উজবেকিস্তানের বিপক্ষে হার দিয়েই এবারের এশিয়াড শুরু বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২৩ জাতীয় ফুটবল দলের। গতকাল বিকালে ইন্দোনেশিয়ার পাকানসারি স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তান ৩-০ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। বিজয়ী দলের হয়ে ইউরিনবোয়েভ জাবিখিলো, খামদামভ দস্তনবেক ও আলিবায়েভেব ইকরমজন একটি করে গোল করেন। এটা উজবেকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়ান গেমসে হ্যাটট্রিক হার বাংলাদেশের। ২০১০ গুয়াংজু ও ২০১৪ ইনচনের পর একই ব্যবধানে জাকার্তা-পালেমবাং এশিয়ান গেমসেও হারলো লাল-সবুজরা।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাতœক ফুটবল উপহার দেয় উজবেকিস্তান। বলা যায় মধ্য এশিয়ার দেশটির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি লাল-সবুজরা। যেখানে ভুটানে বাংলাদেশ কিশোরী দল সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে দূর্দান্ত পারফরমেন্স করে শিরোপা জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে এশিয়ান গেমসের প্রথম ম্যাচে শ্রীহীন লাল-সবুজের পুরুষ অলিম্পিক দল।
ম্যাচে হারের ব্যবধানটা আরো বড় হতো যদি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা দুর্দান্ত না খেলতেন। তার অসাধারণ পারফরমেন্সেই বড় হারের লজ্জা থেকে বেঁচে যায় ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র দল। তিন গোল হজম করলেও রানা আরো অন্তত গোটা সাতেক গোল সেভ করেছেন। শুরু থেকেই বাংলাদেশকে চেপে ধরে উজবেকিস্তান। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে উজবেকদের বল পজেশন ছিল ৯২ ভাগ, বাংলাদেশের ৮। তারপরও এশিয়াডের সাবেক চ্যাম্পিয়নদের গোল পেতে অপেক্ষায় থাকতে হয় ২৩ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ে উজবেকিস্তানকে গোল বঞ্চিত করেছেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রানাই। ম্যাচে উজবেকরা বৃষ্টির মতোই বাংলাদেশ রক্ষণদূর্গে আক্রমণ চালায়। তাদের একের পর এক আক্রমণগুলো রুখে দিতে থাকেন গোলরক্ষক রানা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ২৩ মিনিটে ইউরিনবোয়েভ জাবিখিলোর গোলে এগিয়ে যায় উজবেকিস্তান। ডান দিক দিয়ে আলিবায়েভেবের ক্রসে হেডে গোল করেন ইউরি (১-০)। এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ায় বিজয়ী দল। ৫৭ মিনিটে খামদামভ দস্তনবেক দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন (২-০)। আর ৬৬ মিনিটে আলিবায়েভেব ইকরমজন গোল করলে সহজ জয় নিশ্চিত হয় ১৯৯৪ হিরোশিমা এশিয়ান গেমসের স্বর্ণজয়ী উজবেকিস্তানের (৩-০)।
এ ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ডাগআউটে অভিষেক হলো ইংলিশ কোচ জেমি ডে’র। হার দিয়েই তিনি শুরু করলেন বাংলাদেশ পর্ব। যদিও এশিয়াডের আগে বাংলাদেশ প্রথমে কাতার ও পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পাশপাশি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। তারপরও উজবেকিস্তানের বিপক্ষে হারের ব্যবধান কমলো না লাল-সবুজদের। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের প্রধান কোচ জেমি ডে বলেন,‘আমি সত্যিই খুশি ছেলেদের পারফরম্যান্সে। আজ (গতকাল) তারা যে কর্মক্ষমতা এবং মানসিকতা দেখিয়েছে, তাতেই আিিম সন্তুষ্ট।’ বেশ কিছু গোল বাঁচানো গোলরক্ষক রানার দক্ষতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমি এখানে কোন একজন খেলোয়াড় সম্পর্কে মন্তব্য করবো না। কিন্তু দলগত পারফরম্যান্সে আমি খুশি।’
আগামীকাল এশিয়াডে বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। এই ম্যাচ নিয়ে জেমি’র কথা, ‘আমাদের সবসময়ই লক্ষ্য থাকে ম্যাচে ভালো খেলে কিছু পয়েন্ট ঝুলিতে পুড়া। এই ম্যাচেও তাই থাকবে।’ তবে কাজটা যে খুব একটা সহজ হবে না সেটিও জানা এই ইংলিশম্যানের, ‘টেকনিক্যালি তারা (থাইল্যান্ড) আমাদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবে। যা তাদের খেলোয়াড়দের স্কোর এবং ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিতে সাহায্য করবে। তবে আমারও ছেড়ে কথা বলবো না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন