শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাস লঞ্চ ও ট্রেনে উপচেপড়া ভিড়

ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উন্নতি

| প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : আর মাত্র একদিন পরেই ঈদ। মানুষ ছুটছে গ্রামের পথে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে উপচে পরা ভিড়। ঘরমুখি মানুষের এই যাত্রার আনন্দ ¤øান করে দিচ্ছে যানজট, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও সময়ের ভোগান্তি। তারপরেও ঈদ বলে কথা। দেশের চারটি প্রধান মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আগের মতোই যানজট লেগে আছে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট কমলেও যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। অতিরিক্ত যাত্রীর ভারে লঞ্চগুলো চলছে ধীরে। আর ট্রেনের সিডিউলের হেরফেরের ভোগান্তিতো আছেই। আজ শেষ মুহূর্তের যাত্রায় ঘরমুখি মানুষের ঢল আরও বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। গাবতলীকেন্দ্রীক বাস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের এক নেতা বলেন, গাবতলীতে এখনও বাসের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দু›দিন আগেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় যানজটের কবলে পড়ে শত শত যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গতকাল বুধবার সেখানে তেমন কোনো যানজট ছিল না। গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, অন্যান্য সময় টঙ্গী থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাসমোড়, চান্দনা চৌরাস্তা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি, মৌচাক, সফিপুর, যানজট লেগেই থাকত। কিন্তু বুধবার সকালে এ চিত্র ছিল একেবারে উল্টো। তিনি জানান, গাজীপুরের ১২শ জেলা পুলিশের সঙ্গে শতাধিক হাইওয়ে পুলিশ একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। অনফিট গাড়িগুলো মহাসড়কে চলতে দেয়া হচ্ছে না। বাসের ছাদে ও ট্রাকে যাত্রী পরিবহণ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে পথে দুর্ঘটনাও কমে গেছে, যানজট নেই বললেই চলে। এ বিষয়ে গাজীপুরের সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাহিন রেজা জানান, দুদিন ধরে টানা বৃষ্টি না থাকায় গাজীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টঙ্গী থেকে শুরু করে চান্দনা চৌরাস্তা, কোনাবাড়ি, মৌচাক, সফিপুর ইত্যাদি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো দ্রæত মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। সে কারনে যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারছে। তিনি বলেন, চাপ বেশি থাকার পরেও অন্তত গাড়ি সচল রয়েছে, কোথাও যানবাহন একেবোরে থেমে নেই। অন্যদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গতকাল সকালেও মেঘনা ও গোমতী সেতুর দুই পাড়ে দীর্ঘ যানজট ছিল। বাস চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিনভরই চার লেনের এই মহাসড়কে যানজট ছিল। দুপুরে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতুতে যানবাহনের ধীরগতির কারণে সেতু পার হতে ঘণ্টাব্যাপী সময় লাগছে। এতে যানবাহনের লাইন দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া, ঢকাা-সিলেট মহাসড়কের রুপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে রাস্তা সরু ও উচু নিচু থাকার কারণে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। ভুলতার আশেপাশে দুপুরের পর দীর্ঘ যানজট ছিল উল্লেখ করে নরসিংদী রুটের এক বাস চালক বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই এই রাস্তায় যানজট লেগেই আছে। একজন যাত্রী জানান, সকালে দেখেছি গাজীপুরের মীরের বাজার থেকে মদনপুর পর্যন্ত বাইপাস সড়ক দিয়ে যানবাহন পাস করতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরপর সিগন্যাল দিচ্ছে পুলিশ। একদিকে যানবাহনের ধীরগতি অন্যদিকে সিগন্যালের কারণে ভুলতা এলাকায় থেমে থেমে যানজট হচ্ছে। আবার রাস্তাায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি বিকল হয়ে প্রায়ই যানজট হচ্ছে।
অপরদিকে, কমলাপুর স্টেশনে গতকাল ছিল উপচে পরা ভিড়। প্রতিটি ট্রেনেই গাদাগাদি করে যাত্রী উঠতে দেখা গেছে। সকালে বেশ কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এর মধ্যে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিলাহাটীগামী নীলসাগর ও রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস দেরিতে ছেড়েছে। তবে স্টেশন ম্যানেজার শীতাংশু চক্রবর্তী জানান, বেশিরভাগ ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে। তার মতে, অতিরিক্ত যাত্রী ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের কারনে নির্দ্দিষ্ট গতিতে ট্রেন চলতে না পারায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এটাকে সিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না।
অন্যদিকে, দক্ষিণাঞ্চলগামী প্রতিটি লঞ্চ চলছে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে। বরিশালগামী একজন যাত্রী বলেন, এখন নদনদীগুলো উত্তাল। এজন্য লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীর সাথে ভ্রমণ করা ঝুঁকিপূর্ণ। গতকাল বিকালে সদরঘাট থেকে যে সব লঞ্চ ছেড়ে গেছে সবগুলোতেই অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছিল বলে জানান ওই যাত্রী।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন