শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সুদের জালে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত

| প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা:
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় বিভিন্ন সমিতির আড়ালে সুদের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। কথিত এইসব সমিতি থেকে উচ্চসুদে ঋণ নিয়ে স্বালবম্বী হওয়ার পরিবর্তে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গত ১২ মার্চ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এইসব অবৈধ সমিতির সুদের কারবার বন্ধের দাবি উঠেছে।
বগুড়া জেলার উপজেলাগুলোর মধ্যে দুপচাঁচিয়া একটি উল্লেখযোগ্য। ব্যবসা-বাণিজ্য সমাদৃত এই উপজেলায় কর্মসংস্থানের যেমন বিভিন্ন পন্থা রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিশাল এক বেকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী। কর্মহীন অস্বচ্ছল দরিদ্র এই জনগোষ্ঠী নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করছে। আর এর সুযোগ গ্রামের অর্থলোভী ব্যক্তি প্রকাশ্যে বিভিন্ন সমিতির নামে শুরু করেছে দাদন ব্যবসা। তারা গ্রামে পুরুষদের পাশাপাশি অসহায়, অসচ্ছল নারীদেরকে সুকৌশলে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা আনার প্রলোভন দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য করছে। এই সব সমিতির নেতারা সদস্যদের কাছে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে জমজমাট সুদের ব্যবসা করছে। আবার কেউ সুদাসলে টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে জোরপূর্বক তাদের কাছে থেকে ফাঁকা ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে তাদের কাছে থেকে চারগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সমিতির নিজস্ব দালাল রয়েছে। দালালদের কাজ হলো গ্রামের কোনো সাধারণ মানুষের আর্থিক সঙ্কট রয়েছে এমন মানুষ খুঁজে সমিতির কাছে নিয়ে আসা ও চড়া সুদে ঋণ পাইয়ে দেয়া। উপজেলার এই দাদন ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত এলাকাগুলো হলো- দুপচাঁচিয়া সদরের ধোকরকলা, সুখানগাড়ী, বম্বপাড়া, লক্ষীতলা, ছোট ধাপ বাজারদীঘি, কাটাগাড়ি, গুনাহার ইউনিয়নের তালুচ, হাঁপুনিয়া, পাঁচোষা, ছাতনী, বেড়াগ্রাম, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সাহারপুকুর, চৌমুহনী, আলতাফনগর, জিয়ানগর ইউনিয়নে জিয়ানগর বাজার তালোড়ার গায়বান্দা উল্লেখযোগ্য। এই সব গ্রামের দাদনব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকেই পথে বসেছে। দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণে কিস্তি পরিশোধ করতে হয় দুই থেকে তিন কিস্তিতে। কিস্তি আদায়ের দিনে দাদন ব্যবসায়ীদের হাতে অপমানিত হওয়ার ভয়ে অনেকেই হয় বাড়ি ছাড়া। শুধু এখানেই শেষ নয়, ঋণ আদায়কারী প্রয়োজনে কিস্তি প্রদানে ব্যর্থ ব্যক্তির বাড়ি থেকে থালা বাটি, ঘরের চালের টিন মূল্যবান জিনিসপত্র ইত্যাদি জোর করে কেড়ে নিয়ে যাওয়ার নজিরও রয়েছে। অনেকেই আবার অপমানের জ্বালায় দুঃখে আত্মহননের পথ বেছেও নিয়েছে। সমাজের প্রভাবশালীরা এই সব অবৈধ সমিতির কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় সাধারণ মানুষ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে গত ১২ মার্চ সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় আলোচনা হয়। সভায় উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম, গোবিন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ মনোয়ার হোসেন হেলাল, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামে সমিতির আড়ালে এই সব দাদনব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন