শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভূমির দুষ্প্রাপ্যতা অন্যতম সমস্যা

চট্টগ্রামে আলোচনা সভায় বক্তাগণ

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ঢাকার ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম নেতৃবৃন্দ চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলমের সাথে গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ ও অঞ্জন শেখর দাশ, চট্টগ্রাম জুনিয়র চেম্বারের সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন, রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল, সেক্রেটারী জিয়াউর রহমানসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভূমির দুষ্প্রাপ্যতা অন্যতম প্রধান সমস্যা। উন্নত বিশ্বের আদলে সারাদেশে একশ’ বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল (ইজেড) বাস্তবায়ন করা হলে এক থেকে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানসহ দেশের অর্থনীতি উন্নতির শিখরে আরোহন করবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ৩০ হাজার একর জায়গা নিয়ে গঠিত হচ্ছে মিরসরাই বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল। সেখানে ব্যাপক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্ভব হবে। তিনি এ প্রকল্প দ্রæত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামের গ্যাস সংকট প্রসঙ্গে চেম্বার সভাপতি বলেন, ৫শ’ এমএমসিএফটি চাহিদার বিপরীতে আজকের সরবরাহ ২৪০ এমএমসিএফটি। গ্যাস সংকটের কারণে ইতোমধ্যে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে-২০০৯ সালে চট্টগ্রামে ৬শ’ গার্মেন্টস শিল্প কারখানা ছিল। বর্তমানে তা হ্রাস পেয়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’তে নেমে এসেছে। এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে ২০১৮ সালের মধ্যে গ্যাস সংকট নিরসন হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। বিদ্যুৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে শিল্পের ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নীত করতে হবে এবং পাশাপাশি নৌপথ ও রেলপথে পণ্য পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।
বাণিজ্যিক রাজধানীর বিষয়ে তিনি বলেন, এক সময় ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত অধিদপ্তর, ব্যাংক এবং অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে অবস্থিত ছিল। যা পর্যায়ক্রমে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। ব্যাংকের ডিএমডি লেভেলের কর্মকর্তা থাকলেও কার্যত তাদের কোন ক্ষমতা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানকে পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন করতে হবে যাতে প্রয়োজনীয় অনুমোদন চট্টগ্রাম থেকে সম্পাদন করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, প্রায় ২৪ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার উদাহরণ। তবে কাস্টমস-এর ২১% প্রবৃদ্ধি ও বন্দরের ক্রমবর্ধমান ১৪-১৫% প্রবৃদ্ধির সাথে সংগতি রেখে এবং ২০২১ সালের মধ্যে আরএমজি রপ্তানিতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার লক্ষ্যে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এক্ষেত্রে বে-টার্মিনাল প্রকল্প ফাস্টট্র্যাক হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কেননা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ১২-১৩ মিটার ড্রাফটের প্রায় ৫০টি জাহাজ একসাথে বার্থিং করতে পারবে। এ টার্মিনাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে, রেলপথ ও নৌপথে সারাদেশে পণ্য পরিবহন করা যাাবে। সাগর, নদী ও পাহাড়বেষ্টিত রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পের প্রসারে চট্টগ্রাম থেকে এসব অঞ্চলে ডাবল লাইন সড়ক নির্মাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন চেম্বার সভাপতি।
দেশের ৫০-৬০% যুবশক্তিকে দক্ষ জনবলে রূপান্তরিত করে যে অঞ্চলে যে সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারী নীতিমালা প্রণয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন মাহবুবুল আলম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন