সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বেহাল সড়ক-মহাসড়ক

ট্রাক ভাড়া বাড়ায় বেড়েছে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম : দুর্ভোগ ও চড়া দামে খেসারত দিচ্ছে মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সারাদেশেই সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না যানবাহন। খানাখন্দে ভরা সড়ক- মহাসড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ৪ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। ভাঙাচোরা সড়কের কারনে ইতোমধ্যে ট্রাকের ভাড়া প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে মালিকরা। বর্ধিত ভাড়ার প্রভাব পড়েছে চালসহ তরিতরকারি ও নিত্যপণ্যে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারনে একদিকে দুর্ভোগ অন্যদিকে চালসহ নিত্যপণ্যে চড়াদামে খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ প্রসঙ্গে এলজিইডি’র সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শহীদুল হাসান বলেন, বেহাল সড়কের হাল ফেরাতে দরকার পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি স্তরে এক ধরনের নৈরাজ্য বিরাজ করছে। এজন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে উল্লেখ করে এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী বলেন, অব্যবস্থাপনার কারনেই সারাদেশে এক সাথে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার জন্য দরকার আইনের শাসন।
ঈদুল আযহার আগে থেকে সড়ক-মহাসড়েকর এই বেহাল দশা। সময়মতো মেরামত না করায় এবার ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদেরকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সেই দুর্ভোগ এখনও অব্যাহত আছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের হিসাবে সা¤প্রতিক বন্যা আর অতিবৃষ্টিতে দেশের ২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক মেরামতে জরুরি ভিত্তিতে ১৯৩ কোটি ৪৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। তবে বেশ কয়েকটি জেলা এই হিসাবের আওতায় আনা হয়নি। সওজের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান বলেছেন, বন্যা যখন পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে, বর্ষাটা যখন চলে যাবে, তখন আমরা স্টাডি করে দেখব যেখানে পানির প্রবাহটা গেছে সেখানে ড্রেনেজে স্ট্রাকচার ব্রিজ-কালভার্ট করার প্রয়োজন আছে কি না? যদি থাকে তাহলে সে কাজ করার জন্য আলাদা পরিকল্পনা করতে হবে। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া সড়কে যানবাহন চলাচল করায় ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি। সওজ সূত্র জানায়, প্রতি বছর বর্ষায় রাস্তা ও ব্রিজ কালভার্টের কিছু ক্ষতি হয়। এবার বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সে তুলনায় অনেক বেশি। বহু জায়গায় সড়ক ধসে গেছে। বহু জায়গায় রাস্তা পুরোপুরি ওয়াশড আউট হয়ে গেছে। মাঝখানে রাস্তা নাই, ব্রিজ বানাতে হবে এমন অবস্থাও হয়েছে। এজন্য বাড়তি মেরামত কাজের প্রয়োজন হবে। এবার উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা এবং সিলেট অঞ্চলে সড়কের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এ কারনে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিলেট অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বেশি ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
আমাদের জেলা ও উপজেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদনে সারাদেশের সড়ক মহাসড়কের বেহাল অবস্থার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা ভয়াবহ। অনেক এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক গিয়ে মিশেছে নদীর সাথে। কুড়িগ্রামে ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে আছে পানিতে। বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে মহাস্থান সেতু এখন উত্তরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের প্রধান কারন। এছাড়া সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে নকলা ব্রিজ পর্যন্ত মহাসড়কের বেহাল দশা এখনও কাটেনি। বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের ৮০ কিলোমিটার মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটারই চলাচলের অযোগ্য। নেত্রকোনায় মাত্র ৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশায় জনদূভোর্গ চরমে, টাঙ্গাইলে বন্যায় কাঁচা ও পাঁকা রাস্তা মিলিয়ে ৫শত কি.মি. ক্ষতিগ্রস্ত। গাজীপুর জেলার প্রায় ৩শ’ কিলোমিটার সড়কই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। এছাড়াও ভোলা-বরিশাল-লক্ষীপুর মহাসড়কের ৯ কিলোমিটার, কুমিল্লা-ব্রা²ণবাড়িয়া অংশের ২০ কিলোমিটার, বরিশালের জয়শ্রী থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার, ভোলার ইলিশ ফেরিঘাটের ৬ কিলোমিটার, কুমিল্লা- নোয়াখালি আঞ্চলিক সড়ক, শরিয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক, সিলেটের আঞ্চলিক সড়কসহ মহাসড়কের বিরাট অংশের বেহাল অবস্থা।
আমাদের টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে বন্যা ও পরবর্তীতে প্রবল বর্ষণে জেলার গুরুত্বপূর্ন সড়ক ও অভ্যন্তরীণ পাকা ও কাঁচা সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যান চলাচল ও জনসাধারণের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। টাঙ্গাইল শহরের পৌর এলাকার বেশীর ভাগ সড়কগুলোই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এগুলো মেরামতের জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা লাগতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পোড়াবাড়ি, ঘারিন্দা, কাতুলী, কাকুয়া, মগড়া, গালা, হুগড়া, মাহমুদ নগর, মাকড়কোল এসব ইউনিয়নের গ্রামীন জনপদের ২শ’ কি.মি. পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা।
দেলদুয়ার উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, টাঙ্গাইল-আড়িচা-লাউহাটী সড়ক, লাউহাটী- উত্তর ব্রিজ সড়ক, দেলদুয়ার-সিলিমপুর সড়ক ও পাচুরিয়া-ব্যাঙ্গুলিয়া সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ কিঃমিঃ সড়ক যান চলাচলে অনুপযোগি হয়েছে। এছাড়া দেলদুয়ার-লাউহাটী সড়কে চরপাড়া ব্রিজের ৪.৪২৯৭ মিটার চ্যানেল এ্যাপ্রোজ, দেলদুয়ার -সিলিমপুর সড়কে গড়াসিন ব্রিজে ৪.২০০মিটার চ্যানেল এ্যাপ্রোজ ও দেলদুয়ার-নাল্লাপাড়া সড়কের একটি ব্রিজে ৭.০০০ মিটার চ্যানেল এ্যাপ্রোজ ভেঙ্গে গেছে। এতে পাকা সড়কে মোট লোকসানের পরিমান প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
অপরদিকে, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল অংশে অসংখ্য খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটাইল উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় দুঘর্টনা ঘটেছে এবং দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন ঘাটাইল-ধলাপাড়া-সাগরদিঘী সড়ক, ঘাটাইল-ছুনটিয়া-ভূয়াপুর এবং গারোবাজার- সখিপুর সড়কের প্রায় ৬০ কিঃমিঃ পাকা সড়ক খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া উপজেলার ২৫টি গ্রামীন পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঘাটাইল-জামুরিয়া-পাচটিকরী, পাকুটিয়া -চেরাভাঙ্গা, মোগলপাড়া-আনেহলা, বেলদহ-উপুলদিয়া, কদমতলী-কছিমধরা এবং হামিদপুর-বাগুনডালী সড়ক উল্লেখযোগ্য। বগুড়া ব্যুরো জানায়, এবারের বর্ষায় টানা বৃষ্টিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে । সৃষ্টি হয়েছে দুর্ঘটায় মৃত্যুর ঝুঁকি । সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা থেকে গাইবান্ধার কাছে রহবল পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ২৫ কিলোমিটারই এখন যানবাহন চালকদের কাছে ঝুঁকিপুর্ণ বলে চি‎িত্রত হয়েছে । বৃষ্টিতে অসংখ্য খানাখন্দকের সৃস্টি হয়েছে। এই মহাসড়কে বগুড়ার সীমানা শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা থেকে এবং শেষ হয়েছে গাইবান্ধার কাছে রহবল পর্যন্ত । প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়েই উত্তরের ১০ জেলার যানবাহন চলাচলা করে থাকে। অত্যান্তগুরুত্বপূর্ন মহাসড়ক থাকছে সার্বক্ষনিক ব্যস্ততা। নিয়ম মাফিক সংষ্কার কাজ শেষ না হওয়ায় বড় বড় গর্তগুলো হয়ে উঠেছে যেন এক একটি মৃত্যু ফাঁদ। কর্তৃপক্ষের মতে এই গর্তগুলো সড়ক ও জনপদ (সওজ) এর রিপেয়ারিং (সিল) কার্যক্রম চালু থাকলেও দুর্নীতির কারনে সেগুলো টিকছে না। ফলে লোক দেখানো এই সংস্কারে একদিকে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টিতেই মহাসড়ক জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ছোট বড় গর্তের। এ প্রসঙ্গে বগুড়া সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান জানান, একটি প্রকল্প তারা হাতে নিয়েছেন। বর্ষা শেষ হলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। আপাতত ইট এবং পাথর দিয়ে সংস্কার (সিল) করা হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে যত সিল করাই হোক তার কোন স্থায়িত্ব নেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি গর্তগুলো পুরন করে দিতে। রংপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়া মিলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতি হয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্থ মাহাসড়ক মেরামতে ঠিকাদার নিয়োগ প্রায় চুড়ান্ত। ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দও রয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা জানান, মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে ঝুকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। গাইবান্ধা জেলায় সড়ক ও সেতু বিভাগের ২৪০ কি.মি. মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা চাপড়িগঞ্জ থেকে সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপের হাট পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কি.মি মহাসড়ক ঈদুল আযাহার আগে মেরামত করে চলাচল এর উপযোগী করা হলেও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের ফলে আবারও খানা খন্দে ঝুকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এই মহা সড়কের পার্শ্বে গোবিন্দগঞ্জ, বালুয়া , পলাশবাড়ি ও ধাপেরহাট বন্দর এলাকায় প্রায় ৬ - ৭ কি.মি রাস্তায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে গাইবান্ধা- রামচন্দ্রপুর-নাকাইহাট-বড়দহো সেতু হয়ে গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক পর্যন্ত ১৮ কি.মি সড়কের ভাঙ্গা চোরা অবস্থা থাকায় এই আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝুকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। গাইবান্ধা সাদুল্যাপুর উপজেলার ১০ কি.মি এই সড়কটি শরু হওয়ার ফলে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারনে প্রতিনিয়তেই সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এই রাস্তাটি জরুরি স¤প্রসারন করা প্রয়োজন। অপরদিকে গাইবান্ধা জেলায় বন্যায় ৪৯ কি.মি মহাসড়ক ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। সাময়িক ভাবে এ সব রাস্তা চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলে আবারও বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। সড়ক বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী জানান ইতিমধ্যে গাইবান্ধার সড়ক বিভাগের মহা সড়কের অংশ চার লেনের অনুমোদন হয়েছে। তবে গাইবান্ধার প্রায় ৫৫ কি.মি সড়ক পুরোটাই পূণ: নির্মান করতে হবে। তা না হলে বছর ফিরতেই এসব সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, উত্তরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে মহাস্থান সেতু। তিনটি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ছয় দশকের পুরনো সেতু এটি। মূল কাঠামোর মাঝের অংশে দেখা দিয়েছে বড় ফাটল। ফাটল এড়িয়ে যান চলাচলের জন্য সেতুর ওপরেই স্থাপন করা হয়েছে বেইলি ব্রিজ।
ভুক্তভোগিরা জানান, সেতুটির ১২০ মিটার অংশ পার হতেই সময় লাগছে দেড়-দুই ঘণ্টা। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াতে দীর্ঘ যানজটে পড়ছে যাত্রীরা। বগুড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মহাস্থান সেতুতে চলতি বছরের ৯ আগস্ট ফাটল দেখা দেয়। এরপর সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রেখে ওপরে নির্মাণ করা হয় একটি বেইলি ব্রিজ।
অপরদিকে, ঢাকা-রাজশাহী রুটের অন্তত ৫০ কিলোমিটার রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে বেরিয়ে এসেছে কাদামাটি। গর্তে পানি জমে সড়কের ওপর তৈরি হয়েছে ছোট ছোট পুকুর। নাটোর-বনপাড়া সড়কের ১৫ কিলোমিটার, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া সড়কের ১৮ কিলোমিটার, হাটিকুমরুল-পাবনার নগরবাড়ী ঘাট, যমুনা সেতুর পশ্চিমে নলকা, ধোপাঘাটা ও হাটিকুমরুল এলাকায় সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৭২ কিলোমিটারের অধিকাংশই ভাঙা। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশে ৪৫ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থান ভেঙেচুরে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্তত ২০টি স্থানে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। উঠে গেছে পিচ ও পাথর। ওই ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় অর্ধেক অংশ ভাঙাচোরা। এসব স্থানে বহু গর্ত তৈরি হয়েছে। ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কেরও বেহাল দশা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব এলাকার বাইরেও নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, নোয়াখালী, ফেনী, ল²ীপুর, চাঁদপুর, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। কোনো কোনো সড়কে যানবাহন আর চলতেই পারছে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় এসব জেলাকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। সওজের একজন প্রকৌশলী জানান, ইতোমধ্যে দেশের সব জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীকে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে বর্ষা শেষ না হলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা যাবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
নিজাম ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৫:৫৯ পিএম says : 0
কবে যে এই সড়ক মহাসড়কগুলো ঠিক হবে ?
Total Reply(0)
আজাদ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৬:০০ পিএম says : 0
শুধু বড় বড় ভাষণই শুনি। রাস্তার তো সেরকম উন্নতি দেখি না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন