শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দেশের শততম টেস্ট, আপনার নেতৃত্বে মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ?

| প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুশফিক : এটা অনেক বড় একটা দিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অধিনায়ক হিসেবে এই ম্যাচ খেলতে পারলে এটা আমার জন্য বিরাট ব্যাপার হবে। ২০০০ সালে বাংলাদেশ যখন টেস্ট স্ট্যাটাস পায়, আমি তখন বিকেএসপিতে ক্লাস সেভেনে পড়ি। সেখানে বসেই বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট দেখেছি। ওই স্মৃতি কিছুটা মনে আছে। ওখান থেকে বিশ্বাস জন্ম নিয়েছিল। বাংলাদেশের হয়ে কোনোদিন টেস্ট খেলতে পারলে ভালো হবে, স্বপ্নটা তখন থেকেই দেখেছি। গত ১৭ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট যতোটা এগিয়ে যাওয়ার কথা, ততটুকু হয়তো পারেনি। আমাদের আগে যারা শততম খেলেছেন, তাদের মতো অর্জন করতে পারি নাই। তবে আমার মনে হয়, গত দুই আড়াই বছর ধরে আমরা যেভাবে ক্রিকেট খেলছি, সেভাবে খেলতে পারলে আমরা বহুদূর যেতে পারব। ছয় মাস আট মাস বা এক বছর পরপর আমাদের টেস্ট খেলতে হয়। এটা যে কোনো দলের জন্য কঠিন হয়ে যায়। এ বছর পুরোটা ভালোভাবে খেলতে পারলে ভবিষ্যতে আমরা দল হিসেবে আরো ভালো পারফর্ম করতে পারব।
* গলের দুঃস্মৃতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন শততম ম্যাচে?
মুশফিক : গল টেস্টে আমরা আমাদের সামর্থের অর্ধেকও খেলতে পারিনি। তা খুবই হতাশার ছিল। আমরাই এই জন্য দায়ী। যেভাবে হোক, আমরা সামনের ম্যাচে ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারি। কারণ এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই ভালো সময়। প্রতিটি সুযোগ আমরা গ্রহণ করতে চাই। মৌলিক ব্যাপারগুলোতে আমাদের কিছু সমস্যা হয়েছে। এখানে আমরা যতো ভালো করব, দল হিসেবে আমাদের ফলাফল ততো ভালো হবে।
* শততম টেস্টের আগে দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে তো অনেক কিছু হলো? উনি কি থেকে যাচ্ছেন?
মুশফিক : রিয়াদ ভাই দ্বিতীয় টেস্টে খেলছেন না। তারপরও উনি যেহেতু ওয়ানডে স্কোয়াডে আছেন, তাই এখানেই থাকছেন। এ রকম ঘটনা যে কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে হতে পারে। ফর্মে থেকে যে কেউ এভাবে ব্যাড প্যাচে চলে যেতে পারে। যদিও খারাপ লাগছে, তিনি সিনিয়র খেলোয়াড়। এ রকম কেউ স্কোয়াডের বাইরে গেলে খারাপ লাগবেই। আমরা ১-০ তে সিরিজে পিছিয়ে আছি। এখন যেই খেলুক, আমি খেলি বা না খেলি, ফলাফল আমাদের পক্ষেই আনতে হবে। এখানেই আমাদের সবার মনোযোগ। তাই আমার মনে হয় না ওই ঘটনা দলের উপর তেমন প্রভাব ফেলবে।
* দেশের শততম টেস্ট, প্রত্যাশা অনেক। এতে কি একটু বেশি চাপ হয়ে যাচ্ছে না?
মুশফিকর : প্রতিটি টেস্টেই প্রত্যাশা থাকে। বাংলাদেশ এখন এমন একটা জায়গায় এসেছে যে, টেস্ট বা ওয়ানডে, টি-২০ যে ফরমেটের হোক, এখন সবাই আশা করে যে বাংলাদেশ যে কোনো ম্যাচ জিততে পারে। এই প্রত্যাশা থেকেই খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হয় এবং মাঠে গিয়ে পারফর্ম করতে মুখিয়ে থাকে। শততম টেস্টে যাতে জয় নিয়ে ফিরতে পারি, তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব। যেনো ধারাবাহিক খেলতে পারি, সেটাই থাকবে প্রধান লক্ষ্য।
* হেরাথ বলেছেন পি সারার উইকেটে বাউন্স বেশি পাওয়া যায়?
মুশফিক : পি সারায় এর আগে আমি একটি টেস্ট খেলেছি। এ ছাড়া এখানে খেলাও দেখেছি। এখানে সাধারণত শুরুর দিকে পেসাররা হেল্প পায়। মাঠের মাটি অন্য রকম বলে বাউন্স থাকে। উইকেট একটু শুকনো। অর্থাৎ দিন যতো যাবে স্পিনাররা ততো সহায়তা পাবে। ব্যটসম্যানরাও এখানে খুব ভালো রান পায়। অনেক রেকর্ডও আছে। আমার মনে হয়, ব্যাটসম্যানরা মন দিয়ে খেলতে পারলে তাদেরও অনেক কিছু করার আছে। সব মিলিয়ে আমার মনে হয় এটা একটা স্পোর্টিং উইকেট। আর যাদের ভূমিকায় বাংলাদেশ দল জিততে পারে। এ রকম ১১ জনকে নিয়ে এই ম্যাচের একাদশ গঠন করা হবে। তারাই খেলবে।
* ১০০টি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশের ১৭ বছর লেগে যাচ্ছে?
মুশফিক : আমি ১০ বছরে আমি মাত্র ৫৩টা টেস্ট খেলেছি। অথচ আমার পরে অভিষিক্ত হয়ে অনেকেই, এই যেমন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ বলেন, অ্যালিস্টার কুক বলেন তারা প্রায় ১০০ টেস্ট বা বেশি খেলেছে। বাংলাদশের টেস্ট ক্রিকেটে তাই উন্নতি করা কঠিন। ছয় মাস পর টেস্ট খেলতে নামলে দেখা যায় আগের টেস্টের পাঁচ ছয়জন নেই। তাদেরও সময় লাগে সেট হতে। টেস্ট তো একদিনে ভালো খেলে জেতা যায় না। স্কিল এবং মানসিকতার সমন্বয় লাগে। তবে এ বছর যতো খেলা আছে, বাংলাদেশ যদি এ রকম আরো দুই তিনটা বছর পায়, তবে টেস্টে একটা ভালো দল হয়ে দাঁড়াতে পারবে।
* শ্রীলংকা সফরে টসও তো একটা ফ্যাক্টর?
মুশফিক : টস তো সব সময় বড় একটা ফ্যাক্টর। বিশেষ করে উপমহাদেশে। কিন্তু এখানে কারো কোনো হাত নেই। চেষ্টা থাকবে, যেটাই আগে পাই, সেটাতেই সামর্থ্য অনুযায়ী যেনো খেলতে পারি। এখানে পাঁচদিন খেলতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো পাঁচদিন ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে।
* এই মাঠে তো আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। আগে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছি সব ক’টি ম্যাচে?
মুশফিক : রেকর্ড আসলে ভালো- মন্দ সবই থাকে। সর্বশেষ টেস্টটা যেখানে হারলাম সেখানে কিন্তু একটা টেস্ট ড্র করার স্মৃতি ছিল। তারপরও এতো বাজেভাবে যে হারব ভাবিনি। আমাদের আসলে নতুন করে শুরু করতে হয়। এখানে আগে যখন খেলেছিলাম, হেরাথ ছাড়া কেউ ছিল না। এখন আমাদের কাছে লঙ্কান বোলিং লাইনটা একটু চেনা হয়েছে। আমরা যদি মৌলিক ব্যাপারগুলো ঠিকঠাকভাবে খেলতে পারি, তাহলে ফলাফল আশা করি আমাদের পক্ষেই থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন