ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মিরপুরে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পাবলিক টয়লেটের উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মিরপুর-১২ বাস টার্মিনালের পাশেই ডিএনসিসি নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছে এ পাবলিক টয়লেটটি। গতকাল শনিবার ডিএনসিসি’র প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ জামাল মোস্তফা এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকতে ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে বেশ কিছু অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন পাবলিক টয়লেট। এ টয়লেটগুলো ব্যবহার কারে ইতোমধ্যে নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। গতানুগতিক পাবলিক টয়লেটের কথা মনে আসতেই অনেকের মনে ভেসে উঠে স্যাতস্যাতে নোংরা আবর্জনা পূর্ণ কোন ময়লার বাগাড়ের কথা। ঢাকা শহরের পাবলিক টয়লেটের অভিজ্ঞতা নগরবাসীর কাছে মোটেও সুখকর নয়। আশ-পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই উটকো গন্ধ জানান দেয় এখানে কোথায়ও পাবলিক টয়লেট রয়েছে। এ উটকো গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পেতে নগরবাসী এগুলোগে এড়িয়ে চলেন। অনেক সময় দেখা যায়, মহিলা টয়লেট থেকে বের হচ্ছেন পুরুষ। এমনকি মহিলা টয়লেটের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে পুরুষ, আবার পুরুষ টয়লেট থেকে বের হচ্ছেন মহিলা। পাবলিক টয়লেটগুলোর এই দুর্দশা এবং সেই উটকো গন্ধ ও ময়লা আবর্জনা থেকে নাগরবাসীকে রেহাই দিতেই ঢাকার দুই কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে বেশ কিছু পাবলিক টয়লেট।
জানা গেছে, ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৫০ বর্গফুট জায়গায় নির্মিত ডিএনসিসি’র এ পাবলিক টয়লেটে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা ওয়াশরুম এবং টয়লেট ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত টয়লেটেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য দু’টি করে হাই কমোড ও দু’টি প্যান টয়লেট রয়েছে। দু’পাশে তিনটি করে বেসিন বসানো।
এছাড়া একটি করে ড্রিংকিং ওয়াটার ফিল্টার, ওজুখানা, দু’টি করে শাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া থাকছে চারটি করে লকার ব্যবস্থা। এসব সুবিধা ভোগ করার জন্য সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ফি দিতে হবে। টয়লেট ব্যবহার ৫ টাকা, গোসল ১০ টাকা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি প্রতি গ্লাস ১ টাকা এবং লকার সুবিধার জন্য দিতে হবে ৫ টাকা। এই পাবলিক টয়লেটের ওপর ফুডকোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের। খুব শিগগিরই এখানে একটি ফুডকোর্ট করা হবে।
উদ্বোধনের সময় প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ জামাল মোস্তফা বলেন, নগরবাসীর মানসম্মত সেবার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। নগরবাসীকে উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য আমরা ১০০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি। এরইমধ্যে ২০টি সম্পন্ন হয়েছে, আরও ৮০টির জন্য জায়গা খুঁজছি। নগরবাসীর প্রয়োজন মোতাবেক আরও ৮০টি পাবলিক টয়লেট করবো। এছাড়া অত্যাধুনিক যাত্রী ছাউনি করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এসময় পাবলিক টয়লেটটির সুষ্ঠু ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান প্যানেল মেয়র।
তিনি বলেন, এ পাবলিক টয়লেট নির্মাণে রাজধানীর সামগ্রিক পাবলিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান পাবলিক স্যানিটেশন চাহিদা পূরণের ধারাবাহিকতায় আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো।
ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপিত আধুনিক এ পাবলিক টয়লেটি এ অঞ্চলে চলাচলরত জনগণের স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন, প্রতিবন্ধীবান্ধব এ পাবলিক টয়লেটে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা চেম্বার, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ খাবার পানি, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ, স্যানিটারি ন্যাপকিন, নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরাসহ পেশাদার পরিচ্ছন্নকর্মী ও নারী কেয়ারটেকারের ব্যবস্থা রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজ্জব হোসেন ও ডিএনসিসির তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী ড. তারিক বিন ইউসুফ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন