শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কারচুপির শঙ্কা

তিন সিটিতে নির্বাচনী উত্তেজনা

ফারুক হোসাইন : | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

প্রচার-প্রচারণা আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে, ভোটের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তির আশঙ্কা, আ.লীগের লোকজনকে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার করার অভিযোগ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ সংশয় ও অবিশ্বাস স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের

 


রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উৎসবমুখর পরিবেশেই তিন সিটিতে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছিল। তবে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যদিয়ে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নানান শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে এসব নগরীতে। সরকারি দলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক ও বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের গণহারে গ্রেফতারে খুলনা-গাজীপুর মডেলের নির্বাচন হবে এমন আশঙ্কাও বাড়ছে। খুলনা সিটি করপোরেশনে নিয়ন্ত্রিত নতুন মডেলে নির্বাচন হওয়ার পর গাজীপুরেও একই ধারা অব্যাহত রেখেছে ক্ষতাসীন দল এবং নির্বাচন কমিশন। ভোট চুরি, কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, বিরোধী দলের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়াসহ নানা অনিয়মের সমালোচনা করেছে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ও বিদেশী রাষ্ট্রগুলো। খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত এবং জনআস্থাহীন হয়ে পড়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন সিটির ভোট তাই প্রতিষ্ঠানটির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার পরও সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা নির্বাচন কমিশন আগের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠছে। খুলনা ও গাজীপুরের মতো এবারের নির্বাচনেও ভোটের আগে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা হবে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপির প্রার্থীরা। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, সংশয় ও শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরাও। তবে আওয়ামী লীগ বলছে খুলনা ও গাজীপুরের থেকে তিন সিটিতে বেটার নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করছেন।
তিন সিটির নির্বাচনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, গাজীপুর ও খুলনা নির্বাচন ভালো হয়েছে। এখন আমরা বলবো, এই তিন সিটিতে আরও ভালো নির্বাচন করবো। ভালো হলে আমরা কি সেখানে থেমে থাকবো? আমরা আরও ভালো করবো।
ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী ঘরানার লোকজনদের প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিলমারা ব্যালট ভোটকেন্দ্রে লুকিয়ে রাখা হতে পারে।
রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৯০ শতাংশ প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার আওয়ামী ঘরানার লোক থেকে বাছাই করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিলমারা ব্যালট ভোটকেন্দ্রে লুকিয়ে রাখা হতে পারে। তিনি বলেন, তারা (ক্ষমতাসীনরা) চেষ্টা করছে ভোটের আগের দিন প্রিজাইডিং অফিসারদের দিয়ে ভোট কেটে বিভিন্ন জায়গায় সেটা লুকিয়ে রাখা হবে (স্কুলের) হেডমাস্টারের রুমে বা এসিসট্যান্ট হেডমাস্টারের রুমে। এ কারণে ভোটকেন্দ্রের ওইসব জায়গায় সার্চলাইট বসানোর দাবি জানান বুলবুল। ধানের শীষের প্রার্থী নিরপেক্ষ লোকদের প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার করার দাবি জানানোর পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার বলেছেন, গাজীপুরে ও খুলনায় যে নির্বাচন হয়েছে তাতে আমি শঙ্কিত। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় এই সিটির আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। সেক্ষেত্রে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় থাকাটাই স্বাভাবিক। এছাড়া প্রশাসন যেভাবে আমাদের লোকজনকে হয়রানি করছে সেটি ভালো লক্ষণ নয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকছে না। সেই সঙ্গে ভোটাররা এখনও শঙ্কায় রয়েছেন। জনগণের মধ্যে যাতে শঙ্কা না হয় সে জন্য আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই। গাজীপুর-খুলনায় যে রকম করেছে আমাদের এখানেও সরকার সে রকম গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই নির্বাচনের দিন মাঠে সেনাবাহিনী থাকলে ভোটাররা শঙ্কামুক্ত হয়ে ভোট দিতে পারবেন।
একই ধরণের শঙ্কা প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, চলতি বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে এক ধরনের নতুন প্রবণতা তৈরি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রের বাইরে তেমন সহিংসতা নেই, কিন্ত নির্বাচনটি হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত। মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখছে যে, তার ভোট দেয়া হয়ে গেছে। আবার যে প্রার্থী এক লাখ বা দুই লাখ ভোট পাচ্ছেন তিনি এজেন্ট দিতে পারছেন না। তার মানে কী? সরকারি দল নির্বাচনে আগ্রাসী আচরণ করছে। কখনও রাতে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হচ্ছে, আবার কখনও দিনে শান্তিপ‚র্ণ ভোটের মধ্যে হঠাৎ পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে চলে যাচ্ছে। যা হচ্ছে তা সবই অপ্রত্যাশিত প্রবণতা। সামগ্রিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, সংশয় ও অবিশ্বাস থেকেই যাচ্ছে।
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই তিন সিটিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সর্বশেষ প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে এই তিনটি। তাই নির্বাচনটিকে গুরুত্বের সাথেই নিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। উভয় দলের অংশগ্রহণ, প্রচার-প্রচারণা, পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগসহ নানাকারণেই উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় হেভিওয়েট নেতারাও অংশ নিয়েছেন প্রচারণায়। ঘটেছে আচরণবিধি লঙ্ঘন, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশ লাঞ্ছিত করা, গণহারে গ্রেফতারও। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠেছে। অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপির প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করার ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডাররা ভোটারশূণ্য নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন মানেই ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, সিল মারা, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রের ভোট দেয়া, মৃত ব্যক্তি এসে ভোট দেয়া, প্রতিপক্ষের এজেন্ট ও সমর্থক ভোটারদের বাসা ও কেন্দ্র থেকে গুম করে অন্য জেলায় ছেড়ে দেয়া, নির্বিচারে গ্রেফতার করা, এজেন্ট বের করে দেয়া, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে কেন্দ্র থেকে ভোটারদের সরিয়ে দিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা, ভোট ডাকাতি, ছিনতাই করা, কেড়ে নেয়া, হরণ করা, ব্যাপকভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিন সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী গণহারে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে নেমেছে। দিন নেই রাত নেই এমনকি গভীর রাতে তোদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে তিন সিটিতে দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন দলটির নেতারা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সত্ত্বেও ফাঁকফোকর গলিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানির অভিযোগ উঠছেই। এসব বিষয়ে ইসির কোনো তৎপরতা নেই। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পক্ষ থেকে বলা হয়, ভোট সামনে রেখে তিন সিটিতে পুলিশ যেহারে গ্রেফতার করছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ফলে তিন সিটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এ অবস্থায় খুলনা ও গাজীপুরের মতো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হলে জাতীয় নির্বাচনে নেতিবাচক বার্তা দেবে।
তবে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে পুরোপুরিই নিরব। খুলনা ও গাজীপুরের মতো তিন সিটিতেই বিএনপির প্রার্থী কিংবা দলের পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ ও দাবি জানানো হয় তার কোনটিই আমলে নেয়নি কমিশন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা সব অভিযোগই সুরাহা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা। তাই এই নির্বাচনও খুলনা-গাজীপুরের মতো কারচুপির নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, আসন্ন তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপ‚র্ণ পরিবেশে হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ও সংশয় রয়েছে। এর কারণ হলো নির্বাচন কমিশন সবার জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারছে না। দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্ত এক্ষেত্রে কমিশন কারো বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে।
ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগ রাজশাহীতে প্রতিটি নির্বাচনী আরচণবিধি লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসের লিখিত অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পায়নি। নির্বাচন কমিশন এখন গৃহপালিত পশুর মতো, জন্তুর মতো আচরণ করছে। রাজশাহীর ভোটাররা যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি, ধামকি দেয়া ততই বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। পুরনো মামলায় গ্রেফতার, নতুন করে মামলা দেয়া, হামলা করাসহ নানা ভাবেই সতর্ক করিয়ে তাদের ভোটের মাঠ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। এসব দেখে বিএনপির মধ্যে ততই শঙ্কা বাড়ছে। ভোটগ্রহণ পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো কারণ দেখছে না দলটি। বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকদের পুলিশের হাতে গ্রেফতারের ভয় উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে যেকোনো ম‚ল্যে ভোটগ্রহণের দিন এজেন্টদের কেন্দ্রে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র মতে, গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে তিন সিটিতে ভিন্ন কৌশল নিয়েছে বিএনপি। সরকার ও প্রশাসনের কোনো কারসাজিতে দলীয় পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া ও কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করলে যেকোনো ম‚ল্যে তা প্রতিরোধ করা হবে। এ জন্য প্রতিটি কেন্দ্র পাহারার জন্য দলের নেতাকর্মীদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, খুলনা-গাজীপুরের মতো সিলেটে চলবে না। মরতে হয় মরবো কিন্তু ভোট কেন্দ্র দখল হতে দেবনা। তিনি বলেন, আমরা এবার বলছি, মরতে হয় মরবো কিন্তু ভোট কেন্দ্র (সেন্টার) ছাড়বো না। মরতে হয় মরবো কিন্তু ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটের বাক্স অন্য যায়গায় যেতে দেয়া হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য শেষ পরীক্ষা হবে। সুতরাং এই তিন সিটিতে কোনো ধরনের কারচুপি হলে সেটি প্রমাণ হবে যে, দলীয় সরকারের অধীনে মানুষ ভোট দিতে পারে না, নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। এখন দেখার বিষয় সরকার ও ইসি এ বিষয়ে কতটুকু আন্তরিক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো প্রমাণ করছে জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই সরকার সারা দেশে নির্বাচনের নামে জনগণকে তামাশা দেখাচ্ছে। আসলে এখন এটি আর সিটি নির্বাচন নয়, তামাশা তামাশা আর তামাশায় পরিণত হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীর এজেন্টদের গ্রেপ্তার, হামলা নির্যাতন ও নারীদের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন।
এরপরও বিএনপির অংশগ্রহণের ব্যাখ্যা তুলে ধরে দলটির নেতা বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতেই স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের অনিয়ম ও আচরণ লঙ্ঘনের অভিযোগ জানালে কমিশন বলে আমরা চেষ্টা করছি। চেষ্টা করা তো তাদের দায়িত্ব নয়। তাদের দায়িত্ব হলো নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পদক্ষেপ নেওয়া। সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যর্থতার জন্য তিনি কমিশনকে পদত্যাগ করারও আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করছে। আশা করি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয় হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Shahab Uddin ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৩:১০ এএম says : 0
We want to see last...
Total Reply(0)
Yeasin Mia ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৩:১১ এএম says : 0
বাংলাদেশে এখন আগের থেকে অনেক বেশি নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ন ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । মানুষ এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন এবং নিজের । কিন্তু একটা পক্ষ মানুষকে নির্বাচনে অংশ না নিতে উৎসাহিত করছে । সবার উচিৎ নির্বাচনে অংশগ্রহন করা ...।।
Total Reply(0)
Saifur Rahaman ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৩:১৩ এএম says : 0
কেন্দ্র দখল করে ভোট নিবে
Total Reply(0)
নাঈম ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৩:৩১ পিএম says : 0
এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন আশা করা বোকামি
Total Reply(0)
কবির ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৩:৩৪ পিএম says : 0
সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো প্রমাণ করছে জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই সরকার সারা দেশে নির্বাচনের নামে জনগণকে তামাশা দেখাচ্ছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন