শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

গণমানুষের ইত্যাদি এবার নীলফামারীতে

প্রচার ৫ অক্টোবর

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সভ্যতা-সংস্কৃতিকে জানা এবং জানাবার প্রত্যাশায় বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ইত্যাদি ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে উত্তরের প্রাচীণ জনপদ নীলফামারীতে। একসময়ের মঙ্গা কবলিত, পিছিয়ে পড়া উত্তরের এই জনপদ এখন সকল সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে হয়ে উঠছে আলোকিত জনপদ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের অভ্যন্তরে নীলফামারীর বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জিনিষ দিয়ে সাজানো মঞ্চে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি। ইপিজেডের অভ্যন্তরে বর্ণিল আলোয় আলোকিত মঞ্চের সামনে দর্শক ছিলেন ইপিজেডের কয়েক হাজার শ্রমজীবি মানুষ ও নীলফামারীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সুধীজন। অনুষ্ঠানস্থলে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে তারা মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করেছেন ইত্যাদির নান্দনিক সব পর্ব। স্থানীয় প্রশাসন, ইপিজেড কর্তৃপক্ষ এবং ইত্যাদির প্রাণ-সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ ও আন্তরিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সফলভাবে ধারণ করা হয়। অনুষ্ঠান ধারণ উপলক্ষে ইপিজেডের শ্রমিকদের মধ্যে সেদিন এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অবাক বিস্ময়ে তারা উপভোগ করেন তাদের প্রিয় ইত্যাদি তাদেরই কর্ম আঙ্গিনায়। সরাসরি দেখেছেন একটি অনুষ্ঠান তৈরী করতে কতটা শ্রম দিতে হয়। আর এ জন্যেই ইত্যাদি আজ দেশ সেরা অনুষ্ঠান, সব শ্রেণী পেশার মানুষের অন্তরের অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের যখন যে স্থানে ইত্যাদি ধারণ করা হয় সেই স্থানটির বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করেই সেট নির্মাণ করা হয় এবং পুরো মঞ্চ জুড়েই সেইসব বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরা হয়। ফলে দর্শকরা যেমন ঐ স্থানটি সম্পর্কে জানতে পারেন, তেমনি নিত্য-নতুন লোকেশনের কারণে প্রতিবারই সেট নির্মাণেও আসে বৈচিত্র্য। টেলিভিশন অনুষ্ঠানকে স্টুডিওর চারদেয়ালের ভিতর থেকে বাইরে এনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অনুষ্ঠান ধারণের ইত্যাদির এই ধারণাটিকে এখন অনেকেই গ্রহণ করেছেন। ফলে টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণেও বৈচিত্র্য এসেছে। শিকড় সন্ধানী ইত্যাদিতে সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিয়োজিত মানুষদের খুঁজে এনে তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরা হয়। যাতে তাদের কাজ দেখে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন। এছাড়াও গত দুই দশক ধরে ইত্যাদি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে দেশি-বিদেশি অচেনা-অজানা স্থানকে নিয়ে তথ্য ভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন করছে। এবারের পর্বে রয়েছে নীলফামারীর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং নীলচাষের উপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন। এ বছরের মার্চ মাসে প্রচারিত ইত্যাদিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নেদারল্যান্ডসের নাগরিক আনোয়ারা বেগমের নিজের শিকড়ের সন্ধানের উপর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছিল। উলে­খ্য ইত্যাদিতে প্রচারের পরদিনই আনোয়ারা খুঁজে পান তার পরিবারকে। কিন্তু কিভাবে? এবারের পর্বে তা নিয়ে রয়েছে একটি ফলোআপ প্রতিবেদন। ভাওয়াইয়া গানের প্রাণপুরুষ আব্বাসউদ্দিন এবং তার শ্বশুর বাড়ি নিয়ে রয়েছে প্রতিবেদন। উত্তরা ইপিজেডের উপর রয়েছে একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন। বিদেশি প্রতিবেদনে রয়েছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ ও নেলসন ম্যান্ডেলার উপর একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন। এবারের ইত্যাদিতে মুল গান রয়েছে একটি। যেহেতু ইত্যাদি এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে ধারণ করা হয় এবং সেই অঞ্চলের শিল্পীদের দিয়েই গান করানো হয়, সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ইত্যাদিতে নীলফামারীর সন্তান ইবরার টিপুর সঙ্গীতায়োজনে এ অঞ্চলেরই প্রায় ১৫০ বছর পুরাণো একটি চট্কা গান করা হয়। ইবরার টিপুর সঙ্গে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন টি.ডাব্লিউ সৈনিক, ফারুক ভূইয়া, তাজ, শাহীন ও সহশিল্পীবৃন্দ। এছাড়াও নীলফামারীকে নিয়ে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায় এবং মেহেদীর সঙ্গীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন উত্তরা ইপিজেডের এক দল শ্রমজীবি মানুষ। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন মোহাম্মদ রাব্বি আল কাওসার রাজু। কণ্ঠ দিয়েছেন আবু বকর সিদ্দিকী, ফারুক ভূইয়া, রিয়াদ ও অন্যান্য। দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান নীলফামারীকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে ৩ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা আঞ্চলিক ভাষায় একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য। দর্শকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন নীলফামারীর কৃতী সন্তান, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর। এই পর্বে হানিফ সংকেতের সঙ্গে রয়েছে তার একটি ভিন্নরকম সাক্ষাৎকার।নিয়মিত পর্বসহ এবারও রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষè নাট্যাংশ। নিজ স্বার্থ পরমার্থ, শিশু সুরক্ষায় সংগঠন, ক্যামেরা আতংক, খাঁটি মানুষ তৈরীর কারখানা, গণমাধ্যমের গণ পরামর্শ কেন্দ্র, মোবাইল ফোন বিড়ম্বনাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন। গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচারিত হবে। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানটি গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রচার হওয়ার কথা থাকলেও ঐদিন এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনাল খেলা প্রচার হওয়ার কারণে অনুষ্ঠানটি আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ০৫ অক্টোবর, রাত ৮ টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটি পুনঃপ্রচার করা হবে আগামী ০৭ অক্টোবর, রবিবার রাত ১০ টার ইংরেজি সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মান করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কস্মেটিকস্ লিমিটেড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন