চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেনসহ নয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নৌকার প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী।
এরপর বিএনপি নেতাদের সাথে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ধানের শীষের প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে মেয়র পদে নয়জন, সংরক্ষিত ১৪টি নারী কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন এবং ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২২০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তফসিল অনুযায়ী ১ মার্চ মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই এবং ৮ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ভোটগ্রহণ ২৯ মার্চ।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়া উপলক্ষে নগরীর জুবিলী রোডে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের পদভারে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দলবল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসলেও সবাইকে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আচরণবিধি মেনে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মূল্যায়ন করেছেন। নগরবাসীও তাকে সমর্থন দেবেন। এ সময় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ছাড়াও নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিমের সাথে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামসহ নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের একচোখা নীতির কারণে মানুষ ভোটকেন্দ্র বিমুখ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসি ও সরকারের ইতিবাচক ভ‚মিকা প্রত্যাশা করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক ও নগর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ। এর আগে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা জান্নাতুল ইসলাম, ইসলামী ফ্রন্টের মাওলানা এম এ মতিন, ইসলামিক ফ্রন্টের মাওলানা মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, এনপিপির আবুল মনজুর, স্বতন্ত্র খোকন চৌধুরী ও মোহাম্মদ তানজীর আবেদীন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন ৫৮ জন প্রার্থী। ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২২০ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
১, ২, ৫ এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন করে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ জন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ জন, ৬, ৯, ১৫, ১৬, ১৭, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ৮, ১২, ১৪, ২৪, ৩২, ৩৬ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন করে। ৭, ১১, ১৯, ২৩, ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ১০, ১৮, ২০, ২২, ২৫ এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন করে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। ২১, ২৬ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ জন করে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এছাড়া ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। বেশিরভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। কয়েকটি ওয়ার্ডে বিএনপিরও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। বড় দুই দলের নেতারা বলেন, সমঝোতার মাধ্যমে শেষ সময়ে অনেকে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে দল সমর্থিত কাউন্সিলরের পক্ষে মাঠে নামবেন। এ লক্ষ্যে বিদ্রোহীদের মান ভাঙানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান নেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন