রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

হাজীগঞ্জে পরিত্যক্ত ভবনেই দিনের পর দিন চলছে ক্লাস

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) থেকে কামরুজ্জামান টুটুলঃ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ৬৯নং সাদ্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নে সাদ্রা হামিদীয়া ফাজিলা মাদ্রাসার দেয়াল ঘেঁষে গড়ে উঠো বিদ্যালয়ের প্রথম ভবনটি বহু আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেছে কর্তৃপক্ষ। পরের ভবনটি বহু আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেছে আর এই পরিত্যাক্ত ভবনেই দিনের পর দিন ক্লাস চলছে। পুরো বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ১শ ৭ জন এর জন্য শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। ৭ জনের মধ্যে সরকারী শিক্ষক রয়েছে ৫ জন আর ন্যাশনাল সার্ভিসের ২জন। সরকারী ৫ জনের গত বছর থেকে মধ্যে ১ জন রয়েছেন ডেপুটেশনে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি চলছে ২০১৩ সাল থেকে। একদিকে দিন দিন শিক্ষাথী কমছে অপরদিকে পরিত্যাক্ত ভবনে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান দিয়ে চলছে বিদ্যালয়, শিক্ষক রয়েছে ডেপুটেশনে এইসব মিলিয়ে বিদ্যালয়টির অবস্থা লেজেগোবরে বলে ইনকিলাবকে জানান স্থানীয়রা।
বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালের দিকে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পূর্বের পরিত্যাক্ত পাকা ভবনের পশ্চিম পাশে নতুন আরেকটি ভবন পূনঃ নির্মান করা হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৫ সালে পূনঃনির্মানকৃত ভবনটি ্ও বহু আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেছে কর্তৃপক্ষ । তাই বাধ্য হয়ে পরিত্যাক্ত ভবনেই অফিস কক্ষ ও সকল শ্রেনীর ক্লাস নেয়া হচ্ছে। ভবনের অবস্থা যেমনি ঠিক তেমনি ফার্নিচারের একই অবস্থা। ক্লাস চলাকালে মাঝে মধ্যে দেয়ালের বা ছাঁদের পলেস্তার ঘসে পড়ার ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ দিন সকালবেলা বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেখা যায় ছাঁদের পলেস্তার খসে ফ্লোরে পড়ে থাকে। বর্ষাকালে চারপাশের দেয়ালসহ ফ্লোর, ছাঁদ ভিজে স্যাঁত স্যাঁতে হয়ে থাকে।
বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, অনেক দিন হয়েছে প্রধান শিক্ষকপদ শূন্য রয়েছে। ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব করছেন হাছান মিজি। চলিত শিক্ষাবর্ষের সকল শ্রেনীতে শিক্ষার্থীর সর্বমোট সংখ্যা ১শ ৭ জন। এই ১শ ৭ শিক্ষার্থীর জন্য সরকারী শিক্ষক রয়েছে ৫ জন। ৫ জনের মধ্যে রুখসানা নাজনীন নামের এক শিক্ষার্থী ডেপুটেশনে রয়েছেন চাঁদপুরে। আর গত বছরের শেষের দিকে ন্যাশনাল সার্ভিস থেকে দেয়া হয়েছে ২ জন।
বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়ের আশেপাশে মাদ্রাসা ও বেশ কয়েকটি কেজি স্কুল রয়েছে। এই বিদ্যালয়টি থেকে অনেক বেশী শিক্ষার্থী রয়েছে ঐ সকল কেজি স্কুলগুলোতে ও মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখায়। বিদ্যালয়ের পরিচালনা আর কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে বিদ্যালয় থেকে দিনে দিনে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ১শ ৭ জন শিক্ষার্থী এটা কিভাবে সম্ভব বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঐ সকল অভিভাবকগন।
প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মো. হাছান মিজি অভিভাবদের অভিযোগ মিথ্যে বলে জানান, আমি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থী খুঁজে এনেছি আর বছরের শুরুতে মাইকিং করিয়েছি। আর ভবনের বিষয়ে আমি চাহিদা পত্র অনেক আগেই পাঠিয়েছি এটা স্যাররা ও জানেন। ভবনের পুরো সম্পত্তি বিদ্যালয়ের দখলে রয়েছে বলে হাছান মিজি নিশ্চিত করেন।
পরিত্যাক্ত ভবনের বিষয়ে উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. ফুয়াদ হাছান ইনকিলাবকে জানান, উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত ভবন রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২/৩ অবস্থানে রেখে সাদ্রা সপ্রাবি ভবনটির তালিকা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। জুনে প্রকল্প আসার কথা রয়েছে।
পরিত্যাক্ত ভবনে ক্লাস হচ্ছে, নতুন ভবনের জন্য চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আনতে মাইকিংসহ নানান কর্মসূচী রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে এমনটি স্বীকার করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (রান্ধুনীমূড়া ক্লাষ্টার) মিজানুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয়া শুরু হলেই ঐ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দেয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম ইনকিলাবকে জানান,ঐ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি চলছে আর নতুন ভবনের জন্য মাননীয় এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে নতুন ভবনের জন্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন