শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

উদ্বোধনের চার বছরেও পুরোদমে চালু হয়নি

রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা, রামগড় (খাগড়াছড়ি) থেকে : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার একমাত্র ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটি চিকিৎসক সঙ্কটে কর্তৃপক্ষ সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাগড়াছড়ি জেলা স্টেডিয়ামে ডিজিটার পদ্ধতিতে রামগড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় বর্ধিত করণ উদ্বোধনের চার বছর অতিবাহিত হলেও বিভিন্ন পদে লোকবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বল্পতার কারণে পুরোদমে চালু করা যায় নি। গত ২০১২ সালে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালটির বর্ধিত ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে নতুন ভবনটি স্থাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু উদ্বোধনের চার বছর পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালের বর্ধিত ভবনটি পুরোদমে চালু হচ্ছে না। এতে রামগড় ও আশেপাশের উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ প্রতিনিয়ত আধুনিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুর্গম দরিদ্র পার্বত্য জনগোষ্ঠি, জনসংখ্যার আধিক্য এবং বিভিন্ন সমস্যা বিবেচনা করে সরকারের স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিএমএমইউ বিভাগ এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ৩১ হতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হাসপাতালে নিয়মিত ৯-১০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র ৫ জন। এদিকে শুরু থেকেই বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের একমাত্র ৩০০ এমএ’র অত্যাধুনিক কোরিয়ান এক্স-রে মেশিন। এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ দিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এক্স-রে মেশিনের ট্রান্সফরমারটিতে ক্রটি থাকায় ও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় মেশিনটি সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। এ পর্যন্ত এক্স-রে মেশিনটি ৪ বার মেরামত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর অবিভাবক অজিৎ ত্রিপুরা (৩২) মোঃ জসিম (২৫) জানান, হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগীরা এলে এক্স-রে জন্য ফেনী বা চট্টগ্রামে যেতে হয়। রোগীর অভিভাবকগণ আরো বলেন মায়েদের প্রসূতি সেবার জন্য নেই কোন মহিলা ডাক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ির সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া বিশেষ তদবিরে ২০০৪ সালের ২০ জুলাই পার্বত্য খাগড়াছড়ির আট উপজেলার স¦াস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩০০ এমএ ক্ষমতাসম্পন্ন এক্স-রে মেশিনটি সরবরাহ করা হয়। কিন্তুু অত্যাধুনিক কোরিয়ান এক্স-রে মেশিনটি চালু করতে যে পরিমান বিদ্যুৎ ভোল্টেজ প্রয়োজন পার্বত্য এলাকায় সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ লাইনে সে পরিমান বিদ্যুৎ ভোল্টেজ নেই বলেও বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ প্রতিনিধিকে জানান, একটি ট্রান্সমিটার বসালে সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। এদিকে গত ১৪ ফেব্রæয়ারী রামগড়ের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাঙ্গামাটির উপ-পরিচালক মোঃ শফিকুর রহমান ভূঁইয়া। পরে হাসপাতালের প্রধান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোঃ জাহিদুল ইসলামের সাথে মতবিনিময় কালে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চেীধুরীও আকস্মিক হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন এবং তিনিও হাসপাতালের খোঁজ খবর নেন। তিনি বলেন হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যার বিযয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বিযয়টি অবগত করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের বর্ধিত ভবনটি চালু করা গেলে সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। ভবনটি দ্রæত চালু করার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগিদ করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান আগামী বিসিএস পরীক্ষায় উর্ত্তীন নিয়োগ প্রাপ্ত ডাক্তার শিগগিরই শূন্য পদ পূরনে সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদী। ডাক্তার সংকটের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-মামুন মিয়া এ প্রতিনিধিকে বলেন রামগড় হাসপাতালে ডা. সংকটের কথা বিবেচনা করে অগ্রাধিকারে ভিত্তিত্তে ডাক্তারের শূন্যপদ পূররেন জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে পত্র পাঠানো হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মানউন্নতসহ বিদুৎ, পানি এবং চিকিৎসক সঙ্কট নিরসনের জোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন