এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী
মাহে রমজানের শেষ দশকের আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন : রমজান মাসের শেষ দর্শক শুরু হলেই রাসূলুল্লাহ (সা:) তাঁর কোমর শক্ত করে বাঁধতেন, এই সময়ের রাত গুলোতে জাগ্রত থাকতেন এবং তাঁর গৃহবাসী লোকদেরকে সজাগ করতেন। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
এই হাদীস হতে জানা যায় যে, রমজান মাসের শেষ দশক আসলেই রাসূলুল্লাহ (সা:) চূড়ান্ত মাত্রার ইবাদতের জন্য কোমর বাঁধতেন অর্থাৎ পূর্ব প্রস্ততি গ্রহণ করতেন। আর তিনি একাই ইবাদত-বন্দেগী করতেন এমনটি নয়, বরং নিজের গৃহবাসী আপন জনদেরকে রাত্রিকালে জাগ্রত থেকে ইবাদত করার জন্য প্রস্তত করতেন।
তিরমিজী শরীফে উদ্ধৃত হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) রমজান মাসের শেষ দশকে তাঁর ঘরের লোকজনদেরকে ইবাদত-বন্দেগীও নামাজ আদায়ের জন্য জাগ্রত করে দিতেন। হযরত আয়েশা (রা:)-এর অপর একটি বর্ণনায় আরও বলিষ্ঠ ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) রমজানের শেষ দশকে তাঁর ঘরের লোকদের মধ্যে রাত্র জাগরণ করে ইবাদত-বন্দেগী করতে পারে এমন কাউকেই ঘুমাতে দিতেন না। বরং প্রত্যেককেই জাগ্রত থেকে ইবাদত করার জন্য প্রস্তুত করতেন। (ওমদাতুলক্বারী, শরহে বুখারী)
আর বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান গ্রন্থে হযতর আনার্স (রা:) বর্ণিত একটি হাদীস উদ্ধৃত হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন : যখন কদর রাত্রি আসে, তখন হযরত জিব্রাঈল (আ:) ফিরিশতাদের বিরাট বাহিনী সমভিব্যাহারে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন এবং দাঁড়িয়ে কিংবা বসে আল্লাহর জিকির ও ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকা প্রত্যেক বান্দাহর জন্য রহমতের দোয়া করেন। এই হাদীস হতে কদর, রাত্রির মর্যাদা এবং এই রাত্রিতে ইবাদত বন্দেগী, কুরআন তিলাওয়ার নফল নামাজ ও ইসলামী আলোচনা ও জ্ঞান চর্চার মর্যাদা স্পষ্টভাবে জানতে পারা যায়।
রাসূলুল্লাহ (সা:) নিজেও তাঁর ঘরের লোকদেরকে এই রাত্রিটি যথাযথভাবে পাওয়ার জন্য রমজানের শেষ দশকের সব কয়টি রাত্রিই আল্লাহ পাকের ইবাদতে মশগুল হতেন ও মশগুল রাখতেন। এই রাত্রিটির বরকত ও ফজিলত যেন কোন প্রকারে হারিয়ে না যায়, ও ইহা হতে যেন বঞ্চিত থাকতে না হয়, এই উদ্দেশ্যেই তাঁর এই ব্যবস্থা ও প্রস্ততি ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করা সকল মুসলমানের জন্যই বাঞ্ছনীয়। এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার কোনই সুযোগ নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন