বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

এবারো আশা নেই শ্যুটিংয়ে

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

কোন পদকের আশা নয়, আসন্ন এশিয়ান গেমসে আরচ্যারি মতো বাংলাদেশ শ্যুটিং দলেরও লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। আগামী ১৮ আগষ্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও পালেমবাং শহরে বসছে এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসর। এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া আসরে বাংলাদেশ অংশ নেবে ১৪টি ডিসিপ্লিনে। যার অন্যতম হচ্ছে শ্যুটিং। কমনওয়েলথ ও সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস থেকে লাল-সবুজের শ্যুটাররা একাধিকবার পদক জিতলেও এশিয়ান গেমসে এখনো তারা পদকশূণ্য। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই গেমস থেকে অতীতে কোন পদক না জিতলেও এবারও লাল-সবুজের শ্যুটারদের সেই আশা নেই। তাদের লক্ষ্য শেষ আটে খেলা। তাইতো প্রস্তুতির কোন ঘাটতি রাখতে চান না আবদুল্লাহেল বাকি-শাকিল আহমেদরা। গুলশান শ্যুটিং রেঞ্জে নিশানা ভেদ করায় ব্যস্ত বাকি আর পিস্তল হাতে অনুশীলনে বেশ মনযোগী শাকিল।
এবারের এশিয়ান গেমসে কাবাডি, ফুটবল ও হকির পরেই বাংলাদেশ থেকে বড় দল যাচ্ছে শ্যুটিংয়ের। ২১ সদস্যের দলে ১৬ জন শ্যুটার ও পাঁচ জন কোচ রয়েছেন। গেমসের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল মিশ্র দলগতে অর্নব শারার ও সৈয়দা আতকিয়া হাসান, ১০ মিটার এয়ার পিস্তল মিশ্র দলগতে নূর হাসান আলিফ, আরদিনা ফেরদৌস লড়বেন। পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্যক্তিগত ইভেন্টে আবদুল্লাহেল বাকি ও রিসালাতুল ইসলাম, মহিলাদের এই ইভেন্টে উম্মে জাকিয়া সুলতানা ও শারমিন আক্তার রতœা অংশ নেবেন। পুরুষদের ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে রবিউল ইসলাম ও শোভন চৌধুরী, পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে শাকিল আহমেদ ও পিয়াস হোসেন খেলবেন। মহিলাদের ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে সুরাইয়া আক্তার ও শারমিন শিল্পা এবং মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে খেলবেন আরদিনা ফেরদৌস ও আরমিন আশা। তবে কন্টিজেন্টে নাম থাকলেও বাবার অসুস্থতার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় যেতে পারছেন না লন্ডন প্রবাসী ট্র্যাপ শ্যুটার কাইসুর মিয়া। যদিও সর্বশেষ ইনচন এশিয়ান গেমসে খেলেছিলেন তিনি। দূরারোগ্য ব্যধি ক্যান্সারে আক্রান্ত কাইসুরের বাবা। তাই তিনি বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলতে যেতে পারছে না এবারের এশিয়াডে।
গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে পিস্তল ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিলেন শাকিল। এরপরেই ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে পদক জেতার লক্ষ্যে দু’জন নতুন বিদেশী কোচকে নিয়োগ দেয় ফেডারেশন। এরা হলেন- ডেনমার্কের হাই পারফরম্যান্স রাইফেল কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসেন ও মন্টেনেগ্রোর পিস্তল কোচ মার্কো সকিচ। যদিও ক্লাভস ক্রিস্টেনসেনের ২০২০ টোকিও অলিম্পিক এবং মার্কোর এ বছর পর্যন্তই চুক্তি ছিল। ক্লাভসের তত্বাবধানে গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে পদকের ধারাবাহিকতা ছিলেন আবদুল্লহেল বাকি। স্কটল্যান্ডের গøাসগোর পর অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডকোস্টেও ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রুপা জেতেন তিনি। তিনি একা নন, মার্কোর তত্বাবধানে গোল্ডকোস্ট থেকে ৫০ মিটার এয়ার পিস্তলে দেশকে দ্বিতীয় রুপা উপহার দেন শাকিল। তবে চুক্তি শেষ হলে মার্কোর সঙ্গে আর নবায়ন করেনি শ্যুটিং ফেডারেশন। তার জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয় আগে কাজ করা দক্ষিণ কোরিয়ান কিম কালইয়াংকে।
এশিয়ান গেমসে বিশ্বসেরা শ্যুটাররা অংশ নিয়ে থাকেন। তাই এখানে বাংলাদেশের প্রত্যাশা থাকলেও তা পূরণ হবার নয়। তাই ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদ অপু বলেন, ‘বিশ্ব শ্যুটিংয়ে এশিয়ানরাই প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে। চীন, কোরিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো দেশের শ্যুটাররাই বিশ্বসেরা। তারা সব দিক দিয়ে এগিয়ে। আর আমরা অলিম্পিকে খেলে থাকি ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে। তাই এশিয়ান গেমসে যদি পদক জিততে পারি, তাহলে অলিম্পিকেও আশাবাদি হতে পারি।’ এশিয়াডের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি নেই। তবে এ প্রস্তুতি হওয়া উচিত ছিল আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে। এশিয়ান গেমসের আগে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ছিল, যেখানে অংশ নেয়া উচিত থাকলেও আমরা নিতে পারিনি। আমাদের ট্রেনিংয়ের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তারা যদি বলে- প্রস্তুতির জন্য যত অর্থ প্রয়োজন নেন, কিন্তু দু’মাসের অনুশীলনে পদক এনে দেন- এটা কিন্তু সম্ভব নয়। বড় গেমসের ক্ষেত্রে প্রস্তুতিটা দীর্ঘমেয়াদী হওয়া প্রয়োজন।’ অপু আরো বলেন, ‘গত দু’বছর ধরে গোলাবারুদ আমদানী বন্ধ। সরকারী অনুমতি নেই। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেই। তাহলে কিভাবে পদক আসবে। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে তিন ইভেন্টে সেরা আটে খেলা।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন