শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বার্সা-রিয়ালের ভিন্ন অভিজ্ঞতা

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্পোর্টস ডেস্ক : এল ক্ল্যাসিকো মহারণের পর পরশু রাতে আবার মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। রাতটা দুই দলের জন্য হয়ে রইল অ¤ø-মধুর। ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে বার্সা অপরাজিত চ্যাম্পিয়নের পথে আরো একধাপ এগুলেও সেভিয়ার মাঠে ৩-২ গোলে হেরে গেছে রিয়াল।
বার্সার টানা ৪৩তম লিগ ম্যাচ জয়ের দিন ন্যু ক্যাম্পে দুর্দান্ত খেলা উপহার দেয়া উসমান ডেম্বেলে করেন জোড়া গোল। একটি করে গোল করেন ফিলিপ কুতিনহো, পাওলিনহো ও লিওনেল মেসি। আর রোমান সানচেস পিজুয়ান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় সেভিয়া-রিয়াল ম্যাচের স্কোরলাইন জমজমাট লড়াইয়ের কথা বললেও আদতে ম্যাচটা তেমন ছিল না। ম্যাচের ৮৬তম মিনিট পর্যন্তও ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক সেভিয়া। শেষ সময়ে ব্যবধান কমান বোর্জা মায়োরাল ও সার্জিও রামোস।
রামোসের জন্য রাতটা ছিল অদ্ভুদ এক অভিজ্ঞতার। দল যখন ২-০ গোলে পিছিয়ে তখন সাবেক দলের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেন রিয়াল অধিনায়ক। ম্যাচের শেষভাগে দেখেন হলুদ কার্ড। এর খানিক পর তার আত্মঘাতি গোলেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সেভিয়া। লা লিগার রামোসের আত্মঘাতি গোল মোট দুটি। দুটিই তার শৈশবের ক্লাব সেভিয়ার বিপক্ষে। এছাড়া এদিন প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই ম্যাচে পেনাল্টি মিস ও আত্মঘাতি গোলের রেকর্ড গড়েন রামোস। কিন্তু এমন রেকর্ড গড়ে নিশ্চয় ভালো লাগেনি স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাকের। ম্যাচ শেষে সেটাই জানান কোচ জিনেদিন জিদান, ‘সে খুশি মনে মাঠ ছাড়েনি এবং সেটাই স্বাভাবীক।’
সেভিয়ার জয়ের এই সুযোগটা অবশ্য জিদান নিজেই তৈরী করে দেন। লা লিগার শিরোপা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে আগেই। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চার থেকে ছিটকে যাওয়ারও সুযোগ নেই। তাছাড়া সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ম্যাচ। মৌসুমে সম্ভব্য একমাত্র শিরোপা নিশ্চিত করতে নিয়মিত খেলোয়াড়দের তাই বাড়তি সুরক্ষা দিতেই হত। সেটাই করেছেন জিদান। ক্ল্যাসিকো ম্যাচের সাতজনকে দেয়া হয় বিশ্রাম। সেই সুযোগে প্রথমবারের মত রিয়ালের মূল একাদশে সুযোগ পান জিদানপুত্র লুকা জিদান। কেইলর নাভাসের পরিবর্তে গোলপোস্ট সামলান তিনি।
সুযোগটা কাজে লাগায় সেভিয়া। প্রথমার্ধে তারা এগিয়ে ছিল বেন ইয়াদের ও লুইস মুরিয়েলের গোলে। ৮৪তম মিনিটে আসে রামোসের সেই আত্মঘাতি গোল। এর তিন মিনিট পর ব্যবধান কমান মায়োরাল। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করে স্কোরলাইন ‘ভদ্রস্ত’ করেন রামোস।
জিতলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে টপকে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে যেত রিয়াল। তা না হওয়া নগর প্রতিদ্ব›দ্বীর চেয়ে ৩ পয়েন্ট চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী বার্সার চেয়ে ১৮ পয়েন্ট পিছিয়ে তিনেই থাকতে হচ্ছে লস বø্যাঙ্কোসদের। ৯০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বার্সা শিরোপা নিশ্চিত করেছে আরো দুই ম্যাচ আগে। লেগানেস ও রিয়াল সোসিয়াদাদের বিপক্ষে বাকি দুই ম্যাচ না হারলেই ৩৮ ম্যাচের লা লিগার ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি গড়বে বার্সেলোনা। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে শেষবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে তখন লিগ ছিল ১৮ ম্যাচের।
ন্যু ক্যাম্পে পরশু বড় জয় পেলেও একক আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি বার্সা। আক্রমণে এগিয়ে ছিল ভিয়ারিয়ালই। কিন্তু গোছালো আক্রমণে এগিয়ে ছিল বার্সা। গোল বরাবর মোট ছয়বার শট নেয় কাতালানরা, এর মধ্যে পাঁচবারই জাল খুঁজে পায়। পাাঁচটি গোলই ছিল দলের খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত বোঝাপড়ার ফল।
প্রথম গোলে অবদান যতটা না কুতিনহোর, তার চেয়েও বেশি ডেম্বেলের। একক প্রচেষ্টায় তিন-চারজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে শট নিয়েছিলেন ফরাসি তরুণ ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষক রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল সহজেই জালে পাঠান কুতিনহো। দ্বিতীয়ার্ধের শেষভাগে করা বার্সার গোল দুটিও করেন ডেম্বেলে। মেসি-রোনালদো যুগের পর বিশ্বকে মাতাতে যে তিনি প্রস্তুত তার প্রমাণ দিয়েছেন ম্যাচের শেষ গোলের মাধ্যমে। ডি বক্সের মাঝ বরাবর বেশ কয়েকজন ডিফেন্ডারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে চিপ শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন ২০ বছর বয়সী তরুণ।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে রক্ষণের মাথার উপর দিয়ে ইনিয়েস্তার উড়িয়ে দেয়া সোজাসুজি পাস ভলির মাধ্যমে করা মেসির গোলটিও ছিল দেখার মত। দুর্দান্ত বোঝাপড়া না থাকলে এমন গোল করা যায় না। এমন অনন্য সুন্দর গোল দেখার পর ইনিয়েস্তার কথা ভেবে মন খারাপ হতেই পারে। মাঝমাঠের এই কারিগরকে যে সামনের মৌসুম থেকে আর বার্সার জার্সিতে দেখা যাবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন