শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

কমছে কৃষিজমি, আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই

মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, ঝালকাঠি থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

বরিশালের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করলেই শত শত একর কৃষি জমিতে যে কারো চোখ আটকে যাবে। ঝালকাঠি-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে রয়েছে সবুজের সমারোহ। কখনো সোনালী ধানের স্বর্ণালী রূপ, কখনো আবার সবজির সমাহার প্রশান্তি যোগায়। নৌপথে গেলেও কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, বিষখালী ও ধানসিঁড়ি নদী তীরে রয়েছে ফসলের ক্ষেত। নৌ বা স্থল দুই পথেই গত পাঁচ-সাত বছর আগেও এমনটি চোখে পরতো। অথচ বর্তমানে অধিকাংশ কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে বাড়ি, মাছের ঘের-পুকুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাগান, ইট-বালুর গোলাসহ নানান স্থাপনা। ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় যে গতিতে কৃষিজমি কমছে, তাতে আগামীতে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কি হারে প্রতিদিন কৃষিজমি কমছে তার বাস্তব উদাহরণ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ফুলহার গ্রামের স্বচ্ছল কৃষক আব্দুর রহিম খান। বর্তমানে তার বয়স ৭৩ বছর। পুরো জীবন কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পৈতৃক সূত্রে ৫২ বিঘা জমি পেয়েছিলেন তিনি। এক যুগ আগেও মোট জমি থেকে ৪৫ বিঘা জমি কৃষি কাজে ব্যবহার করতেন। বর্তমানে তার ৬ সন্তানের মধ্যে জমি ভাগ করে দিয়েছেন।
এর মধ্যে যে জমিগুলো গ্রামীণ পথ, আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কের পাশে রয়েছে তার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুনে। তাই ভূমিদস্যুদের হাত থেকে বাঁচাতে জমিগুলোর কোথাও বাড়ি, কোথাও বাগান আবার কোথাও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বালু ফেলে রেখেছেন। ভালো দাম পাওয়ায় কিছু জমি বিক্রি করেছেন। বিক্রি করা জমিতে ইতোমধ্যেই বাড়ি-ঘর নির্মিত হয়েছে। এভাবেই গত একযুগে রহিম খানের কৃষি জমি কমেছে প্রায় ২০ বিঘা। বর্তমানে ২৫ বিঘা জমি কৃষির জন্য থাকলেও কৃষি শ্রমিকের অভাব, কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও ধানের দাম কম হওয়ায় বর্তমানে বেশিরভাগ জমি অনাবাদি পরে থাকার কথা জানান রহিম খানের ছেলে মো. নয়ন খান।
উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম ইন্দ্রপাশা গ্রামের মো. হাসান হাওলাদার। খাল ও সড়কের পাশে থাকা এক বিঘা জমির মাটিকেটে বালুর গোলা তৈরি করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাশের জমিগুলোতে আগেই কেউ বাগান বা পাথর, বালুর গোলা বানিয়েছেন। কৃষির চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় আমিও আমার জমিতে বালুর গোলা তৈরি করছি।
ঝালকাঠির অধিকাংশ কৃষি জমি এক ফসলি হওয়ায় চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। ফলে প্রতিদিনই কৃষি জমি কমছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর নানা উদ্যোগ কৃষকদের চাষাবাদে আগ্রহী করতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, কৃষিজমি রক্ষায় বর্তমানে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসন ইতোমধ্যেই আইন প্রয়োগ শুরু করেছে। সম্প্রতি উপজেলার পুটিয়াখালী এলাকায় কৃষিজমির মাটিকাটার দায়ে সৈয়দ বাপ্পি (৩০) নামে এক যুবককে পাঁচশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া যেখানেই কৃষিজমি নষ্ট করার খবর পাচ্ছি সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Taslim ২০ মার্চ, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
তবে সরকার চাইলে গ্রামের অনেক জমি বিশেষ করে কৃষি জমি আরো বাড়িয়ে আনতে পারবে,যেমন খণ্ড খণ্ড বসতবাড়ি গুলোকে উঠিয়ে এক জায়গায় বড় অট্টালিকা করে সেখানে তাদেরকে ফ্ল্যাট বাসা দিয়ে সুব্যবস্থা করতে পারেন,তবে আমি মিডিয়াতে দেখেছি চায়নাতে এমন ব্যবস্থা করে অনেক জমি নিরাপদ করে কৃষি জমি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে তবে সরকার চাইলে চায়না কৃষি আইন ব্যবস্থা ফলো করে ব্যবস্থা নিতে পারেন কৃষি জমি বাঁচাও তবেই কৃষক বাজবে
Total Reply(0)
Taslim ২০ মার্চ, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
তবে সরকার চাইলে গ্রামের অনেক জমি বিশেষ করে কৃষি জমি আরো বাড়িয়ে আনতে পারবে,যেমন খণ্ড খণ্ড বসতবাড়ি গুলোকে উঠিয়ে এক জায়গায় বড় অট্টালিকা করে সেখানে তাদেরকে ফ্ল্যাট বাসা দিয়ে সুব্যবস্থা করতে পারেন,তবে আমি মিডিয়াতে দেখেছি চায়নাতে এমন ব্যবস্থা করে অনেক জমি নিরাপদ করে কৃষি জমি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে তবে সরকার চাইলে চায়না কৃষি আইন ব্যবস্থা ফলো করে ব্যবস্থা নিতে পারেন কৃষি জমি বাঁচাও তবেই কৃষক বাজবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন