সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক

| প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই সোচ্চার হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক সক্রিয়বাদীরা। ৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক অধিকারবাদী ও পরিবেশবাদী গ্রæপ সুন্দরবনের কাছে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছে, এধরনের প্রকল্প রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিকে ধ্বংস করবে, পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্যহানির কবলে পড়বে এলাকার বাসিন্দারা ও সুন্দরবনকে ঘিরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে এমন কয়েক লাখ মানুষ আয় হারাবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পরিবেশ সক্রিয়বাদীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও দুটি দেশের সরকার তাদের পাত্তা দিচ্ছে না। এমনি এক প্রেক্ষাপটে রামপাল প্রকল্পের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস’ কোম্পানিকে বিনিয়োগ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে নরওয়ের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ তহবিল।
নরওয়ের ৯৩৫ বিলিয়ন ডলারের ওয়েলথ ফান্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ তহবিলগুলোর একটি। কিন্তু এই রাষ্ট্রীয় তহবিল কোন দেশে বা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারবে, তার কিছু নীতিমালা ঠিক করে দিয়েছে নরওয়ের পার্লামেন্ট। এর মধ্যে আছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্প, পরমাণু অস্ত্র, তামাক এবং এন্টি পার্সোনাল ল্যান্ড মাইনের মতো অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি।
নরওয়ের সেন্ট্রাল ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশে যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে সেটির পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ আছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। সেই বিবেচনাতেই ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসকে তাদের ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এথিকস কমিটি নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ভারত হেভি ইলেকট্রিকসে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল, তারা জানিয়েছে এই ভারতীয় কোম্পানির কাছে তারা নানা বিষয় জানতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারত ইলেকট্রিক্যালস তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের কোন উত্তর দেয়নি।
গত ২০ এপ্রিল ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে লেখা সুইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সক্রিয়বাদী গ্রæপের লেখা এক চিঠিতে বলা হয়, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রস্তাবিত রামপাল এবং অরিয়ন বিদ্যুৎ প্লান্টগুলো সুন্দরবনের প্রতিবেশের ওপর মারাত্মক ও অপূরণীয় ক্ষতি করবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎ প্লান্টটি লাখ লাখ মানষের স্বাস্থ্য ও জীবিকা হুমকিগ্রস্ত করবে। লবণ-সহিষ্ণু সুন্দরবনে থাকা ছোট ছোট দ্বীপে নানা প্রজাতির পাখি ও প্রাণী বাস করে। আর আছে বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
বাংলাদেশের সুন্দর বন ধ্বংস হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে আরো লাখ লাখ মানুষ অরক্ষিত হয়ে পড়বে এমন দাবি জানিয়ে তেল, গ্যাস খনিজসম্পদ, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে লংমার্চ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশের অতি জরুরি প্রয়োজন বিদ্যুতের, আর প্রস্তাবিত প্লান্টটি সুন্দরবন থেকে অনেক দূরে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, প্রকৃতি এবং জনসাধারণের জীবিকায় জীবাস্ম-জ্বালানিভিত্তিক প্লান্টের ঝুঁকি এখনো পরিমাপ করা হয়নি।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে লেখা চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এসব প্রকল্পের কারণে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। কারণ উচ্ছেদের ফলে জেন্ডার বা নারী-পুরুষের সহিংসতা বেড়ে যায়। এতে করে নারীরা পাচার ও পতিতাবৃত্তিতে জড়িত হওয়ার শঙ্কায় থাকে।


 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ৭ মে, ২০১৭, ৯:৩১ এএম says : 0
এই সংবাদটা পড়ার পর এটা প্রতীয়মান হয় যে, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকোল্প দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিপূর্ন প্রকল্প। ফারাক্কা যেমন আমাদের জন্য বিরাট একটা ক্ষতিকারক প্রকল্প তেমনই রামপালও আমাদের জন্য বিরিট ক্ষতিকারক প্রকল্প এটা কঠিন সত্য। ’৭৮ পর্যন্ত আমাদের সাথে ভারতের গঙ্গার পানির বন্টনের একটা চুক্তি ছিল কিন্তু সেটা নবায়ন না হয়াতে বা নতুন কোন ফারাক্কা চুক্তি না হওয়াতে আমাদের দেশের আবহাওয়া আমূল পরিবর্তন হয় এবং প্রচুর লোক গৃহ হারা হয়ে রাস্তায় নেমেছে। দেশের অপূরনীয় ক্ষতি সাধন হয় ফারাক্কার কারনে সাথে সাথে ভারত ফারাক্কার মজা পয়ে তিস্তা সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন নদীর পানি আন্তর্জাতিক আইন না মেনে উজানে পানি আটকায়ে বিভিন্ন দিকে পাঠিয়ে নিজেদের লাভবান করতে শুরু করে। এতে করেই বাংলাদেশের আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে এবং দেশে কৃষি ও মৎস খাত ভিষন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং লক্ষ লক্ষ লোক বেকার হয়ে যায়। তবে দেশ থেকে আবার লক্ষ লক্ষ লোক বিদেশে কাজের করতে চলে যাওয়াতে দেশের অর্থনীতিতে তেমন কোন ব্যাঘাত ঘটেনি তাই দেশ বাসী এটাকে সহজ ভাবে নিয়েছে। ফারক্কাকে এখন সামাল দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি তারপর মাথার উপর তিস্তা ও সিলেটের পানির সমস্যা সামলানো যায়নি। ঐ সব ক্ষতি ভারতের ঘাড়ে চাপিয়ে সরকার তার দূর্বল কূটনৈতিক ক্ষমতার দোষ থেকে রাহাই পেয় যায়। এরপর ঘাড়ে চেপেছে রামপাল এখানে আবার ভারতকে জড়ানো খুবই কঠিন কাজ তাই এই সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। আর এটা করে থাকে দেশের বিরুধি দল বা দল গুলো; কিন্তু দেশে বর্তমানে কোন বিরুধি দল নেই তাই বর্তমান সরকার তার একগুয়েমি (মানে ইগোর) কারনে আবার দেসবাসীকে এক বিরাট সমস্যার মধ্যে ফেলতে যাচ্ছে...... তাই আমি এখানে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে একটা কথা স্মরণ করিয়ে দেতে চাই সেটা হচ্ছে এক বালতি দুধে এক ফোটা চনাই যথেষ্ট এটা শুধু প্রবাদই নয় কঠিন সত্য কথা। আরো একটা বিষয় আমার এখানে প্রশ্ন জেগেছে সেটা হচ্ছে, ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস এর কি কাজ এই রামপাল প্রকল্পে??? এই প্রকল্পে এই কোম্পানী কত মূলধন খাটাচ্ছে??? যাইহোক এখন আমার মনে হয়ে নরওয়ে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসকে প্রফাইল থেকে বাদ দিলেও ওদের কোন লকশান হবে না কারন ওরা যা লাভ পাচ্ছিল নরওয়ের টাকায় তারচেয়েও কয়েক গুন বেশী লাভ করবে এই রামপাল থেকে এরপর পাচ বছর পার করে আবার নতুন করে এরা সদস্য হবে এটাই সত্য। লোকশান যা হবার সেটা হবে বাংলাদেশের জনগনের। কাজেই আমি আবারও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে চাই আপনার নিজের আন্তর্জাতিক ভাবে একটা গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে সে কারনে আপনার যুক্তিতি দেখানোর পর সড়াসড়ি ওরা আপনাকে কিছু না বললেও আপনার গ্রহণ যোগ্যতা ওদের কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। ফলে এই রামপালের জন্য আপনার আন্তর্জাতিক গ্রহণ যোগ্যতা ক্ষুন্ন হবার সম্ভবনা আমার নজরে আসছে। আল্লাহ্‌ বাংলাদেশের মঙ্গলের জন্য যেটা সঠিক সেটাই যেন করেন এটাই আমার আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা। আমীন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন