মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কালিগঞ্জে তালের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) থেকে রবিউল ইসলাম : কালিগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় তাল রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। গ্রীষ্মেও গরমে মনকে সতেজ, ঠান্ডা আর ঘুম আনতে তালের রস বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার কালিগঞ্জ বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলী গাজী গত কয়েকদিন ধরে ৮/১০টি তাল গাছ থেকে তালের রস সংগ্রহ করে রাস্তার ধারে বসে গøাস প্রতি ৫ টাকা করে বিক্রয় করতে শুরু করেছে। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় করছে বলে তিনি জানান। এছাড়া কালিয়াকাপুর, মৌতলা, রতনপুর, খানপুর, নলতা, তারালীয়া, কুশলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এই সকল এলাকার গাছিরা তাল গাছে বাঁশ বাধা শুরু করেছে। যাতে তাড়াতাড়ি তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে পারে। তালগাছি মোহাম্মাদ আলী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তালের রস থেকে গুড় সংগ্রহ করে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর সেগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রয় করা হয়। প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও বিকালে তিন ধাপে তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া তালগাছে গুলি (রসের পাত্র) পেতে রাখার সময় তাল গাছের মৌচা বা খাদি সামান্য অংশ কেটে ফেলতে হয়। যে তাল গাছে তাল ধরে না তাকে জটা তালগাছ বলে। সাধারণত জটা গাছ ও যে গাছে তাল ধরে উভয় প্রকার তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। এই বিষয় একাধিক গাছিদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, গরম যত বেশি হবে তাল গাছের রস তত বেশি হবে। তারা আরও জানান, প্রতিদিন দুদলীয়া, রায়পুর, ফরিদপুর মোড়ে তারা তালের রস বিক্রয় করেন। অভয়তলা গ্রামে রাস্তার ধারে হাবিবুর রহমান গাছির সাথে কথা বলার সময় কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেল থামিয়ে তাল রস পান করেন। তাদের অভিব্যক্তি জানতে চাইলে তারা জানান, এখানকার তাল রস ভেজাল মুক্ত, সতেজ, মিষ্টি ও সুস্বাদু। এই বিষয়ে গাছি আরো বলেন, গরমের শুরুতে আমি ৯টি তালগাছ পরিষ্কার করে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করি। বর্তমানে ৯ টি গাছ থেকে কম বেশি রস পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি তাল গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ লিটার রস পাওয়া যায়। আমি প্রতিদিন দুপুর ও সন্ধ্যায় কালিয়াকাপুর বাজারে প্রতি গøাস রস ৫ টাকা করে বিক্রয় করি। প্রতিদিন সব মিলে প্রায় ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার রস বিক্রয় করে থাকি।
কিন্তু রাতের তালের রস দিয়ে আমরা গুড় তৈরী করে থাকি। ১ নং কৃঞ্জনগর ইউনিয়ান পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জানান, এই এলাকায় এক সময় তালের রসের খ্যাতি থাকলেও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তালের রস ও গুড়। কয়েক বছর আগেও এলাকার বিভিন্ন ক্ষেতের আইলের পাশে, রাস্তার দুই ধারে ছিল অসংখ্য তালগাছ। তাল গাছ সারা বছর অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকলেও গ্রীষ্মেও মৌসুমে কদর বেড়ে যায়। অনেকাংশে তালের রস সুস্বাধু ও মানব দেহের উপকারি তার কারণে মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় এই তালের রস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন