সিলেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা। মেয়র পদে জামায়াতের প্রার্থিতার সুবাধে কপাল খুলে গেছে এখন তাদের। প্রার্থিতা যাদুতে দীর্ঘ আত্মগোপন থেকে এখন তারা প্রকাশ্যে। নগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তারা ভোট কামনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দলীয় প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের জন্য। আগের মতো এখন আর পুলিশ দেখলে কেঁেপ উঠে না তাদের মন। ভয়ও উবে গেছে ধরপাকড়ের। পলায়ন, আত্মগোপন জীবন ডায়েরীর অতীত এখন। নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াত জানান দিতে চাচ্ছে তাদের শক্তিশালী অবস্থানের। মূল দুই রাজনৈতিক দলকে তারা তাদের সামর্থ্যরে জানান দিতে চায়। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে। তারাও প্রচার প্রচারনায় তুমুল ব্যস্ত। তবে এতো কিছুর পরও অন্য এক হিসাব কষছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ। তারা মনে করছেন নির্বাচন শেষ হবে। ভোটের ফলাফলে বেরিয়ে আসবে ওয়ার্ড ভিত্তিক জামায়াত শিবির সমর্থকদের পরিসংখ্যান। সেই পরিসংখ্যানে হয়তো আগামীর জন্য কাল হয়ে উঠতে পারে সাধারণ নেতাকর্মীদের জন্য। কারন এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে রাজনীতির মাঠে বন্ধুহীন হয়ে উঠবে জামায়াত। ঘরের বন্ধু বিএনপিকে যেমন হারাবে, সেই সাথে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিরোধীতা তো থাকছেই। একই সাথে সিলেটের কোন ছোট বড় ইসলামী কোন দলের সাথে নেই জামায়াতের বিশ্বাসযোগ্য সর্ম্পক। তাই একা পথ চলার খেসারত কি সামাল দিতে পারবে জামায়াত শিবিরের সাধারন নেতাকর্মী? সেই প্রশ্ন ঘুর পাক খাচ্ছে তাদের অনেকের মনে। স্থানীয় শীর্ষ নেতারা নানা লিয়াজোঁতে পার পেলেও সাধারণ নেতাকর্মীরা আশঙ্কা, আতঙ্কের বাইরে নয়।
সিলেট জামায়াত শিবিরের ঘাটি হিসেবে একটা পরিচয় রয়েছে। ভোটের হিসেবে সেই অঙ্ক ভুল হলে রাজপথের শক্তিতে তারা ছিল অদম্য। বুদ্ধিভিত্তিক রাজনীতিতে অনেক পরিপক্ক হলেও গণ মানুষের দল হয়ে উঠতে পারেনি জামায়াত। পরিচিতি থাকলেও সাধারণ মানুষের সমর্থন উল্লেখযোগ্য নেই জামায়াতের। সেকারনে হাতে গুনে বলা যেতে কোথায় কত ভোট রয়েছে জামায়াতের। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহনের পর জামায়াত শিবিরের সেই দিন এখন নেই। সরকারের জামায়াত শিবির বিরোধী ভূমিকায় তারা কোনঠাসা। ভেতরে ভেতরে জামায়াত শিবিরের সাথে সর্ম্পক থাকলেও প্রকাশ্যে ভিন্ন পরিচয়ে চলতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন তারা। কিন্তু এবার ২০ দলীয় জোটের বাইরে গিয়ে সিলেটে জামায়াত নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে সিলেট সিটি করপোরেশ নির্বাচনে। এর মধ্যে দিয়ে ২০ দলীয় জোটের ভাঙ্গন ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাড়িয়েছে। ভোট বিশ্লেষকরা মনে করে, জোটের ভোট বিভক্ত হওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয়ের পথ অনেকটা ত্বরান্বিত হয়ে উঠেছে। এতে করে বিএনপি জামায়াতের সর্ম্পক এখন কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ। সর্ম্পকের এমন অবস্থানে জামায়াত এখন না বিএনপির, না আওয়ামী লীগের । তবে কার্যত আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সুবিধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতের প্রার্থীতা। যদিও জামায়াত মনে করছে এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তাদের শক্তিশালী অবস্থান হিসেবে উঠে আসবে রাজনীতিক দলগুলোর কাছে।
এ ব্যাপারে সিলেট নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, জামায়াত বিভিন্ন সময় সিলেটকে তাদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে দাবি করেছে। এই নির্বাচন থেকেই বোঝা যাবে নগরীতে জামায়াতের কেমন ভোট রয়েছে
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন মনে করেন, অনেকে এটাও ধারণা করছেন, সুবিধাভোগীদের কাছ থাকে জামায়াত এমন কোন আশ্বাস পেয়েছে যাতে তাদের নিজেদের কোন লাভ হতে পারে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
একাধিক স্থানীয় বিশ্লেষক মনে করছে, জামায়াতের চলমান জাগরণের ইতি হয়ে যাবে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরেই। সময়ের এ ব্্্্্ুদ ব্ুদ দীর্ঘ কঠিন সংগ্রামে ফেলে দিবে বিশেষ করে সাধারণ নেতাকর্মীদের যাপিত জীবন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন