শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

ফাঁকা রাজধানী- বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঈদের ছুটি, ব্যস্ততম রাজধানী ছিল পুরাই ফাঁকা। তাই ফাঁকা রাজধানীতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তীব্র গরম, রোদ আর মাঝেমধ্যে হালকা বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে মেতে উঠেন ঈদ আনন্দে। কুরবানির পশু জবাইয়ের কাজ শেষ করেই পরিবারকে সাথে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন রাজধনীর বিনোদন প্রিয় মানুষ।
প্রিয় মানুষকে নিয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল, শিশু পার্ক, জাতীয় জাদুঘর, চিড়িয়াখানা, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আগারগাঁওয়ে বিমান বাহিনী জাদুঘর এবং বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার দেখতে বেরিয়েছেন অনেকে। ঈদের দিন বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার ও গতকালও এসব বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
রাজধানীর শাহবাগের শিশু পার্কের প্রবেশপথসহ শিশুপার্ক এলাকায় শিশু ও তাদের অভিভাবকদের যেন ঢল দেখা যায়। নভোযান, এসো গাড়ি চড়ি, রেলগাড়ি, চাকা পায়ে চলাসহ প্রতিটি রাইডে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। রাজধানীর মিরপুরের চিড়িয়াখানায়ও ছিলো উপচে পড়া ভিড়। ছোট-বড় পরিবারের সবাই মিলে এসেছে চিড়িয়াখানা দেখতে। সেখানেও টিকেট কাউন্টারগুলোতে দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল মিরপুর চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা মেহেদি হাসান নামে এক শিক্ষার্থী ইনকিলাবকে বলেন, এই প্রথমবারের মতো চিরিয়াখানায় ঘুরতে এসেছি, খুবই ভালো লাগছে। বিশেষকরে ঈদের আনন্দটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর এস এম নজরুল ইসলাম জানান, এমনিতেই সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চিড়িয়াখানায় একটু ভিড় থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড় কয়েকগুন বেড়ে যায়। আমরা সর্বোচ্চ মানের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
ঈদ উপলক্ষে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে দুই জোড়া আফ্রিকান সাদা সিংহ, এক জোড়া কালো ভাল্লুক আনা হয়েছে মিরপুর চিড়িয়াখানায়। এছাড়া চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি চারটি উট পাখি আর একজোড়া উট কিনেছে। কিউরেটর বলেন, নতুন এসব প্রাণীর খাঁচার সামনে নানা বয়সী মানুষের ভিড় ছিল সারা দিন। তাছাড়া চিড়িয়াখানার জাদুঘরটিতে শিশু-কিশোরদের ভিড় দেখা গেছে।
তবে ঈদের এই ছুটিতে রাজধানীর সব বিনোদন কেন্দ্রকে হার মানিয়েছে হাতিরঝিল। ঈদ আনন্দ যেন এখানে উপচে পড়েছে। বুধবার বিকেল থেকেই নগরবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। বিনোদনপ্রেমীরা উপভোগ করছেন এখানকার সৌন্দর্য। বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। এদিকে, ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলও সেজেছে নতুন সাজে। নতুন সাজে প্রস্তুত করা হয়েছে চক্রাকার বাস ও ওয়াটার বোট।
বৃস্পতিবার হাতিরঝিল ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই ঝিলের পারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউবা আবার বোটে চড়ছেন। এ বোটে সাধারণত প্রয়োজনেই চড়ে থাকেন যাত্রীরা। রামপুরা থেকে গুলশান লিঙ্ক রোড, লিঙ্ক রোড থেকে এফডিসি, এফডিসি থেকে রামপুরা সময় বাঁচানোর লক্ষ্যেই এ বোটে চড়েন যাত্রীরা। তবে ঈদের ছুটিতে আর সময় বাঁচাতে নয়, সময় কাটাতেই বোটে চড়ছেন সাধারণ মানুষ। উপভোগ করছেন পরিবেশ। এছাড়া ওটায়ারট্যাক্সি রাইডেও ছিল অনেক ভিড়। বিকেলে রামপুরা থেকে বোটে চড়ার উদ্দেশে অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
টিকেটের জন্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ঝিলের লেকে বোটে ভেসে বেড়ানোর আনন্দই আলাদা। তবে বোটে চড়ার জন্য অনেক সময় দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এটা কিছুটা বিরক্তিকর। তবে বোটে চড়ার পর সেই বিরক্তি আর থাকে না। সন্ধার সময় ঘুরতে আসা রাকিব হাসান ইনকিলাবকে বলেন, আমরা এমনিতেই নিয়মিত হাতিরঝিলে ঘুরতে আসি। কিন্তু ঈদের আনন্দে হাতিরঝিলে ঘুড়তে অন্যরকম মজা লাগে। মুশফিক মিশু নামে আরেকজন বলেন, ঈদের ছুটিতে হাতিরঝিলের খোলামেলা পরিবেশে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে ওয়াটার বোটে চড়ে ঠান্ডা বাতাস ঘুরতে অনেক আনন্দ উপভোগ করেছি।
এদিকে ঈদুল আযহা উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘর এবং স্বাধীনতা জাদুঘরে চলছে বিশেষ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। আর ঈদেও ছুটিতে জাদুঘরে প্রাচিন নিদর্শন ছাড়াও এসব প্রদর্শনী দেখতে ভির করছে নানা বয়সের মানুষ। জাতীয় জাদুঘরের কিপার শিহাব শাহরিয়ার জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘর খুলে দেওয়ার পর চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও জাদুঘরের বিভিন্ন নিদর্শন দেখতেও ভিড় করে নানা বয়সী মানুষ।এছাড়াও সায়েদাবাদের ওয়ান্ডারল্যান্ড এবং ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক ও সোনারগাঁয়ের লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগের জন্য ভিড় জমান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন