শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সাম্প্রদায়িকতা

তৈমূর আলম খন্দকার | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, বঙ্গোপসাগর থেকে জেগে উঠা বিরাট চর অর্থাৎ ব-দ্বীপের অংশই বর্তমান বাংলাদেশ। একটি ভূখন্ড, সাগরের বুক চিরে দ্বীপ জাগতে পারে, কিন্তু একটি জাতি শুধুমাত্র ভ‚খন্ডভিত্তিক গড়ে উঠে না। একটি ভূখন্ড ও একটি জাতি সত্ত্বা নিয়েই একটি জাতি প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতি সত্ত্বার নিজস্ব সংস্কৃতি যথেষ্ট গুরুত্ব লাভ করলেও সত্ত্বাটাই জাতির মূল। বিভিন্ন গোষ্ঠি, জাতি, উপজাতির বিভিন্ন সংস্কৃতি থাকতে পারে, কিন্তু এক ও অভিন্ন সত্ত্বা না হলে একটি জাতি গঠিত হয় না। কাগজে-কলমে একটি জাতি গড়ে উঠতে পারে, কিন্তু তাতে জাতিসত্ত্বার চেতনা পরিষ্ফুটিত হয় না।
বাঙালির বীরত্বগাঁথা অনেক ইতিহাস (যেমন ফকির ও কৃষক বিদ্রোহ, ফরায়েজী ও জিহাদ আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি) রয়েছে। কিন্তু সার্বিক ইতিহাস কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষ বাঙালির কর্মকান্ড জাতীয়তাবাদের পক্ষে নয় বরং বিশ্বাস ঘাতকতার খুবই নোংরা নজির হয়ে আছে।
অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, শুধু বাঙালি বা বাংলার ক্ষেত্রে নয়, বিশ্ব ইতিহাসে দেখা যায় ঈমানদারের চেয়ে বেঈমানের সংখ্যা বেশি, বিশ্বস্ততার পরিবর্তে বিশ্বাসঘাতকতার ঘটনা ঘটেছে অনেক, ত্যাগীর চেয়ে স্বার্থবাদী ও সুবিধা ভোগীদের সব সময়ই জয় হয়েছে বেশি। তবে সব জয়ই সম্মানের নয়। যেমন, মীর জাফরের হাতে সিরাজদৌল্লার পরাজয়ে মীর জাফর কলংকিত হয়েছে, সম্মানিত হয় নাই। কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদের হাতে হযরত হোসেন (রা.) পরাজয়ে বিশ্ব মুসলমানদের নিকট হোসেন (রা.) সম্মানিত হয়েছেন। বাংলাকে শাসন করেছে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং মুসলমানরা। যার যার নিজস্ব একটি সংস্কৃতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে চলছে ধার্মিক ও ধর্মনিরপেক্ষতা নামান্তরে নাস্তিকতার সংস্কৃতি। ধর্মনিরপেক্ষতার গান গাইতে গাইতে যখন ধার্মিকদের ‘বিশ্বাসের’ চাদরে হাত পড়ে যায় তখনই দেখা দেয় মতবিরোধ। তবে ধার্মিকরা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কারণ ধর্মের কথা বলতে গেলেই বলা হয় সম্প্রদায়িক। যেমনটি ঘটেছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের পরপরই। মোহাম্মদ আবদুল মান্নান স্বাধীনতার পরবর্তী সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে ‘আমাদের জাতি সত্ত¡ার বিকাশধারা’ বইতে (পৃষ্ঠা-১৯৩-১৯৪) লিখেছেন যে, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই বাংলার মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী সংগ্রামের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অর্জিত নিজস্ব বোধ, বিশ্বাস এবং জাতিগত চেতনা ও প্রেরণার ধারাটি পাল্টে দেয়ার জন্য তাদের জীবন থেকে নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ মুছে ফেলার বা জোর করে উৎখাত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর প্রথম ঈদুল আযহার প্রাক্কালে কোরবানীর বিরুদ্ধে একশ্রেণির হঠাৎ রঙপাল্টানো বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি প্রচার করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাস ধরে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে কুরআনের বাণী প্রচার করে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হলেও স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বেতারে কুরআন তেলাওয়াত, আসসালামু আলাইকুম, খোদা হাফেজ, প্রভৃতি বন্ধ করে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাসগুলির নাম থেকে মুসলিম শব্দ বাদ দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম এবং শিক্ষা বোর্ডের মনোগ্রাম থেকে কুরআনের আয়াত মুছে ফেলা হয়। সেখানে এ এলাকার জনগণের বোধ-বিশ্বাসের বিপরীতে মঙ্গল প্রদীপ প্রতিস্থাপন করা হয়। হাজী মুহাম্মদ মুহসিনের দানের টাকায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় কাজী নজরুল কলেজ। সীমাহীন হীনমন্যতার কারণে এই পরিবর্তনের সময় অর্থের তোয়াক্কা না করে কবি নজরুলের নামের শেষাংশের ইসলাম শব্দটিও বাদ দেয়া হয়। ইসলামের প্রতি অসহিষ্ণু একটি দৃষ্টিভঙ্গি হঠাৎ করেই এমনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে যে, দৈনিক পূর্বদেশের এক উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে সে সময়ে জুমার খুতবা ও নামায শেষে মুনাজাতে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখার অভিযোগ করা হয়। আযানের সময় কথাবার্তা বন্ধ রাখার ঐতিহ্য এখানে দীর্ঘদিনের। অথচ স্বাধীনতার পরপর বিভিন্ন জনসভায় বক্তৃতা চলাকালে মসজিদে আযান দিতে গিয়ে মুয়াজ্জিনগণ বাধাপ্রাপ্ত হন। বিভ্রান্তির সে চোরাবালিতে দাঁড়িয়েই দাউদ হায়দার রচনা করে মহানবী (সা.) এর বিরুদ্ধে এক চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ কবিতা। যে দেশের মুক্তিযোদ্ধারা আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে শক্রর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং তাদের মা-বোন তাদের সাফল্যের জন্য রোযা রেখে, নামাজ পড়ে দোয়া করেছে, এসব ঘটনা সেই জনগণের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলের নামে এভাবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আবেগ অনুভ‚তির প্রতি এবং তাদের সত্তার গভীরে প্রোথিত বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি আঘাত দেয়ার ফলে সৃষ্টি হয় জনমনে বিভ্রান্তি। দ্বাদশ শতকের সেন শাসিত বাংলাদেশে বৌদ্ধ-সভ্যতা নির্মূলের জন্য যে ব্রাক্ষণ্যবাদী আর্য আগ্রাসন চালানো হয়েছিল, কুড়ি শতকের বাংলাদেশের এসব ঘটনা মুসলিম সভ্যতা নির্মূলের জন্য তেমনি আরেকটা অভিযানের আলামত মনে করে জনচিত্ত দারুণভাবে আলোড়িত হলো।’
প্রসঙ্গটি এ কারণে আনা হলো যে, সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেয়া যায় না। যেমনটি প্রবাদ রয়েছে যে, স্বাধীনতার প্রাক্কালে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর অ্যাড. মোনায়েম খান তৎকালীন বুদ্ধিজীবিদের উদ্দেশ্যে নাকি বলেছিলেন যে, (কোন সূত্র নাই, তবে শোনা কথা) আপনারা রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারেন না? বুঝে না বুঝে হয়তো তিনি রবীন্দ্রনাথের নাম উল্লেখ করেছেন। কারণ রবীন্দ্রনাথ নিজে লিখলেই এটা রবীন্দ্রসংগীত, অন্য কেউ লিখলে সেটা সে লিখকের নামের সংগীত হবে। যেমন- নজরুল লিখিত সংগীতগুলি নজরুলসংগীত নামেই পরিচিত। আমার আলোচনা সেখানে নয়, বরং আমি স্পষ্ট আকারেই বলতে চাই যে, জোর করে কোন সংস্কৃতি মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না, যেমনটি হয়তো চেয়েছিলেন মোনায়েম খান। বর্তমানে যা করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন কোলকাতা মনস্ক নাস্তিক বুদ্ধিজীবীরা।
কোনো বাঙালি বাংলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে নাই তা জোর দিয়ে বলা যাবে না। এ মর্মে অনেক প্রমাণ দিয়েও শেষ করা যাবে না। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে অনেকের ফাঁসি হয়েছে। এ জন্য বাঙালিরাই ইংরেজদের সহযোগিতা করেছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি ছাত্র জনতার ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য গুলি বর্ষণের যে নির্দেশ দিয়েছিল তিনি ছিলেন ঢাকা জেলার বাঙালি পুলিশ সুপার বাহাউদ্দিন। বাংলাদেশের দুই জন প্রেসিডেন্টকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তারা। এখনো যারা জেনে শুনে বর্তমান সরকারকে তুষ্ট রাখার জন্য সরকার বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, জামিনের পর মিথ্যা মামলায় শোন-এরেস্ট করছে বা জেল গেইট থেকে গ্রেফতার করছে এবং রিমান্ড বাণিজ্য করছে তারাও বাঙালি। যে ম্যাজিস্ট্রেটরা পুলিশের এই বাণিজ্যে সহযোগিতা করছেন তারাও বাঙালি। মিথ্যা মামলায় কেন নির্দোষ ব্যক্তিদের নাজেহাল করা হচ্ছে এ মর্মে জিজ্ঞাসা করা হলে পুলিশ বলে উপরের নির্দেশে করছি। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের পুলিশও এ ধরনের জবাবই দিতো। ম্যাজিস্ট্রেট ও জজরা বলেন আমরা নিরুপায়। চাপের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন যে, নি¤œ আদালত মানেই আইন মন্ত্রণালয়। তার এ বক্তব্য যে শতভাগ সত্য এখন তারই প্রমাণ মিলছে। ফলে গণতান্ত্রিক অধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলতে যেয়ে দেশবাসী স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে কোথায়? এ দেশের মানুষ এখন আর মোগল, ব্রিটিশ, পাকিস্তান বা জমিদার শোষক শ্রেণির দ্বারা নির্যাতিত নয় বরং দেশে সরকারি চাকরিরত (একশ্রেণির পুলিশ/ম্যাজিস্ট্রেট তথা নি¤œ আদালতের বিচারক) সোনার ছেলেদের দ্বারা নির্যাতিত।
কোলকাতায় বাংলাদেশের অর্থে ভবন গড়ে উঠুক বা কারো কপালে ভাই ফোটা দেয়া হোক তাতে দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে মানুষকে সরানো যাবে না বা নতুন করে কোনো দেশ থেকে আমদানিকৃত সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দেয়া যাবে না। এ দেশের রাজনীতিকদের মনে রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের একটি মাইলফলক। ফলে যারা মনে মনেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনাকে লালন করেন তাদের জনগণ গ্রহণ করবে না। অন্যদিকে জোর করে শাসন ক্ষমতায় থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করার ছদ্মাবরণে যারা চেতনাবিরোধী কাজ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করছে, দেশ লুটে খাচ্ছে, বাকস্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার হরণসহ প্রতিপক্ষকে পুলিশী হয়রানি করে বিপর্যস্ত করছে তারাও জনগণের সমর্থন ও শ্রদ্ধা হারাচ্ছে। তবে এখন মানুষ প্রতিবাদ করতে পারছে না। যেমনটি পারে নাই ব্রিটিশ ও পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে, কিন্তু যখন বাঙালি স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হয়েছে তখন কেউ রেহাই পায় নাই।
নাস্তিকদের রাজনীতি এ দেশে চলবে না। কারণ উচ্চবর্ণের হিন্দু, হিন্দু জমিদার ও বৌদ্ধশাসকদের নির্মম অত্যাচার থেকে মুসলিম পীর-দরবেশ, সুফী-সাধকরা গরীব, কৃষক, খেটে খাওয়া দিন-মজুর বাঙালিদের রক্ষা করায় স্বেচ্ছায় তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। জোড়াসাঁকোর রবীন্দ্র পরিবারের প্রজানিপীড়ন করার সংবাদ কাঙ্গাল হরিনাথ তার সম্পাদিত গ্রামবার্তা পত্রিকায় প্রকাশ করায় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের (কবির পিতা) রোষানলে পড়েছিলেন। এ দেশে বেঈমানীর ইতিহাস অনেক দীর্ঘতম। আলীবোর্দী খান ১৭৪০ সালে শাসনক্ষমতা লাভ করার পর থেকে তাঁকে একদিকে ইংরেজ ও তাদের এদেশীয় কোলাবোরেটরদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়, অন্যদিকে বহিঃসীমান্তে মারাঠা-বর্গীদের সাথে লড়াই চালাতে হয়। এই দ্বৈত সংকটের সুযোগে ১৭৫৪ সালে ইংরেজরা কলকাতায় উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করে। ইংরেজ কর্মচারীদের তখনকার চিঠিপত্র থেকে দেখা যায়, মুসলিম শাসন ধ্বংসের ইঙ্গ-হিন্দু ষড়যন্ত্র তখন পরিণত পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। ১৭৫৬ সালে আলিবোর্দী খানের মৃত্যুর পর সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চরম সুযোগ উপস্থিত হয়। তারা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিখÐি হিসেবে বেছে নেয় মীর জাফরকে। ১৭৫৭ সালের ১ মে কলকাতায় ইংরেজ কমিটি তাদের বর্ণহিন্দু দালালদের সহায়তায় মীর জাফরের সাথে এগারো দফা চুক্তিপত্র সম্মাদন করে। সেই ষড়যন্ত্রমূলক এগারো দফা চুক্তির ভিত্তিতেই ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আমবাগানে যুদ্ধপ্রহসনের মধ্য দিয়ে নবাব সিরাজ উদ্দৌলার পতন হয়। সেই সাথে লুপ্ত হয় বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতা। পলাশীর এই যুদ্ধকে কোনো কোনো হিন্দু লেখক ‘দেবাসুর সংগ্রাম’ নামে অভিহিত করেছেন। এখানে ‘দেবতা’ হলেন ক্লাইভ আর ‘অসুর’ রূপে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ের শহীদ তরুণ নবাব সিরাজকেই চিহ্নিত করা হয়। পলাশীর শোকাবহ বিপর্যয়কে কলকাতায় ‘পলাশীর বিজয়োৎসব’ রূপে পালন করা হয় এবং দুর্গাদেবীর অকাল-বোধনের মাধ্যমে বসন্তকালীন দুর্গোৎসবকে শারদীয় দুর্গোৎসবরূপে পালন করে ক্লাইভকে দেবতুল্য সম্বর্ধনা দিয়ে বরণ করা হয়। (সূত্র: আমাদের জাতিসত্ত¡ার বিকাশধারা পৃষ্ঠা ২৫-২৬)
সাম্প্রদায়িকতাকে ইসলাম প্রশ্রয় দেয় না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিও এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। ইসলাম নিজেই একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্ম। শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে কাউকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার রেকর্ড ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনীতে পাওয়া যায় না। অথচ যারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে কথা বলে তাদের সাম্প্রদায়িক খেতাব দেয়া হয়। ‘ধর্ম’ কোন কারণেই কাউকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে না, এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ধর্মকে বাদ দিয়ে বা উপহাস করে যারা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠাতা করতে চায়, এটা তাদের মায়া কান্না ছাড়া আর কিছুই নয়। ধর্মই মানুষের জীবনের প্রধান সংস্কৃতি। বকধার্মিক নয়, বরং সৃষ্টিকর্তার নিকট জবাবদিহিতার মানসিকতাই একজন ধার্মিকের প্রধান পরিচয়, যা পরিষ্ফুটিত বা আলোকিত হবে নিজ কর্ম থেকে।
লেখক: কলামিস্ট ও আইনজীবী

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন