স্পোর্টস ডেস্ক : ইউরোপিয়ান ঘরোয়া লিগ ফুটবলে পরশু গেছে ঘটনাবহুল এক রাত। লা লিগায় এস্পানিওলের মাঠে বার্সেলোনার ঐতিহাসিক ড্রয়ের রাতে ঘরের মাঠে জয় পেতে বেশ কয়েকটি দাঁত হারিয়েছেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চিলিয়ান ডিফেন্ডার ডিয়াগো গদিন। প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুল-টটেনহ্যাম ম্যাচটি হয়েছে নাটকীয় ড্র। আর সেরি আ’তে সোসুলোকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় জুভেন্টাস।
সপ্তাহ দেড়েক আগে কোপা দেল রে’র প্রথম লেগে নগর প্রতিদ্ব›দ্বী এস্পানিওলের মাঠ থেকে হেরে এসেছিল বার্সা। এদনিও কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় আর্নেস্তো ভালভার্দের দলকে। তুমুল বৃষ্টি সেই পরীক্ষাকে আরো কঠিন করে তোলে। তাছাড়া প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি, ইভান রাকিটিস ও জর্ডি আলবাকে বেঞ্চে বসিয়েই একাদশ সাজান ভালভার্দে।
এরপরও প্রথমার্ধে এদিয়ে যেতে পারত বার্সা। কিন্তু ফিলিপ কুতিনহোর দুরপাল্লার শট বার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। ৫৯তম মিনিটে মাঠে নামেন মেসি। এর সাত মিনিট পর স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন জেরার্ড মোরেনো। খানিক বাদে মেসির মাপা ফ্রি-কিক থেকে হেডের মাধ্যমে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন জেরার্ড পিকে।
ম্যাচ জুড়েই পিকের নামে দুয়ো দিতে থাকা এস্পানিওল দর্শকদের স্তব্ধ করে দলকে একটি রেকর্ডেরও সাক্ষি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। এর মাধ্যমে এক মৌসুমে টানা ২২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ক্লাব রেকর্ড গড়ে বার্সা। ২০০৯-১০ মৌসুমে পেপ গার্দিওলার বার্সা অপরাজিত ছিল মৌসুমের শুরু থেকে টানা ২১ ম্যাচ। এখন তাদের সামনে সুযোগ ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের টানা ২৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার লিগ রেকর্ড ভাঙ্গার।
একই রাতে পরের ম্যাচে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বর দল ভ্যালেন্সিয়াকে ঘরের মাঠে অ্যাঞ্জেল কোরেররার গোলে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে ৯ পয়েন্টে নামিয়ে আনে দুইয়ে থাকা অ্যাটলেটিকো। তবে এজন্য চড়া মুল্যও দিতে হয়েছে ডিয়েগো সিমিওনের দলকে। ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক নেতোর সঙ্গে ভয়ানক সংঘর্ষে বেশ কয়েক দাঁত হারাতে হয়েছে অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডার গদিনকে। ৫১তম মিনিটে নেতোর কনুই লাগে চিলিয়ান সেন্টার ব্যাকের মুখে। সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত মুখে মাঠ ছাড়েন গদিন। অথচ বল থেকে অনেক দুরে ছিলেন গোলরক্ষক নেতো। এরপরও পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। রাগে ক্ষোভে সিমিওনে তাই ম্যাচ শেষে বলেই ফেলেন, ‘গদিনের এই কান্ডে যদি পেনাল্টি না দেন তাহলে তারা আমাদের কাউকে মেরে ফেললে তার পরেই কি পেনাল্টি পাব।’ এর খানিক পর আরেক ডিফেন্ডার স্টেফেন সাভিচকেও হ্যামিস্ট্রিং চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। তবে ঠিক কতদিনের জন্য তারা মাঠ ছেড়েছেন তা ডাক্তারি রিপোর্ট থেকে জানা যাবে বলে জানান সিমিওনে।
প্রায় একই সময়ে চলা আনফিল্ডের ম্যাচটি নাটকীয় ড্র হয় ২-২ গোলে। ম্যাচের শুরুতে মোহমেদ সালাহর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক লিভারপুল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগে ওয়ানিয়ামার গোলে সমতায় ফেরে টটেনহ্যাম। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আবারো দলকে এগিয়ে নেন সালাহ। কিন্তু তখনও নাটকীয়তার পুরোটাই বাকি। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি পেয়ে যায় সফরকারীরা। তা থেকে হ্যারি কেনের গোলে আবার সমতায় ফেরে টটেনহ্যাম। এই গোল নিয়ে অবশ্য লিভারপুলের অভিযোগের শেষ নেই। কেনের সেই ফাউলকে ‘ডাইভ’, সঙ্গে ‘অফসাইড’ বলে অভিযুক্ত করেন দলটির ডিফেন্ডার ফন ডিক।
এদিকে একই রাতে ঘরের মাঠে সোসুলোকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছিল জুভেন্টাস। দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক করেন দলের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার গঞ্জালো হিগুয়েইন। প্রথমার্ধে চার গোলের দুইট ছিল মিডফিল্ডার সামি খেদিরার, একটি করে অ্যালেক্স সান্দ্রো ও মিরালেম জানিকের। তবে পরের ম্যাচে বেনেভেন্তোকে ২-০ গোলে হারিয়ে আবারো শীর্ষস্থান দখলে নেয় নাপোলি। ২৩ ম্যাচ শেষে টানা ছয়বারের চ্যাম্পিয়নদের চেয়ে এক পয়েন্টে এগিয়ে নাপোলি (৬০)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন