবে সম্মানের কথা যদি বলো, তবে বলবো এটা হচ্ছে আদায় করে নেয়ার ব্যাপার। আমি যখন কলকাতায় কাজ করেছি বাবা কেন চাকর সিনেমায় তখন প্রসেনজিৎ আমার জন্য আলাদা গাড়ি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। যখন যার সঙ্গে কাজ করেছি সবাই আমাকে এই বাংলার সুপারস্টার তারকা হিসেবেই মূল্যায়ন করেছে। এখন তুমি যদি এক দেশের সেরা তারকা হয়ে অন্য দেশে গিয়ে হাত কচলাও, নিজের ইমেজটা ভুলে যাও তার দায় কে নেবে? কী দরকার কলকাতায় গিয়ে সম্মান খোয়ানোর। কী হচ্ছে দেখছি না যৌথ প্রযোজনার নামে। সব বাটপারি, জোচ্চুরি। দর্শক, দেশ, রাষ্ট্রকে ঠকানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। শাকিব কেমন করে এসব সিনেমায় কাজ করে! ও কী ভুলে গেছে ওর জন্য ইন্ডাস্ট্রির কন্ট্রিবিউশন? দিন সমান যায় না। আমি রাজ্জাকও বৃদ্ধ হয়েছি! প্রখ্যাত সাংবাদিক আহমদ জামান চৌধুরী যাকে সবাই আজাচৌ নামে চিনতেন তিনি ছিলেন রাজ্জাকের ঘনিষ্টজন। নায়করাজ উপাধিটা রাজ্জাককে তিনিই দিয়েছিলেন। তাঁর কথা বলতে গিয়ে শিশুদের মতো কেঁদে ফেলেন রাজ্জাক। নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু, সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল তোমাদের খোকাভাই (আজাচৌ)। ওর সঙ্গে কথা কাটাকাটিই নয়, মারামারি পর্যন্ত হয়েছে আমার। তবুও আমার প্রাণের বন্ধু সে-ই। যখনই মন খারাপ হয়েছে তাকে ডেকেছি। সেও আসতো। দুজনে অনেক সময় কাটিয়েছি। আমার যে নায়করাজ উপাধি সেটিও ও দিয়েছিলো। জিজ্ঞেস করলাম এই উপাধি কেন? উত্তর দিলো- উত্তমকুমার যদি ওপার বাংলার মহানায়ক হতে পারে তুমিও আমাদের নায়করাজ। আমার বন্ধু আজ আর নেই। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত দান করুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন