শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

খুচরা বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ: সীতাকুণ্ডেসবজির ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষক

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে শেখ সালাউদ্দিন | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন সবজির উৎপাদন বেশ ভাল হয়েছে। তবে পাইকারী বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও রমজানকে পুজিকরে খুচরা দোকানিরা ক্রেতাদের কাছ থেকে ইচ্ছে মত দাম নিয়ে আঙ্গুল ফুলে অনেকে কলাগাছ হচ্ছে বলে ক্ষোভ বাজারে আসা একাধীক ক্রেতাদের। মুরাদপুর ইউনিয়নের আবুল কাসেম, পৌরসদরের বটতল এলাকার এক প্রবিণ ক্রেতা নজির মিয়াসহ অনেকে অভিযোগ করেন কাঁচা বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রন নেই। তাই খুচরা দোকানীরা প্রতিটি সবজিতে কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০টাকা করে বেশি নিচ্ছে। যা সাধারণ ক্রেতাদের ভাবিয়ে তোলছে। কিন্তু কৃষক সারাবছর মাঠে ময়দানে মাথার ঘাম পায়ে ফেলেও বিভিন্ন সবজির চাষকরে চলেছে। অভিযোগে জানা যায় মহোন্তেরহাট, বড়দারোগারহাট, বাড়বকুন্ড, শুকলালহাট, কুমিরাসহ উপজেলার অনেক হাটে কৃষকদের অধিক উৎপাদিত সবজি যখন সাপ্তাহিক হাঁটে নিয়ে আসে কৃষক, তখন এক ধরনের পাইকার তাদের কাছথেকে খুব কমদামে সবজি ক্রয় করে বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছে। ফলে সারা বছর সবজি চাষকরে যে লাভের কথা ভাবে কৃষক তা আর হয়ে উঠেনা। অথচ যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলের সবজি দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সবজির চাহিদা মিটিয়ে আসছে। এদিকে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগরের বেড়িবাঁধ এলাকার পুরানো এক কৃষক মোঃ আলি জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমিতে ফসল উৎপাদন করেন তিনি। এবছর মার্চ মাসের শেষে অন্তত ৫একর জমিতে ছোট শশার চাষ করেছেন। এতে তার শেষ পর্যন্ত খরচ পড়বে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। বাজার দর ভাল থাকলে তিনি কমপক্ষে ৮ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি আরো বলেন, একটি সিন্ডিকেট ৫৫ টাকার সবজি ৪০ টাকা করে মুলায়। কাঁচা মাল পঁচে যাওয়ার ভয়ে কম দামে পাইকারদের কাছে বিক্রিকরে দেই। শুধুু তাইনয় ১০০কেজি সবজি বিক্রি করলে ৮০ কেজির টাকা পাওয়া যায়। আর বাকি ২০ কেজি বিভিন্ন উযুহাতে বাদ দিয়ে দেয় পাইকার সিন্ডিকেট। একই ইউনিয়নে দায়ীত্বে থাকা উপসহকরী কৃষি কর্মকর্তা জ্ঞান রঞ্জণ নাথ বলেন এখানকার কৃষি পরিবার রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে জমিতে ফসল ফোলায়। কিন্তু সে সবজি যখন বিক্রির উদ্দেশ্যে হাঁটে নিয়ে আসেন তখন তারা সবজির প্রকৃত মুল্য পায়না। সরেজমিনে মহোন্তের হাঁট, বড়দারোগারহাঁট, কুমিরাসহ বিভিন্ন হাঁট বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় কৃষকদের কাছ থেকে কমদামে সবজি ক্রয়করে খুচরা দোকানীরা তা দ্বিগুন দামে সবজি বিক্রি করছে। কিন্তু এ অভিযোগ পুরো অস্বীকার করলেন খুচরা দোকানী তসলিম। তিনি বলেন আমরা দাম বেশি নিচ্ছিনা। কিন্তু উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজারে পাইকারী দামে কৃষক টমেটো বিক্রি করছে কেজি ২৫, আর খুচরা বাজারে ৪০টাকা, বেগুন ২৫ খুচরা বাজারে ৪০, ঢেঁড়শ ২৫, খুচরা বাজারে ৪০ তিতকরলা পাইকারীতে ২৫, খুচরা বাজারে ৪৫, চিচিংগা ৩০, খুচরা বাজারে ৫০, খিরা ও ছোট শশা পাইকারীতে ৪০ আর খুচরা বাজারে ৫৫ থেকে ৬০টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। সীতাকুণ্ড উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রনাথ বলেন, মৌসুমে বিভিন্ন রকম তাজা শাক-সবজি হাটে আসছে। চলতি বছরে সবজিতে পোকা মাকড়ের তেমন আক্রমন নেই। কিন্তু রমজানে পাইকারী বাজারে সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও খুচরা বাজারে দ্বিগুন। উপজেলার বড় দারোগারহাট থেকে শুরুকরে ফৌজদারহাট পর্যন্ত মাঠের পর মাঠ সবজির চাষ হয়েছে এবার।এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার সাফকাত রিয়াদ বলেন, চলতি মৌসুমে ১৩শ’ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ৫শ’কৃষক বিভিন্ন রকম সবজির চাষ করেছে। কৃষকরা সবজির ন্যায্য মূল্য পেতে আগে কৃষকদের এগিয়ে আসতে হবে।পাইকার কর্তৃক কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে ঠকানোর বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)মোঃ কামরুজ্জামান বলেন কৃষকরা এসব বিষয়ে অভিযোগ দিলে তা তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যাতে করে কেউ পবিত্র রমজানে কোনো পণ্যের দাম বেশি রাখতে না পারে।এছাড়া রমজানের শুরু থেকে হাঁট বাজারে মনিটোরিং চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন