এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা দুই দিন ধরে আমরণ অনশন পালন করছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলকারীরা। আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিনে অংশগ্রহনকারী শিক্ষকদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। এর মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভুষণ রায় সহ গুরুতর অসুস্থ্য ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের রাস্তার ওপর অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। টানা আন্দোলনের পরও সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস না পেয়ে গত সোমবার থেকে আমরণ অনশন মতো কঠিন কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাকতা করে বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা বার বার রাজপথে নেমে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। নিজের ন্যায্য পাওনা আজও পাইনি। বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা মানবেতন জীবন যপান করছি। এমন জীবন আমরা চাই না। বাঁচলে বাঁচার মতো বাঁচবো নতুবা আন্দোলন করে রাজপথে জীবন দেব। তবুও দাবি আদায় ছাড়া রাজপথ পথ ছাড়বো না।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভুষণ রায় বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা ঢাকার রাজপথে ২৭বার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন এবং প্রতিবার শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে বার বার প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছেন, কিন্তু দাবি আদায় হয় নাই। এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিদিন এ আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। তাদের উপস্থিতিতে আমাদের ন্যায্য দাবির এ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আমরা ক্ষুধার জ্বালায় রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় ছাড়া আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো না। তিনি আরও বলেন, রাজপথে খোলা আকাশের নিচে রোদের মধ্যে ধুলাবালি, গাড়ির ধোঁয়া আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এতে যদি কোনো শিক্ষকের প্রাণ যায় তার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতির পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। বর্তমানে নীতিমালা, কমিটিসহ নানা আইন তৈরি করে এমপিওভুক্তি না করে আমাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। আমরা তা মেনে নেব না। কোনো নীতিমলার আওতায় আমাদের আনা যাবে না। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নতুন প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নীতিমালা কার্যকর করার দাবি জানান তারা।
আজ আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জসিম উদ্দিন আহম্মদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন