শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

উজিরপুরে ভিজিএফের ৩শ’ কেজি চাল আটক

উজিরপুর (বরিশাল) থেকে সৈয়দ নাজমুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

উজিরপুর উপজেলাধীন জল্লা ইউনিয়নে অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়নে ঈদুল আজহায় দুস্থদের জন্য বিশেষ বরাদ্দে এক হাজার ৩০৪টি ভিজিএফ কার্ডধারী ব্যক্তির ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ আসে। ঈদের আগেই এক হাজার ১৮৭টি কার্ডের চাল বিতরণ করা হয়। সময়মতো নিতে না আসায় ও বৃষ্টির কারণে হিন্দু সম্প্রদায়দের মধ্য থেকে ১১৭টি কার্ডের চাল অস্থায়ী ইউনিয়নের গোডাউনে থেকে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গত ২৮ আগস্ট বেলা ১টার দিকে ইউনিয়ন অস্থায়ী গোডাউন থেকে ইউপি সচিব সুশান্ত ও সংশ্লিষ্ঠ মেম্বার ওপেন সরকার ও হরনাথ চৌধুরীসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মাস্টার রুলে টিপসই রেখে ২০ কেজি করে ১৫ জনকে ৩০০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়। বৃষ্টি থাকার কারণে কার্ডধারীরা সাতটি বস্তায় চাল নিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যানে তুলে দিয়ে নিজেরা হেঁটে যাচ্ছিল।
এ সময় চালবোঝাই কাভার্ড ভ্যানটি কারফা বাজারে কাছাকাছি পৌঁছলে জল্লা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন শাহা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পান্না লোকজন নিয়ে ভ্যানটি আটক করে। চেয়ারম্যান গোপনে ভিজিএফের চাল বিক্রয় করছে, প্রকাশান্তে মুহূর্তে মধ্যে চেয়ারম্যানের পক্ষে-বিপক্ষের লোকজন এলে সঙ্ঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়। এ অবস্থায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর জানলে থানার এসআই মিজানুর রহমান ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থানে যান এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি মো. মফিজুর রহমান ও ট্যাক অফিসার মো. রেজাউল করিম পরিবেশ শান্ত করতে তাৎক্ষণিক চালগুলো গোডাউনজাত করেন। এনিয়ে কার্ডধারী ও চাল আটককারীদের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সংসদ সদস্য আলহাজ অ্যাড. তালুদার মো. ইউনুস বিষয়টি আমলে নিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আ.লীগ সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ইকবাল ঢাকা থাকায় ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, আমার এই পাঁচ বছরের মধ্যে এ ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি, আর আজও ঘটেছে এ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে বিষয়টি দেখব, ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেলে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম, বিষয়টি এসে শুনেছি তবে ঘটনা সত্যি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান ও ট্যাক অফিসার মো. রেজাউল করিম বলেন, অবশিষ্ট চাল কার্ডধারীদের মধ্যে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট মেম্বার ও সচিবকে আমরা অনুমতি দিয়েছি। জল্লা ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি ও চেয়ারম্যন বিশ্বজিত হালদার নান্টু বলেন, আমাদের এই ইউনিয়নটিতে হিন্দু সম্প্রদায় বেশি, যেহেতু ঈদের সাহায্য সেহেতু এই চাল দিতে আমরা কোনো বিলম্ব করিনি, তবে হিন্দু সম্প্রদায় থেকে যারা সময়মতো চাল নিতে আসেনি শুধু তাদেরই চাল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে এখন বিতরণ করছে। এ ছাড়া ভিজিএফ-ভিজিডি এ সমস্ত চাল দেয়ার দায়িত্বে থাকেন পিআইও, ট্যাক অফিসার, সচিব ও সংশ্লিষ্ট মেম্বরগণ।
কার্ডধারীরা প্রকাশ বিশ্বাস, রেখা বিশ্বাস, মতিলাল, সুনিল চন্দ্র, কল্পনা, জুরান, কানাইলাল, সোনেকা, আরতি রানী, দুলাল বিশ্বাস, অর্চনা, সন্ধ্যা রানী, গনপতি, ধীরেন্দ্র নাথ ও সমর কান্তি বলেন, আমরা অন্যের কাজ করে সংসার চালাই, তাই সময়মতো ও বৃষ্টির কারণে সরকারের দেয়া সাহায্য চাল আনতে পারিনি। অপরদিকে খরচ বাঁচানোর জন্য আমরা এই ১৫ জন একত্রে একটি গাড়িতে চাল নিয়ে যাচ্ছিলাম, এ সময় চেয়ারম্যানের বিপক্ষের লোকেরা চাল আটকিয়ে আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। মান ক্ষুন্ন হয়েছে চেয়ারম্যান ও আ.লীগের। এ বিষয় কর্তৃপক্ষ ও আ.লীগ নেতাদের কাছে আমরা বিচার চাই। সরেজমিন গিয়ে কার্ডধারীদের নামের সাথে মাস্টার রুলের টিপসই ও উল্লিখিত বিষয়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। এই বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক অঙনে তোলপাড় চলছে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন