রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কলারোয়ায় অচল মিল থেকে চাল ক্রয়!

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ভাগ বাটোয়ারার চুক্তিতে কলারোয়ায় অচল রাইচ মিল থেকে চাল ক্রয় করা হচ্ছে। সিÐিকেটের মাধ্যমে উত্তর বঙ্গের চাল এনে অচল মিলের নামে গুদামে সরবরাহ করে প্রায় অর্থ কোটি টাকার বাণিজ্য শুরু হয়েছে। খাদ্য বিভাগের একটি সুত্র জানায়, বিধি অনুযায়ী যেসব রাইচ মিলে নির্দিষ্ট পরিসরের চাতাল, বয়লার, হাড়ি রয়েছে সরকার শুধু তাদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করে। চলতি মৌসুমে কলারোয়ায় ৬০৯ টন চাল কেনার জন্য ২৫ রাইচ মিলের সংগে চুক্তি করা হয়েছে। কিন্তু বিধি অনুযায়ী চাতাল বা বয়লার বা হাড়ি না থাকায় ১৫ মিল সরকারী গুদামে চাল সরবরাহের অযোগ্য।

সুত্র মতে, জনৈক মাহফুজের নেতৃত্বে ৫ মিল মালিকের একটি সিÐিকেট ভাগ বাটোয়ারার চুক্তিতে ১৫ অচল রাইচ মিলকে সরকারের চাল সরবরাহের যোগ্য হিসাবে তালিকাভূক্ত করে নেয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সরকারের পক্ষে এসব রাইচ মিলের কাছ থেকে চাল ক্রয়ের চুক্তি সম্পাদন করেছে। সরেজমিনে ২ নং খাদ্য গুদামের আনুঃ ১’শ গজ পূর্বদিকে রাস্তার পাশে হোসেন রাইচ মিলে দেখা যায়, হাড়ি বয়লার ভেঙ্গে তার উপর আগাছা জন্মেছে। মিলের চাতালের একাংশে ত্রিতল ভবন ও অপর পাশে টালী শেড নির্মাণ শুরু হয়েছে। বামনখালী জামান রাইচ মিলের হাড়িতে মরিচা পড়েছে, বয়লার বিনষ্ট এবং স্থানীয়রা ভাড়ায় চাতালে ধান শুকায়ে মিলে মাড়াই করে চাল নিয়ে বাড়ি ফিরছে। সংকীর্ণ ঘুপচির মধ্যে বামনখালী ফজলুল করিম রাইচ মিলে হাড়ি বয়লার চাতালের কোন অস্বিত্ব নেই বলে ফজলুল করিম স্বীকার করেন। কলারোয়া-সরসকাটি সড়কের পাশে বামনখালী বাজারে সিরাজুল রাইচ মিলে ছোট চাতাল থাকলেও হাড়ি বয়লারের কোন অস্বিত্ব নেই। ওফাপুর মোড়ে গাজনার লতিফ সানা রাইচ মিলে ছোট এক চিলতে ধান শুকানোর চাতাল ছাড়া হাড়ি বয়লারের অস্বিত্ব নেই। কলারোয়া-সরসকাটি রাস্তার পাশে গাজনা মাঠে সোনালী রাইচ মিলে সদ্য নির্মিত হাড়ি দেখা গেলেও বয়লার অকেজো এবং বিশাল চাতালে এলাকার লোকজন ধান শুকায়ে মাড়াই করে চাল নিয়ে বাড়ি যায় বলে উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক আহবায়ক সমরেশ ঘোষ জানান। এদিকে উপজেলা সদরের তুলসীডাঙ্গার সোহাগ রাইচ মিল ও ভাদিয়ালীর হক রাইচ মিলে বয়লার তো দূরের কথা চাতালের অস্বিত্ব নেই বলে এলাকাবাসি জানান। একাধিক নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, অচল মিল সহ তালিকাভূক্ত সিংহভাগ রাইচ মিলে বর্তমানে চাল উৎপাদন কার্যক্রম নেই।
সিÐিকেটের পক্ষ থেকে উত্তর বঙ্গের ৩০ টাকা কেজি দরের মোটা চাল এনে খাদ্য গুদামে ৩৮ টাকা দরে সরবরাহ করা হচ্ছে। ১ টাকা খরচ বাদে কেজি প্রতি ৭ টাকা মুনাফা অর্জন করে সিÐিকেট প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বাণিজ্য শুরু করেছে। কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান মতে, কলারোয়ায় চাষকৃত ১৩ হাজার ২০ হেক্টর বোরো ধানের মধ্যে মাত্র ১৪ হেক্টরে মোটা ধান চাষ হয়। কিন্তু খাদ্য গুদামে এপর্যন্ত ২৫০ টন মোটা চাল কেনার বিষয় খতিয়ে দেখলে থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সংগে সিÐিকেটের রফা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়। এব্যাপারে কথা বলার জন্য অফিসে যেয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে পাওয়া যায় নি। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিলের ফিটনেস তালিকা প্রস্তুত করেছে এবং সেই অনুযায়ী মিলগুলো থেকে চাল ক্রয় হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন