দেশ রাজনীতি শূন্য হয়ে পড়েছে বললে বোধ হয় বাড়িয়ে বলা হবে না। এই রাজনীতি শূন্যতায় নানামুখী সংকট ও সমস্যা ঘনিভ‚ত হচ্ছে। মানুষ উদ্বিগ্ন ও হতাশ। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হতে চলল প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে বিজয়ী সরকারের শাসনে। ক্রমান্বয়ে দেশ এক আতংকের জনপদে পরিণত হচ্ছে। ভয়ের সংস্কৃতি গোটা দেশকে গ্রাস করছে। খুনের ভয়, গুমের ভয়, ধর্ষণের ভয়। কখন যে কাকে গুম বা খুন হতে হয় তার ঠিক নেই। কালো আইনের কথা নাই বা বললাম। সাংবাদিক সমাজ ৬ দফা দাবি নিয়ে ডিজিটাল আইনের সংশোধনে আন্দোলনরত। নানা দিক দিয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের পাশাপাশি মামলা-হামলার ভয়তো লেগেই আছে। পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য মানুষকে ভীত, সন্ত্রস্ত্র ও দিশেহারা করে রেখেছে। এই ভয় থেকে সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, এমন কি ছাত্রছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না। ১৮ এপ্রিল ৫৬ শতাংশ কোটার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে থেকে তিনজনকে চোখ বেঁধে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। তাদের ধরে নেয়ার খবরে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ^বিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা মিছিল বের করে। অন্যোন্যাপায় হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তিন ছাত্রের পেছনে বিশাল ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন থাকায় তারা রক্ষা পেয়েছে। সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক কর্মীরা প্রায়ই নিখোঁজ হচ্ছেন, যাদের কারো লাশ পাওয়া যাচ্ছে, আবার কারো লাশও পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে শত শত মানুষ গুম-খুনের শিকার হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
এক অবর্ণনীয় ভীতিকর অবস্থার মধ্যে পড়ে মানুষ দুঃসহ জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এমন এক ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে যে, মানুষ চোখের সামনে অপরাধ সংঘটিত হওয়া দেখেও প্রতিবাদ করছে না বা করতে পারছে না। মানুষ অসহায়ের মতো সব কিছু প্রত্যক্ষ করছে। কিন্তু সাহস করে প্রতিরোধ বা প্রতিবাদে এগিয়ে যাচ্ছে না। পুলিশের তরফ থেকে হুমকি ধামকি ও চাঁদা দাবিরও কোন সুরাহা হচ্ছে না। ধরে নিয়ে গিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবির কথা মিডিয়ার কল্যাণে মানুষ জানতে পারছে। কিন্তু প্রতিকার পাবার সমস্ত পথ বন্ধ থাকায় প্রতিকার চাওয়ার কথা মানুষ ভুলে গেছে। ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাÐে মানুষ ত্যাক্ত-বিরক্ত। তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাÐে জড়িয়ে পড়ছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশের লোক, সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রভৃতি শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের হাতে অহরহ নির্যাতিত ও নিগৃহীত হচ্ছে। গত ১৭ ফেব্রæয়ারি চট্টগ্রামে ইউনাইটেড কোচিং সেসন্টারের মালিক রাশেদ মিয়াকে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ১৩টি চড় মারে। বেচারা নুরুল আমিন নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য করজোরে কাকুতি-মিনতি জানাচ্ছে। মানুষ ফেসবুকের কল্যাণে এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করছে। রাশেদ মিয়া এজাহারে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবিতে তাকে চড় মারার কথা বলেছে। শুধু নুরুল আমিন নয়, দেশের আনাচে-কানাচে কত নুরুল আমিন যে এসব অপকর্ম করছে তার ইয়ত্তা নাই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধ বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। তবে বিচার যে হচ্ছে না তা নয়। বিরোধীদলের নেতাকর্মী হলে রক্ষা নাই। পান থেকে চুন খসলেই মামলা-হামলা ও গুম-আতংক জেঁকে বসবে। নির্যাতন কাকে বলে ও কত প্রকার পুলিশ বাহিনী দেখিয়ে দিচ্ছে। দেশের দুঃসহ অবস্থার কথা বিএনপি চিৎকার করে বললেও সরকার কান দিচ্ছে না। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠন, বিভিন্ন দাতা দেশ ও গণতান্ত্রিক বিশ^ থেকে বার বার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, স্বৈরশাসন প্রভৃতি বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় গবেষণা সংস্থা সিপিডি ১৭ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, দেশের ব্যাংক খাত এখন বিকলাঙ্গ, ২০১৭ সাল ছিল ব্যাংক লুটের বছর। আর্থিক খাতের সাথে সামাজিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার সত্য ঘটনাকে মিথ্যা ও মিথ্যা ঘটনাকে সত্য হিসেবে দেখাতে ব্যস্ত।
ইলিয়াস আলী গুমের ছয় বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত দেশের মানুষ ও তার পরিবার জানতে পারেনি, তিনি বেঁচে আছেন না মরে গেছেন। ১৭ এপ্রিল গুম হওয়ার ৬ষ্ঠ বার্ষিকীর মিলাদ মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বিএনপিকে নির্মূল করতে চাচ্ছে। দলের নেতাকর্মীদের নামে ৭২ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। আসামীর সংখ্যা ১৭ লাখ। অজ্ঞাত আসামী বলে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম সত্য বলেছেন। আসামীর তালিকা এত দীর্ঘ যে, যে কাউকে গ্রেফতার করতে পুলিশের কোন বাধা নেই। গ্রেফতার করে থানায় নিতে পারলেই মোটা অংকের টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। আগেই বলেছি, ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে। মামলা, হামলার ভয়ের সাথে ক্রস ফায়ারের ভয়তো লেগেই আছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা আতংকে দিনাতিপাত করছে। আমি রাজনৈতিক কারণে জয়পুরহাট বসবাস করছি। বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে দেখছি পুলিশের বাড়াবাড়ি। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও বাধা দিচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে চিকন গলির মধ্যে বিক্ষোভ, মানবন্ধন প্রভৃতি কর্মসূচি পালন করছি। পুলিশ যেন চাচ্ছে তাদের ডিঙ্গিয়ে আমরা গলি থেকে বেরিয়ে এসে কর্মসূচি পালন করি। এতে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া, লাঠি চার্জ ও ধাওয়া করা সহজ হবে। আর পরে সুবিধামত সাজিয়ে-গুছিয়ে মামলার জালে জড়িয়ে বাণিজ্য করা যাবে। দেশের ভয়াবহ ও গণতন্ত্রহীনতা অবলোকন করে দেশের জ্ঞানী, গুণী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সোচ্চার হচ্ছেন। গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় আহবায়ক রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে ২০ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ সংবিধান বিধৃত আকাক্সক্ষা, বিদ্যামান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে আক্ষেপ করে বলেছেন ‘সরকার নিজেদের কায়দামত তথাকথিত সংসদ, তথাকথিত নির্বাচন ও তথাকথিত গণতন্ত্র বানিয়েছে। সরকার সরাসরি মিথ্যাচার করে বলছে এগুলো গিলে নেন। দেশের মানুষকে ছাগল ভাববেন না, এটা বোকাদের দেশ না।’ ঐ নাগরিক সংলাপে বিকল্প ধারা সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা বলেন, ‘সরকার সত্য শুনতে ভয় পায়। তাই সভা সমাবেশের অনুমতি দেয় না। দেশ দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। মন্ত্রীরা একে স্পিড মানি বলেন।’
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ কখনো কখনো মুখ ফসকে ভালো ভালো কথা বলেন। সম্প্রতি খুলনা, রংপুর ও চট্টগ্রামে জনসভায় তেমনই বলেছেন। চট্টগ্রামে তিনি বলেন, ‘দেশে এখন আর নির্বাচন হয় না, শুধু সিল মারা হয়। সুশাসনের ‘স’ও নাই, কখন কে গুম হবে, কে খুন হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে আমাকে আর স্বৈরাচারী বলবেন না। বর্তমান সরকারকে আন্তর্জাতিক স্বৈরাচারী ঘোষণা করা হয়েছে।’ তিনি সত্য কথা বলেছেন, তবে দায় এড়িয়ে গেছেন। স্বৈরাচারী সরকারের পার্টনার জাতীয় পার্টি। সরকারে তার দলের তিনজন মন্ত্রী বহাল তবিয়তে আছেন এবং তিনি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। মন্ত্রীর পদ মর্যাদা ভালো লাগে কিন্তু স্বৈরাচারের অপবাদের অংশীদার হতে চান না। বর্তমান সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাচারের স্বীকৃতি দেয়ায় সরকারের অংশীদার হওয়ায় তিনি দ্বিতীয়বার স্বৈরাচার খেতাবপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১০ টাকা চাল না দেবার ব্যর্থতা, ঘরে ঘরে চাকরি দেবার ব্যর্থতা, নারী-শিশু ধর্ষণ প্রতিরোধের ব্যর্থতা, শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি, নির্বাহী বিভাগ কারও কথা শোনে না প্রভৃতি ক্ষেত্রে এরশাদ সাহেবের আক্ষেপ আমাদের ভাবিত করে। বিশে^র কোথাও সরকারি দল ও বিরোধীদল মিলে সরকার গঠন করে না। তিনি তাই করে বিশে^ উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তবে আক্ষেপ করে জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য বললেও তার কথার মধ্যে সত্যতা আছে। দেশ আজ মহা সংকট ও দুর্যোগে পড়েছে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
মার্কিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ গুম-খুন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে। ২০১৭ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিরপত্তা বাহিনীর বিচার-বহির্ভূত হত্যা, গুম, বেআইনী আটক ও নির্যাতন প্রভৃতি মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে। এখানে কথা বলার অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক কর্মকাÐ ও এনজিওদের তৎপরতার সুযোগ সীমিত। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিচারহীনতার কারণে নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতার অপব্যাবহর করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার বা হত্যাকাÐের ব্যাপারে সরকার খুব কমই তদন্ত করছে ও আইনের আওতায় আনছে। জনগণ আস্থাহীনতার কারণে পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকছে। আমাদের কথাগুলোই যেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। হত্যা, গুম, বেআইনী আটক, নির্যাতন-নিপীড়ন বাংলাদেশে নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। মার্কিন প্রতিবেদনে বেগম জিয়ার বিচার নিয়েও মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু রাজনৈতিক কারণে সাজা দেয়া হলে তা হবে আইনের শাসনের পরিপন্থী। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রত্যাশার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। চীনও আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হোক প্রত্যাশা করেছে। বিশে^র নতুন পাঁচ স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। ১২৯টি দেশে গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি এবং সুশাসনের অবস্থা নিয়ে এক সমীক্ষার পর জার্মান প্রতিষ্ঠান বেরটেলসম্যান স্টিফটুং তাদের রিপোর্টে এ মন্তব্য করেছে। রিপোর্টে ১২৯টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশে এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং ৭১টি দেশে গণতন্ত্র চালু আছে। ২০১৬ সালের আগের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, বিশে^র ৭৪টি দেশে গণতন্ত্র এবং ৫৫টি দেশে স্বৈরশাসন চালু আছে। বাংলাদেশে স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদÐ পর্যন্ত মানা হচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ বস্তুত একদলীয় কর্তৃত্বে বা শাসনে চলছে। স্বৈরতান্ত্রিক বা কর্তৃত্ববাদী শাসককে কারও কাছে দায়বদ্ধ থাকতে বা জবাবদিহি করতে হয় না। সমর্থন আদায়ের জন্য জনগণের নিকট যেতে হয় না। জনগণের চাহিদা, প্রত্যাশা, লাভ লোকসান, আপত্তি-অনাপত্তি কোনকিছু বিবেচনায় নেয়া হয় না। বাংলাদেশে এর অনেক উদাহরণ রয়েছে। জনগনের শত বাধা উপেক্ষা করে সরকার কাজ করছে। দেশে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দেশ-বিদেশের সকল গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ, রাষ্ট্র, সংস্থা ও সংগঠন থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। ৫ জানুয়ারির কলঙ্ক ঢাকতে হলে একটা ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠান আবশ্যক। বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠান অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বীকৃতি পাবে না। বিএনপি নির্বাচনে আসতে উন্মুখ হয়ে আছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে অবশ্যই যাবে। তার জন্য কিছু কাজ করে সরকারকে দেখাতে হবে যে, সে সত্যিই বিএনপির অংশগ্রহণ চায়। মির্জা সাহেব যৌক্তিক তিনটি শর্ত দিয়েছেন- (১) বেগম জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। (২) সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, (৩) লেভেল প্লেয়িংফিল্ড তৈরি করে সেনাবাহিনী নিয়োগ দিতে হবে ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। এ লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনা দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে। বিএনপি মহাসচিবের প্রতিটি শর্ত যৌক্তিক ও যেসব মেনে নেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চরিত্রের বিপরীতধর্মী যে পরিবেশ বর্তমানে বাংলাদেশে বিরাজমান, তার নিরসন জরুরি হয়ে পড়েছে। সকলের জন্য সমতল মাঠ সৃষ্টি করলে স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অপবাদ কিছুটা হলেও ঘুঁচবে। সেনাবাহিনী নিয়োগের বিষয়টি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবি। এমন কি সরকারের অংশীদার জাতীয় পার্টি থেকেও এ দাবি করা হচ্ছে। সরকার সেনা নিয়োগে কেন, অনাগ্রাহী দেশের মানুষ তা বোঝে। ড. কামাল হোসেনের ভাষায়, ‘মানুষকে ছাগল ভাববেন না। এটা বোকাদের দেশ নয়।’ যাতে নির্ভয়ে মানুষ নিঃশঙ্কচিত্তে ভোট কেন্দ্রে যেতে ও নিজের ভোটটি নিজে দিতে পারে তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
লেখক: প্রফেসর (অব.) দর্শন বিভাগ ও সাবেক ডিন, কলা অনুষদ, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন