জামালপুরের ইসলামপুরে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের কাছিমারচর ফকিরবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ ঘটনা এলাকায় টক অব দ্য টাউনে পরিনত হয়েছে।
জানা যায়, কাছিমারচর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০০৩ সালে স্থাপিত হয়। সেই থেকেই শিক্ষিকা শারমিন আক্তার, কাজলী আক্তার, আ. হালিম এবং বিধি মোতাবেক, ওই স্কুলের সভাপতি আব্দুল গণি খন্দকার সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগে ৫ ডিসেম্বর ২০১১ সালে খালেদা নামের আরেক সহকারি শিক্ষিকা যোগ দেন। শিক্ষিকগন সুনামের সাথে বিদ্যালয়ে পাঠদান করে আসছেন। এমতাবস্থায় সরকার ঘোষিত ১৭ জানুয়ারী ২০১৩ সালে জাতীয় করণের জন্য যাচাই বাছাই তালিকায় এ বিদ্যালয়টিও অনুমোদন দেয়া হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় অধিগ্রহন আইনে ১৯৭৪ এর ৩(১) পহেলা জানুয়ারী ২০১৪ সালে এ বিদ্যালয়টি সরকারি নিয়ন্ত্রনে নেয়া হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন নিরলস পরিশ্রম করে সুনামের সাথে চাকরিরত অবস্থায় শিক্ষিকা খালেদা ১২ ফেব্রুয়ারী ১৭ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে ২ মেয়ে রেখে যান। এ সুযোগে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল গণি খন্দকার এবং প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা খালেদার সকল কাগজপত্র বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পূর্বের শিক্ষিকা খালেদার যোগদান ৫ ডিসেম্বরেই শামিমা নামের আরেকজন শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেখান।
এদিকে শিক্ষিকা খালেদার স্বজনরা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এতিম সন্তানরা সরকার থেকে কোনো অনুদান পাবে কিনা জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তালবাহনা করে। এতে তাদের সন্দেহ হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে শিক্ষিকা খালেদার নথিপত্র গায়েব করার পাঁয়তারা চলছে। এতে শিক্ষিকা খালেদার ৫ বছরের বেশী সময় ধরে চাকরি করায় সরকারের সকল সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগকারি শিক্ষিকা খালেদার স্বামী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অসৎ ব্যক্তিদের যোগসাজসে ওই শুন্য পদে নতুন নিয়োগের পাঁয়তারায়, এতিম সন্তানরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সব নথিপত্র গায়েবের চেষ্টা চলছে। আমি এতিম সন্তানদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে চাই।
এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষিকা খালেদাকে আমরা দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করতে দেখেছি। তিনি মারা যাওয়ার পর অন্য একজনকে নিয়োগ দেয়ায় এলাকায় কানাঘুষা চলছে। আমরা চাই, সরকারি বিধি মোতাবেক যাতে তার এতিম সন্তানরা তাদের ন্যায্য অধিকার পায়। অভিযোগ স্বীকার করে সভাপতি আব্দুল গণি খন্দকার জানান, যে মরে গেছে সেতো শেষ। আমার স্কুল আমি যা করব তাই হবে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন