বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

মহানবীর সা. ধারাবাহিক জীবনী

| প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইমাম বোখারী নাফে-এর মাধ্যমে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. একটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, মুতার যুদ্ধের দিনে হযরত জাফর শহীদ হওয়ার পর আমি তার দেহে আধাতের চিহ্নগুলো গুণে দেখেছি। তাঁর দেহে তীর ও তলোয়ারের পঞ্চাশটি আঘাত ছিলো। এ বস আঘাতের একটিও পেছনের দিকে ছিলো না। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি মুতার যুদ্ধে মুসলমানদের সঙ্গে ছিলাম।
জাফর ইবনে আবু তালেবকে সন্ধান করে নিহতদের মধ্যে পেয়ে যাই। তাঁর দেহে বর্শ ও তীরের ৯০টিরও বেশী আঘাত দেখেছি। নাফে থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, ইবনে ওররের বর্ণনায় এও আছে যে, আমি এসকল জখল লক্ষ্য করেছি তাঁর সম্মুখভাগে।
বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের মাধ্যমে হযরত জাফর রা. এর শাহাদাত বরণের পর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহা রা. পতাকা গ্রহণ করে ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে সামনে অগ্রসর হন। কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর তিনি এ কবিতা আবৃত্তি করে,
‘ওরে মন খুশী বেজার যেভাবে হোক
মোকাবেলা কর। যুদ্ধের আগুন জ্বেলেছে ওরা
বর্শা রেখেছে খাড়া। জান্নাত থেকে
কেনরে তুই থাকতে চাস দূরে?’
এরপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা. বীর বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকেন। তাঁর চাচাতো ভাই গোশতে লেগে থাকা একটা হাড় তাঁর হাতে দেন। তিনি এক কামড় খেয়ে ছুঁড়ে ফেলেন। এরপর লড়াই করতে করতে তিনি শাহাদত বরণ করেন।
আল্লাহর তলোয়ার
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহার শাহাদাতের পর বনু আযলান গোত্রের ছাবেত ইবনে আরকাম নামক একজন সাহাবী পতাকা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, হে মুসলমানরা, তোমরা উপযুক্ত একজনকে সেনাপতির দায়িত্ব দাও। সাহাবার ছাবেতকেই সেনাপতির দায়িত্ব নিতে বললে তিনি বলেন, আমি একাজের উপযুক্ত নই। এরপর সাহাবার হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ রা.-কে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। তিনি পতাকা গ্রহণের পর তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। সহীহ বোখারীতে স্বয়ং খালেদ ইবনে ওলীদ রা. থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, মুতার যুদ্ধের দিনে আমার হাতে ৯ টি তলোয়ার ভেঙ্গেছে। এরপর আমার হাতে একটি ইয়ামেনী ছোট তলোয়ার অবশিষ্ট ছিল। অপর বর্ণনায় তার যবানীতে এভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, আমার হাতে মুতার যুদ্ধের দিনে ৯ টি তলোয়ার ভেঙ্গেছে এবং একটি ছোট সাইজের ইয়েমেনী তলোয়ার অবশিষ্ট ছিল।
এদিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রণক্ষেত্রের খবর লোক পৌঁছার আগেই ওহীর মাধ্যমে পান। তিনি বলেন, যায়েদ পতাকা গ্রহণ করেছিলেন, তিনি শহীদ হন। এরপর জাফর পতাকা গ্রহণ করেছিলেন তিনি শহীদ হন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের চোখ এ সময় অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, এরপর পতাকা গ্রহণ করেন আল্লাহর তলোয়ারসমূহের মধ্যে একটি তলোয়ার। তাঁর যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জয়যুক্ত করেন।
আর রাহীতুল মাখতুম, মূল : আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, অনুবাদ: খাদিজা আখতার রেজায়ী

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন