কলাপাড়া-কুয়াকাটার বিকল্প সড়কের বালিয়াতলী পয়েন্টের আন্ধারমানিক নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু। চলতি বছর ৪ সেপ্টেম্বর এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টি আর নদীতে জোয়ার-ভাটার কারণে নির্মাণ কাজ পিছিয়ে পারায় কাজের সময়সীমা আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছে সেতু নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে সেতুটির পাইলিং, ১১টি পিলার, দুটি অ্যাপার্টম্যান্টসহ ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় নেতার নামের এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে সড়ক পথে পায়রাবন্দরের পণ্য খালাস সহজতর হবে। এ ছাড়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ, ধুলাসার ও লতাচাপলী ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হবে। আর কুয়াকাটায় আগত পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য আরেকটি নতুন পথের দ্বার উন্মোচিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৬৭৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯২৩ টাকা ৪৯ পয়সা। ১৩টি স্প্যানের ওপর এ সেতুটি নির্মিত হবে। এর সঙ্গে রয়েছে দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধনকালে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আর ২০১৬ সালে ৪ সেপ্টেম্বর ম্যাক্স-র্যাংকি জেভি নামের দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে।
উপজেলা আ.লীগ নেতা প্রভাষক ইউসুফ আলী জানান, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে আন্ধারমানিক নদীর বালিয়াতলী পয়েন্টের খেয়া পারাপারে লাখো মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে। কৃষকদের পণ্য পরিবহনসহ শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথ সুগম হবে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান এমপির প্রচেষ্টায় এখানে এ সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে। তাই এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী ও এমপির প্রতি কৃতজ্ঞ। ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, মালামাল নিয়ে খেয়াঘাটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। সেতুটি চালু হলে এ ভোগান্তি আর পোহাতে হবে না। বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমাযুন কবির বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজন অতি সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবে। এ ছাড়া রোগী নিয়ে খেয়া পারাপারের ঝক্কিঝামেলা থাকবে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. মোখলেচুর রহমান জানান, চলতি মাসে ৪ সেপ্টেম্বর এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবহওয়া অনুক‚লে না থাকা ও জোয়ার-ভাটার কারণে সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে। বর্তমানে বিরামহীনভাবে কাজ চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কন্সটাকশন ম্যানেজার ইন্দ্রজিৎ পাল জানান, ৬৫ টা গার্ডারের মধ্যে সাতটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজ শেষ করার সময়সীমা আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি আগামী জুন মাসের মধ্যে সেতুটির কাজ সম্পন্ন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন