ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের প্রভাবে প্রায় শুকিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া পদ্মা নদীতে গত ২ সপ্তাহ আগে প্রবল স্রোত আর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এসময় নদীভাঙন দেখা দেয় এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদ সীমার খুব কাছ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করেছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা দূর হয়েছে। পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের একজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, এখন পদ্মার পানি আর বাড়বে না। ক্রমেই কমে যাবে। শুষ্ক মওসুম শুরু হওয়ার আগেই পদ্মা নদী তার সাবেক শুষ্ক অবয়বে ফিরে আসবে। চর জেগে উঠবে। সেচের জন্য পানির সঙ্কট সৃষ্টি হবে। মাছ পাওয়া যাবে না। মাঝিদের নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। মাছের ওপর নির্ভরশীল মানুষজন জীবিকা হারাবেন। পানির অভাবে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব পড়বে। পদ্মা চিরাচরিত সেই রূপ পরিগ্রহ করবে। শুষ্ক মওসুমে পদ্মায় পানি না থাকার কারণে পদ্মার প্রধান শাখা নদী গড়াই, আত্রাই শুকিয়ে যাবে। এসব নদীর শাখাসহ প্রায় ৫৩টি নদী পানিশূন্য হয়ে পড়বে। নদীতে পানির প্রবাহ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সাথে পদ্মাসহ এর শাখা নদীগুলো বাঁচাতে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গাচুক্তি করেন। চুক্তির পর থেকে ভারত ভাটির দেশ বাংলাদেশকে কোন বছরই চুক্তি মাফিক পানি দেয়নি। ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। পানির ব্যাপারে কট্টর অবস্থান নিয়ে আছে। তিস্তা চুক্তি হয়নি। পদ্মা-তিস্তার করুণ দশা দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘আমরা ভাটির দেশে। আমাদের কত দিন পানি না দিয়ে থাকবে।’ তিনি নদী ড্রেজিং পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। এটি মেগা প্রজেক্ট। পরিকল্পনা মাফিক পদ্মা নদী ড্রেজিং করা গেলে এর সুফল পাওয়া যাবে, বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়ে পদ্মা নদীতে যখন পানি ছাড়বে সেই পানি নদীর বুকে ধরে রাখতে পারলে শুষ্ক মওসুমে পানির আপদকালীন অবস্থা মোকাবেলা করা যাবে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন