কুমিল্লার তিতাস উপজেলার উলুকান্দি গ্রামের প্রবাসী বাবুল মিয়ার ছেলে প্রবাস ফেরত মো. ফয়সার (২৩) হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার গাজিপুরে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মানববন্ধনে সর্বস্তরের মানুষসহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নিহতের মা নাছিমা বেগম উপস্থিত সাংবাদিকদের হাতে লিখিত বক্তব্য তুলে দেন। ওই লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, পার্শ্ববর্তী নাগেরচর গ্রামের মো. শিপনের স্ত্রী মোমেনা আক্তার মৌ দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলে ফয়সালকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার জন্য নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। বিয়ে করতে অস্বীকার করলে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে নানা প্রলোভন ও অজুহাত দেখিয়ে মোমেনা আক্তার ফয়সালকে পার্ম্ববর্তী উপজেলার দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারের একটি বিল্ডিংয়ের ফ্লাটে নিয়ে বিয়ে না করলে হত্যা করার হুমকি দেয়।
একপর্যায়ে মোমেনা আক্তার তার ভাই মো. রুবেলকে ফোনে আসতে বলে। বোনের ফোন পেয়ে রুবেল মামুন, আবুল হোসেন, ইউসুফ মেম্বার ওই ফ্লাটে উপস্থিত হয়ে ফয়সালকে এলোপাতাড়ি লাথি, কিল-ঘুষি ও কাঠের রোল দিয়ে পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে ফয়সাল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা ফয়সালকে গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাপাতালেও ফয়সালকে মারধর করতে থাকে। ফয়সালের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে হাপাতালে ভর্তি এক মহিলা রোগী গৌরীপুেেরর ফাঁড়ি থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে মো. রুবেল, মো. মামুন ও মোমেনা আক্তারকে আটক করতে পারলেও ইউসুফ মেম্বার ও আবুল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফয়সালকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর ফয়সাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নিহতের মা নাছিমা বেগম উক্ত পাঁচজনকে আসামি করে দাউদকান্দি থানা এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এই এজাহার রেকর্ড করতে অস্বীকার করেন এবং আবুল হোসেন ও ইউসুফ মেম্বারের নাম এজাহার থেকে বাদ দিতে বলেন। বাদী ওই দুই নাম বাদ দিতে অস্বীকার করলে পুলিশ তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায় ও তা সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। একপর্যায়ে বাদী নাছিমা বেগম পুলিশের লিখিত এজাহারেই স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় বলে তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এদিকে তিতাসের মানুষ ফয়সাল হত্যার হুকুমদাতা ইউসুফ ও আবুল হোসেনকে মামলায় এফআইআরভুক্ত করে গ্রেফতারসহ দাউদকান্দি থানার ওসিকে অবিলম্বে এখান থেকে প্রত্যাহরের দাবি জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন