ভোটের নগরী বরিশালে এখনো ভোটারদের নিরবতা ভাঙেনি। স্বরব প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকদের নূন্যতম অবকাশের কোন সুযোগ নেই। দিনরাত প্রার্থী আর কর্মী-সমর্থকরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে। প্রচারনার জন্য রয়েছে মাত্র ৬টি দিন। আর এর প্রতিটি ক্ষণ গনণা করেই চলছে মেয়র ও বেশীরভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এমনকি মেয়র প্রার্থীদের জন্য ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা এসেও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার দ্বিতীয় দফায় দুদিনের সফরে বরিশালে আসছেন। আজ সকালের দিকে তিনি সব মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে মত বিনিময় সভার পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কেন্দ্রীক সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি আরো একদফা বরিশাল সফর করে ৩০জুলাই সিটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষে যথেষ্ঠ কঠোর বার্তা দিয়ে গেছেন। দ্বিতীয় দফার এ সফরে তিনি তার নির্দেশাবলীর সঠিক বাস্তবায়ন দেখতে চাইবেন বলে মনে করছেন নিবাচনী পর্যবেক্ষক মহল।
এদিকে ৩০জুলাই বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৩টি কেন্দ্র ভোট গ্রহণের লক্ষে বিশাল আইন-শৃংখলা বাহিনী মোতায়েনের সব পরিকল্পনা চুড়ান্ত করা হয়েছে। নগরীর ১২৩টি কেন্দ্রের সাড়ে ৭শ’ বুথে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এসব ভোট কেন্দ্রের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী ঝুকিপূর্ণ।
এদিকে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষে নির্বাচন কমিশনও প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ প্রক্রীয়া প্রায় শেষ করে এনেছে। তবে একটি বিশেষ মহল থেকে তাদের পছন্দের লোককে ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োগ দেয়র লক্ষে চাপ প্রয়োগ করা হলেও তা আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন।
এদিকে গতকালও মহাজোট প্রর্থী সাদিক আবদুল্লাহ, ২০দলীয় জোট প্রার্থী মুুজিবুর রহমান সারোয়ার, ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব ও জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস প্রচারণায় ছিলেন। প্রচারণায় আছেন বাসদ প্রার্থী ডা. মনষা চক্রবর্তিও। তবে জাপা প্রার্থী তাপসকে বসিয়ে দেয়া হতে পারে বা তিনি সেচ্ছায় নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে পারনে বলে নগরীতে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
মহাজোট প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ গতকালও নগরীর একাধীক ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে অংশ নেন।
এদিকে ২০দলীয় জোট প্রার্থী এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সারোয়ার গতকালও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি যেখানেই গেছেন, সেখানেই বিপুল সংখ্যক কর্মী সমর্থক তার সাথে ছিলেন। বেগম সেলিমা রহমানসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও সারোয়ারের পক্ষে গতকাল নগরীতে প্রচারণায় ছিলেন। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি সামসুজ্জামান দুদু গতকাল সকালে বরিশালে পৌছে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। তিনি বরিশালের নির্বাচনী পরিবেশকে একটি ‘গুমোট অবস্থা’ বলে বর্ণনা করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির দাবি করেছেন। তার মতে বেশীরভাগ ভোটারের মধ্যেই ভোট দেয়া সম্ভব তবে কিনা এমন প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচন কমিশনকেই ভোটারদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ ভাস্কর সাহা কলেজ মিলনায়তনে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং তার মঞ্চে উপস্থিত থাকার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের কৈফিয়তের জবাব দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন