শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাভারে প্রস্তুত ট্যানারি

চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সোয়া এক কোটি পিস, লবন ও কেমিক্যালের দাম বাড়ায় ২০ শতাংশ চামড়ার মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা

হাসান সোহেল : | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

এবার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সোয়া এক কোটি পিস। আর সে লক্ষ্যে সাভারে প্রস্তুত ১১৫ ট্যানারি। ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী কাঁচা চামড়ার আড়ত পোস্তা। কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে ট্যানারি মালিকদের প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকও স্বল্প পরিসরে অর্থায়ন করবে। সবমিলিয়ে আসছে কোরবানি ঈদে চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এদিকে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চামড়ার দাম কিছুটা কম। অন্যদিকে লবন ও চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজনীয় কেমিক্যালের দাম বাড়ায় ২০ শতাংশ চামড়ার মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া এ বছর আগের তুলনায় চামড়ার দাম কমানোয় গরিব-মিসকিনের হকে আঘাত করা হয়েছে বলে গতকাল শুক্রুবার মসজিদগুলোতে খুতবার সময় ইমামরা বিশেষ গুরুত্ব দেন। তারা গরিব-মিসকিনের হকে হাত না দেওয়ার জন্য চামড়ার দাম বাড়ানোর আহবান জানান। সব মিলিয়ে উভয় সঙ্কটে সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে চামড়াশিল্প নগরীতে দুষণ, বেহাল সড়ক দুঃচিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর হাজারিবাগ থেকে ১৫৫টি ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সবগুলো ট্যানারি এখনো পুরোপুরি উৎপাদন শুরু করতে পারেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৪০টি ট্যানারি শতভাগ উৎপাদনে সক্ষম। অন্যদিকে সাভার চামড়া শিল্প নগরীর রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ট্যানারি শিল্প মালিকরা।
এক বছর চারমাস অতিবাহিত হলেও কঠিন বর্জ্য ফেলার বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি শিল্প মন্ত্রণালয়। কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারে (সিইটিপি) নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক ক্রোমিয়াম পুনরুদ্ধার বা রিকভারি ইউনিট চালু হয়নি। রাস্তাঘাট সংস্কারের কাজ সামান্যই সম্পন্ন হয়েছে। ১৫৪ ট্যানারির মধ্যে ১১৫ টির মতো প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করছে। কয়েকজন আবার ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার পরিকল্পনায় আছেন। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে এ শিল্পখাতের ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার। চামড়া শিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কাজ কয়েকবার সময় বাড়ানো হলেও এখনো পুরোপুরি সম্পন্ন করেনি চায়না প্রতিষ্ঠান। এমনকি প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তারও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া ভেতরের রাস্তার পরিস্থিতিও অনেক খারাপ। সাড়ে তিন মাস আগে রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হলেও তেমন উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। আবার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে সরায় সাভারের ধলেশ্বরী নদী দূষণের কবলে পড়েছে।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিসিকের সার্বিক কার্যক্রমে চামড়া শিল্প নগরীর ভেতরের সংযোগ সড়কগুলোর কাজ শুরু হওয়া ছাড়া এ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশ ক্ষুুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) কঠিন বর্জ্যগুলো ফেলার বিষয়টির কোনো সমাধান করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্যগুলো পাইপ দিয়ে সরাসরি ধলেশ্বরী নদীতে পড়া বন্ধ হয়নি। এ ছাড়াও ট্যানারির ভেতরের এলাকার ড্রেনগুলো বন্ধ থাকায় ও ম্যানহোলগুলোর মুখ খোলা থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই তা গিয়ে পড়ছে ধলেশ্বরী নদীতে। ভুলুয়া ট্যানারির কর্ণধার মোঃ আবদুল আউয়াল জানান, সড়কের কাজ চলছে। তবে তা খুবই ধীরগতিতে এবং যা নিম্নমানের।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চামড়া শিল্পনগরীতে যাতায়াতের রাস্তাঘাটের খুবই দূরবস্থা। সেখানে মালামাল বহন করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। আরেকটি বড় সমস্যা হলো, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাভারের প্লটগুলো ট্যানারি মালিকদের নামে বরাদ্দ হয়নি। ফলে প্লট ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে ব্যবসায়ীরা অর্থ সঙ্কটে পড়েছেন।
শাখাওয়াত বলেন, তবে এবার চামড়া সংরক্ষণে কোনো সমস্যা হবে না। গত বছর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তর করতে হয়েছিল বলে ৪০ শতাংশ চামড়া সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে আমাদের অনেক বায়ার হারাতে হয়েছে। লোকসানে পড়তে হয়েছে ট্যানারি মালিকদের। অনেকে সময়মত পরিশোধ করতে পারেননি। এই বছর সেই কারণে ব্যাংক থেকে নতুন করে ঋণ পেতেও সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এবারও শুরু হয়েছে চামড়া সংগ্রহের ব্যস্ততা। গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া মিলিয়ে এবার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ পিস, যাকে ঘিরে চলবে আনুমানিক দেড় হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক হিসেবে, এবার সংগ্রহ হতে পারে এক কোটি ১৫ লাখ পিস চামড়া। যার মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ লাখ পিস গরু, ৩৫ থেকে ৪০ লাখ ছাগল, ১০ লাখ মহিষ এবং পাঁচ লাখ ভেড়ার চামড়া সংগ্রহ হতে পারে।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস, ফুটওয়ার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএফইএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন জানান, কোরবানী ঈদে সব মিলিয়ে ২০ কোটি ফুট চামড়া সংগ্রহ লক্ষ্য ধরে মূল্য দাঁড়ায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার কোটি টাকা।
এই ঈদেই সংগ্রহ হয় মোট চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ চামড়া। তাই পাইকারি চামড়ার বৃহৎ আড়ত রাজধানীর পোস্তা, সাভারের চামড়া শিল্পনগরীসহ সারাদেশের হাটগুলোতে শুরু হয়েছে চামড়া কেনার প্রস্তুতি। নেয়া হয়েছে ব্যাংকঋণ, সংরক্ষণের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত লবণও। যদিও হঠাৎ করে বেড়েছে লবনের দাম। যা বিপাকে ফেলেছে চামড়া ব্যবসায়ীদের।
এ বিষয়ে লবন মিলস মালিক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দেশে যথেষ্ট পরিমাণ লবণ মজুদ রয়েছে। কোনো সংকট নেই। গত দেড় বছর ধরে লবণের দাম বাড়েনি, ঈদেও দাম বাড়বে না। এখন লবণের ৭৪ কেজির এক বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮শ’ টাকায়। কেউ যদি বলে লবণ পাচ্ছি না, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা লবণ পেঁেৈছ দেবো।
অন্যদিকে ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী কাঁচা চামড়ার আড়ত পোস্তা। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পোস্তার আড়াই’শ আড়তে এবার সংগ্রহ হবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার পশুর কাঁচা চামড়া। চামড়া কেনার জন্য দরকার পর্যাপ্ত ব্যাংকঋণ, কিন্ত বকেয়া পরিশোধ না করায় সংকটে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।
পোস্তার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গেল ঈদের চামড়া বিক্রির পুরো বকেয়া পরিশোধ করেনি অনেক ট্যানারি-মালিক। তাই ঋণ পরিশোধেও সমস্যা হচ্ছে। সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরে বাড়তি ব্যয়ের অজুহাতে পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, পোস্তার আড়তগুলো প্রস্ততি প্রায় শেষ করে এনেছে। পুরনো চামড়া বিক্রি শেষ করে এখন নতুন চামড়া সংগ্রহের জন্য আড়ত খালি। সংগ্রহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত লবন।
যদিও লবনের দাম কোরবানি ঈদ আসায় বেড়েছে বস্তা প্রতি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল-সোডিয়াম, অ্যামোনিয়াম, সালফিউরিক এসিড, চুনের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। তাই লবন ও কেমিক্যালের দাম বাড়ায় চামড়ার মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে শুধু লবন ও কেমিক্যালের দাম বাড়ার কারণে চামড়ার মান নষ্ট হচ্ছে তা মানতে নারাজ বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাজী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ বছর সংগৃহীত চামড়ার ২০ শতাংশের যে মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এটি সত্য। এর একটি কারণ লবনের দাম বৃদ্ধি এটি ঠিক। কিন্তু অনেক সময়ই তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা চামড়া প্রকিয়াজাতকরণের সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন না। ফলে চামড়ার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়।
এদিকে কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে ট্যানারি মালিকদের প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকও স্বল্প পরিসরে অর্থায়ন করবে। মূলত পাচার ঠেকাতে এবং আগের ঋণ পরিশোধের শর্তে অর্থায়ন করছে ব্যাংক। কোরবানীর সময় চামড়া সংগ্রহ করে, সারা বছর কারখানা সচল রাখা হয়। তাই এই সময় দরকার হয় পর্যাপ্ত নগদ অর্থ।
প্রতিবছরই উদ্যোক্তাদের অর্থের চাহিদা পূরণ করে থাকে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। অন্যান্যবারের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি ঋণ দিচ্ছে জনতা ব্যাংক। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, নগদ অর্থের সংকটে আছে চামড়াশিল্প। ট্যানারি পল্লীতে বরাদ্দ দেয়া প্লটের মালিকানা বুঝিয়ে না দেয়ায় ব্যাংক থেকে মিলছে না পর্যাপ্ত ঋণ। ওদিকে, চামড়াশিল্পে ঋণ দেবার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে খেলাপি গ্রাহককে ঋণ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
রফতানিবাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ : রফতানি বাণিজ্যে সম্ভাবনাময় খাত হওয়া সত্তে¡ও কাঙ্খিত বাজার তৈরী করতে পারেনি চামড়াখাত। নানাবিধ প্রতিবন্ধকতায় এখন থমকে গেছে এ খাতের প্রসার। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয় ১০৮ কোটি ডলার। এর আগের বছরের তুলনায় যা ১৫ কোটি ডলার কম।
বাংলাদেশি চামড়ার প্রধান গন্তব্য চীন। ওই বাজারেই যায়, মোট রফতানির ৬০ ভাগ চামড়া। কিন্ত রফতানি বাণিজ্যে এখন বড় চিন্তার কারণ চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ। মার্কিন সরকার চীনের আমদানি ঠেকাতে উচ্চ ট্যারিফ নির্ধারণ করায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছে চীন। ফলে এই মুহূর্তে নতুন বাজার না থাকায় সংকটে চামড়া রফতানি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহ জানান, প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম কমিয়ে বলা হচ্ছে ২০-২৫ সেন্ট। প্রক্রিয়াকরণসহ আনুসাঙ্গিক ব্যয় মিটিয়ে এতো কম দামে চামড়া রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে ৪২ শতাংশ : বাংলাদেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে এ খাতে এফডিআই স্টক বা পুঞ্জীভূত বিদেশী বিনিয়োগের প্রবাহ বেড়েছে ৪২ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া ও নেদারল্যান্ডস থেকে।
প্রস্তুতকারকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের বৈশ্বিক বাজার ২৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের। এ শিল্পে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অপার। এশীয় অন্যান্য দেশের তুলনায় পণ্যের মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। এসব কারণেই প্রতিনিয়ত এ খাতে বিদেশীদের বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
এইচ এম সাগর ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:২০ এএম says : 0
ভাল
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন