মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

সার্চ কমিটি নিয়ে হতাশা : নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে কোনো আলোচনা নেই

| প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুনশী আবদুল মাননান : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট মোঃ আব্দুল হামিদ সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। রাজনৈতিক দলসমূহ, নাগরিক সমাজ ও জনগণের বড় আশা ছিল, প্রেসিডেন্ট একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে অভিভাবকসুলভ ভূমিকা পালন করে যুগান্তকারী নজির স্থাপন করবেন। এ ব্যাপারে গোটা জাতিই তার ওপর গভীর আস্থা স্থাপন করেছিল। তিনি এ উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আয়োজন করেছিলেন। বলেছিলেন, এ আলোচনা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তার সঙ্গে আলোচনায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এই আইন প্রণয়নের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে নেই সে কারণে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ অবিতর্কিত ও লাভজনক কোনো পদে অধিষ্ঠিত নন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করার কথা বলেছিল। প্রেসিডেন্ট সার্চ কমিটি গঠন করেছেন বটে এবং এও দাবি করা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার আলোচনার প্রেক্ষিতেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তবে এই আলোচনার কোনো প্রতিফলন এতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সার্চ কমিটির প্রধান করা হয়েছে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে। তিনি আগের সার্চ কমিটিরও প্রধান ছিলেন। কমিটির সদস্য হিসাবে এসেছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। গত সার্চ কমিটিতে ছিলেন আরেকজন বিচারপতি। আগের সার্চ কমিটিতে সদস্য ছিলেন সিএজি ও পিএসসির চেয়ারম্যান। এবার ওই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান সদস্য হয়েছেন। তারা হলেন যথাক্রমে মাসুদ আহমেদ ও মোহাম্মদ সাদিক। এর বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনজুরুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি শিরীন আখতার সদস্য হয়েছে। আগের সার্চ কমিটি ছিল চার সদস্যবিশিষ্ট, এবার শেষোক্ত দুজনকে নিয়ে ছয় সদস্যবিশিষ্ট।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই সার্চ কমিটি গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এত ঘটা করে আলোচনার কোনো প্রয়োজন ছিল না। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা ও প্রস্তাবের কোনো প্রতিফলন এতে লক্ষ্য করা যায়নি। প্রেসিডেন্ট মোঃ আব্দুল হামিদ পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট মরহুম মোঃ জিল্লুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। মোঃ জিল্লুর রহমানও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এবং তার মতো করে সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন। যদি হুবহু তার নীতি-প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা হবে তবে আলোচনার অংশটি বাদ রেখে এ ঘোষণাই যথেষ্ট ছিল যে, আগে যেভাবে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবারও সেভাবেই গঠন করা হবে। এরকম ঘোষণা দেয়া হলে সম্ভবত রাজনৈতিক দলগুলোর আকাক্সক্ষা এবং নাগরিক সমাজের কামনা ও জনগণের প্রত্যাশা এত উঁচুতে উঠতো না। সবাই ধরে নিত, আগে যেমন হয়েছিল এবারও তাই হবে। আসলেও আগে যা হয়েছিল এবারও তা-ই হয়েছে। এতে সরকারী দল ও মহল বাদে সকল মহলেই সঙ্গত হতাশা দেখা দিয়েছে।
বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করা গেছে, ২০১২ সালে গঠিত সার্চ কমিটির যিনি প্রধান ছিলেন, এবারও তাকেই প্রধান করা হয়েছে। কেন, আর কোন ব্যক্তি কি ছিলেন না?’ সিএজি ও পিএসসির চেয়ারম্যানকেই বা কেন বারবার সদস্য করতে হবে? আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত বিচারপতিদের থেকেই বা কেন সদস্য নিতে হবে? আগের সার্চ কমিটিতে বিচার বিভাগের দুই এবং দুই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে দুইÑ এই চারজনকে নিয়ে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছিল। সেই সার্চ কমিটি যে ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করেছিল তার মধ্য থেকেই গঠন করা হয়েছিল বর্তমান নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায় ততই ভালো। একরম ব্যর্থ, অযোগ্য, অদক্ষ, নতজানু ও রাজনৈতিক প্রভাবাধীন নির্বাচন কমিশন অতীতে আর একটিও গঠিত হয়নি।
সকাল দেখলেই দিন কেমন হবে বুঝা যায়। সার্চ কমিটির যে চেহারা সকলের কাছে দৃশ্যমান তাতে আগামী নির্বাচন কমিশন কেমন হবে, কিছুটা আন্দাজ করা যায়। রকিব কমিশনের মতো আর একটি কমিশন আসছে, সেরকম অনুমান এখনই করার সময় আসেনি বটে, তবে আলামতাদি তেমনই নির্দেশ করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন জোট সার্চ কমিটিতে সন্তুষ্ট হলেও বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোট হতাশ। সেই সঙ্গে ক্ষুব্ধও। বিএনপির মহাসচিবের প্রতিক্রিয়ায় থেকে তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, এই সার্চ কমিটি আওয়ামী লীগের পছন্দের সার্চ কমিটি। মহামান্য প্রেসিডেন্ট যে কমিটি দিয়েছেন তাতে আমরা শুধু হতাশা হয়নি, আমরা ক্ষুব্ধও হয়েছি। তার ভাষায়, জাতিকে রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত করার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করলেন না। জাতিকে আরেকটি অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়া হলো। বলাই বাহুল্য, এই সার্চ কমিটি জাতির প্রত্যাশানুগ হয়নি। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসাবে প্রেসিডেন্ট জাতিকে আলোর দিশা দিতে পারেননি। যে কারণেই হোক, তিনি জাতির প্রতি করতে সুবিচার করতে পারেননি।
তারপরও দেশের মানুষ আশা করে, শক্তিশালী ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হোক। সে সুযোগ এখনই হাতের বাইরে চলে যায়নি। অতীতে অভিজ্ঞতা সামনে রেখে নবগঠিত সার্চ কমিটি যদি দলনিরপেক্ষ ও অবিতর্কিত ব্যক্তিদের নামের তালিকা দিতে পারে এবং সেই তালিকা মোতাবেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করেন তবে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হতে পারে। বিষয়টি সার্চ কমিটির ওপর যেমন নির্ভর করে তেমনি নির্ভর করে সরকারের সদিচ্ছা ও প্রেসিডেন্টের অভিভাবকসূলভ ভূমিকার ওপর। নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা ও ঐকমত্যের দাবি পুরনো। এ ধরনের আলোচনা ও ঐকমত্যে পৌঁছানোর কোনো সুযোগ আছে কি না, সেটাও দেখা যেতে পারে। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে আর কোনো বিতর্ক ও প্রশ্ন থাকবে না।
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গ্রহণযোগ্য দক্ষ, যোগ্য, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন অপরিহার্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশনই কাক্সিক্ষত নির্বাচনের একমাত্র শর্ত নয়। অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারেরও একটা বড় ভূমিকা থাকে। ভূমিকা থাকে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোরও। শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে এখন জোর আলোচনা চললেও নির্বাচনকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা তেমন জোরদার নয়। এর কারণ এই হতে পার যে, নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি একেবারেই সামনে এসে পড়েছে। আগামী মাসেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালে। ফলে নির্বাচনকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নির্ণয়-নির্ধারনের জন্য সময় পাওয়া যাবে। এ কথা ঠিক, নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ না হয় তাহলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কেবল দুরূহই নয় অসম্ভবও বটে। কাগজে-কলমে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল ও অর্থ নির্বাচন কমিশনের নেই। এ জন্য সরকারের ওপরই ভরসা করতে হয়। অন্যদিকে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশেরও অভাব রয়েছে। এমতাবস্থায় প্রত্যাশিত নির্বাচন করতে হলে সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষা ও নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন অনুসারে সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান করার বিকল্প নেই। অনেকেই মনে করেন, সরকার যদি নিরপেক্ষ ও নির্বাচন সহায়ক না হয় তাহলে নির্বাচন কমিশন যতই শক্তিশালী ও দলনিরপেক্ষ হোক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর আচার-আচরণ, সদিচ্ছা, পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদির ওপরও নির্বাচনের অবাধতা, সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা ও শান্তিপূর্ণতা বিশেষভাবে নির্ভর করে।
এই অপরিহার্যতা ও আবশ্যকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের আলোচনার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করা দরকার। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বিশ্বের অন্য কোথাও সংসদীয় নিয়মে এ ধরনের ব্যবস্থা নেই। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন করতে হয়। তখন আর কেউ নির্বাচিত থাকেন না। আমাদের সংবিধানে সংসদ না ভেঙ্গেই নির্বাচন করার ব্যবস্থা রয়েছে যা যৌক্তিক নয় এবং সংসদীয় নিয়মের মধ্যে পড়ে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সরকার তখন নির্বাচনকালীন সরকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। এই যে সাংবিধানিক ব্যত্যয় রয়েছে তার সংশোধন প্রয়োজন। তাছাড়া আমাদের দেশে যে রাজনৈতিক কালচার দাঁড়িয়ে গেছে তাতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। সেক্ষেত্রে এমন একটি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজন যে সরকার হবে নিরপেক্ষ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ীও দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা সম্ভব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সরকার গঠিত হতে পারে। এ ধরনের সর্বদলীয় বা জাতীয় সরকার গঠিত হলে তার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই যেখানে প্রধান লক্ষ্য সেখানে দলনিরপেক্ষ, শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য সরকার যে সরকারের একমাত্র কাজ হবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোতভাবে সহায়তা করা যাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং তাদের গণরায়ের যথাযথ প্রতিফলন ঘটে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বলতে হচ্ছে, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক এতটাই অবনত যে, এসব বিষয়ে তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার তেমন সুযোগ নেই। জাতীয় স্বার্থেই এ অবস্থার আবসান জরুরি। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুধাবন করতে হবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা বজায় থাকলে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাই শুধু ব্যাহত হয় না সেই সঙ্গে অর্থনীতি, সমাজ-শৃঙ্খলা, নাগরিক নিরাপত্তা সবকিছুই ব্যাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি আছে। এর মধ্যেই ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছে। এই সে দিনও প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এও জানিয়েছেন, সরকার গত নির্বাচনের ইশতেহারের চেয়েও বেশী কাজ করেছে। তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- মানুষের মাঝে তুলে ধরার তাকিদ দিয়েছেন। আসলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে । এই তোড়জোড় থেকে অনেকেই ধারণা করছেন, নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের আগেও হয়ে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন দলের দেখা দেখি অন্যান্য দলও নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু করেছে। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই অনেক কিছুর ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্যভিত্তিক ফয়সালা করতে হবে। তার মধ্যে নির্বাচন কর্মিশন গঠন, নির্বাচনকালীন সরকার ও তার প্রকৃতি নির্ধারণ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব ক্ষেত্রে সরকার ও সরকারী দলকেই অগ্রবর্তী ভূমিকা পালন দরকার হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে করতে হবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা। বিষয়গুলো নিয়ে এখনই আলোচনার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এখনকার প্রধান কাজ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন। তবে সবচেয়ে বড় কাজ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন বিষয়ে ঐকমত্যে উপনীত হওয়া। এ দুটি কাজ সম্পন্ন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন আপনা-আপনিই অনেকখানি হয়ে যাবে। অতঃপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। রাজনৈতিক উন্নয়নসহ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পালাবদলে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন