শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিদ্রোহীদের ওপেন চ্যালেঞ্জ

চসিক নির্বাচন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহীদের সরাতে পারেনি সরকারি দল আওয়ামী লীগ। হাইকমান্ডের হম্বিতম্বি অনেকটা অসাড় প্রমাণিত হয়েছে। সিনিয়র নেতাদের হুমকি-ধমকি, চোখ রাঙানি আর কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিতেও পিছু হটেনি দল সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে নামা এসব নেতারা। গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষসময় পর্যন্ত নানা চেষ্টা তদবির চালিয়েও তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যায়নি। দলের সমর্থন বঞ্চিত হয়ে যে ১৮ জন কাউন্সিলর বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের কেউই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। হাতেগোনা কয়েকজন প্রার্থিতা তুলে নিলেও ৫৫টি কাউন্সিলর পদে শতাধিক বিদ্রোহী মাঠে রয়ে গেছেন।

একক প্রার্থী নির্ধারণে বেশ কয়েকদিন ধরে নানা চেষ্টা চলে আসছিল। নির্বাচনের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সমঝোতা বৈঠক করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। দলের মহানগর নেতারাও বিদ্রোহীদের দায় নেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের নেতাদের নিয়ে সার্কিট হাউসে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন তিনি।
তখন বৈঠকের বাইরে চলে বিতর্কিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের স্লোগান। বৈঠকে যোগদানকারী নেতাদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অনেকে। দল যাদের সমর্থন দিয়েছে তাদের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসসহ নানা অভিযোগ তুলে স্লোগান দেন তারা। এসময় প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, দলের জন্য কাজ না করে ভুয়া পদ-পদবী দেখিয়ে দলের সমর্থন ভাগিয়ে নিয়েছে অনেকেই। তাছাড়া সাংগঠনিক কাজসহ বিভিন্ন সময়ে অবদান রাখলেও দল তাদের মূল্যায়ন করেনি। তাই বাধ্য হয়ে তারা প্রার্থী হয়েছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, বৈঠক থেকে বিদ্রোহীদের দ্রুত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে বার্তা দেয়া হয়। তবে ওই বার্তা আমলে নেননি তারা। এরপর সেখান থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় হাজির হয়ে দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল হানিফ বিকেলের মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। তা না হলে রাজনীতির ভবিষ্যতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুঁশিয়ার দেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত এসব হুঁশিয়ারি কাজে আসেনি। বিদ্রোহীরা কাউন্সিলর পদে কাউকে একক সমর্থন না দিয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি তোলেন। জানা গেছে, সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা প্রার্থিতা ওপেন করে দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কেউ এ বিষয়ে বলতে রাজি হননি।

সার্কিট হাউসে সভা শেষে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ ব্যাপারে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। তিনি যেকোনো প্রয়োজনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে সংশোধন, সংযোজন, পরিবর্তন আনতে পারবেন। তার ওপর এ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। এছাড়া একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। প্রার্থীদের বিজয়ী করতে তারা যৌথভাবে কাজ করবেন।

তার আগে চট্টগ্রাম এসেই কাউন্সিলর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে কোন সমস্যা হবে না বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনেও অনেক প্রার্থী ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৭২ জনের মধ্যে কমতে কমতে মাত্র ১৫ জন বিদ্রোহী ছিল। এখানে আমি উদ্বেগের কোন কারণ দেখিনা। আস্তে আস্তে সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে বিদ্রোহীদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি দিদারুল আলম মাসুম প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়া জামালখান ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট এম এ নাছের, বিজয় কিষাণ, পতেঙ্গার জয়নাল আবেদীন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের, ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি সাবের আহমদসহ বিদ্রোহীদের প্রায় সবাই ভোটের মাঠে রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন