মীরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য কৃষিজমি অধিগ্রহণ না করার দাবি জানিয়েছে ‘চরাঞ্চলের কৃষিজমি রক্ষা ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির নেতারা কৃষিজমির পরিবর্তে অনাবাদি খাস জমি অধিগ্রহণের দাবি জানান। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে গণহারে তিন ফসলি জমি ও মৎস্য খামার অধিগ্রহণ করার মাধ্যমে ৩৫ হাজার কৃষক পরিবারকে পথে বসানোর আয়োজন করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মজিবুল হক বলেন, আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিরোধী নই, আমাদের বিরোধিতা শুধু কৃষিজমি অধিগ্রহণের। প্রধানমন্ত্রী মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন উদ্বোধনের সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন, কৃষিজমিতে কোনো অবস্থায় শিল্প-কারখানা হবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ অমান্য করে একটি মহল ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি ও মৎস্য খামারের জমি অধিগ্রহণে লিপ্ত থাকায় ৩৫ হাজার কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। এসব জমিতে বছরে তিনবার ফসল হয় এবং মৎস্য খামারে উৎপাদিত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম শহরের ৩০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা হয় বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, কোনো নোটিশ না দিয়ে তাদের ২৮ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। অথচ ৩০ হাজার একর অনাবাদি জমি পড়ে থাকলেও তা অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। বেড়িবাঁধের পশ্চিমে স›দ্বীপ চ্যানেল পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার একর অনাবাদি জমি আছে। এরমধ্যে ১৭ হাজার ৫০০ একর অধিগ্রহণ হয়েছে। পূর্ব-পশ্চিম ইছাখালী মৌজা, চরশরৎ, মঘাদিয়া ও মায়ানি মৌজা পর্যন্ত এসব জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি।
কৃষিজমি অধিগ্রহণ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মজিবুল হক বলেন, আমরা স্থানীয় এমপি ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সাথে ঈদের দুই দিন পর দেখা করেছি। তিনিও আশ্বাস দিয়েছেন কোনো কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। কিছুতেই কিছু না হলে আমরা শেষ পর্যন্ত আদালতে যাব। আমাদের শেষ ভরসা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রয়োজনে উনার কাছে যাব। আশা করি সুবিচার পাব। এরই মধ্যে যে কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো মালিকদের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম, সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন ডিপটি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম, প্রচার সম্পাদক ফিরোজ আলম, তথ্য সম্পাদক নুরুল আলম, অর্থ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ও দপ্তর সম্পাদক নুরুল কবির। পরে একই দাবিতে প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন