স্টাফ রিপোর্টার : দেশে প্রথমবারের মতো মেয়েদের ফুটবল নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উদ্যোগ নিয়েছেন চলচ্চিত্রের সফল পরিচালক পিএ কাজল। তিনি জানান, চলচ্চিত্রের বর্তমান দুর্দশার অন্যতম কারণ গৎবাঁধা গল্প ও নির্মাণশৈলী। বিশ্বের চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু এখন অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমরা যদি বলিউডের সিনেমার দিকে তাকাই তাহলে দেখব, সেখানের সিনেমাগুলোর গল্পের ধারা এবং উপস্থাপন একেবারে বদলে গেছে। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রে নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনা এখন নেই বললেই চলে। অধিকাংশ নির্মাতাই দর্শকের পরিবর্তনশীল মানসিকতার বিষয়টি উপলব্ধি না করেই সিনেমা নির্মাণ করছেন। যেখানে গল্প বলতে কিছু নেই। কেবল প্রেম-ভালবাসা আর দুয়েকটি অ্যাকশন। এ ধরনের গল্প দর্শক দেখতে দেখতে ত্যক্ত-বিরক্ত। তিনি বলেন, এখন ইউটিউব দর্শকের সামনে বিরাট মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তাদের সামনে বিশ্বের দরজা খুলে গেছে। তারা সব কিছুই জানতে পারছে। বিষয়টি আমাদের চলচ্চিত্র নির্মাতারা হয় বুঝতে পারছেন না, না হয় আমলে নিচ্ছেন না। তারা সেই পুরনো ধারা আঁকড়ে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন। যাকে বলে ছকে বাঁধা চলচ্চিত্র। এই এক জিনিস দর্শক কেন বারবার দেখবে? এক কুমিরের বাচ্চা সাতবার দেখিয়ে দর্শকদের এখন আর বোকা বানানো সম্ভব না। দর্শকের চিন্তাভাবনা অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের চিন্তার সঙ্গে আমাদের অধিকাংশ নির্মাতা এগুতে পারছে না। ফলে যে চলচ্চিত্র নির্র্মাণ করা হোক না কেন, দর্শক তা প্রত্যাখ্যান করছে। এ বিষয়টি উপলব্ধি করেই, আমি প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করে সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। প্রেক্ষাপটটি আমাদের দেশের নারী ফুটবলারদের গৌরবগাথা নিয়ে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, এ নিয়ে কী গল্প হতে পারে! এখানেই আমার চিন্তাটা যুক্ত করেছি। নারী ফুটবলারদের জীবনে যে কত অব্যক্ত গল্প রয়েছে এবং তাদের অদম্য যে স্পৃহা, তা বড়ই প্রেরণাদায়ক। এই প্রেরণাই আমি দর্শকের সামনে পুরোপুুরি সিনেমা উপযোগী করে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছি। এতে যেমন থাকবে টানটান উত্তেজনা, তেমনি থাকবে সাফল্য, ব্যর্থতার মাঝে নির্মল ও সরল একটি গল্প। আমি মনে করি, দর্শককে একটা ভিন্ন কিছু দিতে পারব। সিনেমাটির নাম এখনও ঠিক করিনি। তবে অভিনেতা-অভিনেত্রী অনেকটাই চূড়ান্ত করে ফেলেছি। প্রাথমিকভাবে রিয়াজ, মৌসুমী, ওমর সানি, শতাব্দী ওয়াদুদের সাথে কথা হয়েছে। মৌসুমী চূড়ান্ত হয়েছে। রিয়াজের সাথে কথা চলছে। ইতোমধ্যে আমি ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি সালাউদ্দিন ভাইয়ের সাথে কথা বলে অনুমতি নিয়েছি। তিনি সানন্দে রাজী হয়েছেন এবং আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। সিনেমাটি নির্মিত হবে ঐতিহ্য চলচ্চিত্রের ব্যানারে। চিত্রগ্রহণে থাকবেন মাহফুজুর রহমান। সঙ্গীতে কুমার বিশ্বজিৎ। কাহিনী গ্রন্থনা করেছেন লিপু মামা। চিত্রনাট্য ও সংলাপ আমি নিজে করব। তিনি জানান, সিনেমাতে রিয়াজ কোচের চরিত্রে আর মৌসুমী দলের ম্যানেজারের চরিত্রে অভিনয় করবেন। এ দু’জনের মধ্যেও একটা গল্প আছে। প্রায় এক দশকের বেশি সময় পর রিয়াজ ও মৌসুমী আবার একসঙ্গে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। অর্থাৎ চলচ্চিত্রটি এমনভাবে উপস্থাপিত হবে যাতে দেশাত্মবোধের পাশাপাশি সিনেমাটিক কিছু বিষয় থাকবে। আমাদের দেশে এ ধরনের গল্পের সিনেমা এটাই প্রথম। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সিনেমাটির শূটিং শুরু করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন