জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে ছিল ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল। আর মধ্যাঞ্চলের চাই ৩ উইকেট। জিততে পারত যেকোনো দলই। তবে বগুড়ায় কুয়াশাঘেরা শীতের সন্ধ্যা নেমে আসে হঠাৎই। ব্যাটসম্যানরা বল দেখছিলেন না ঠিকমতো, ফিল্ডারদেরও একই হাল। ম্যাচ তখন নির্ধারিত সময়ের থেকে ৮ মিনিট বেশি হয়ে গেছে। প্রকৃতির বাধায় শেষ সকল রোমাঞ্চ, তুমুল উত্তেজনা। তাতে অতৃপ্তি নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দুই দল। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে তারা।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৩১তম হাফসেঞ্চুরি স্মরণীয় হতে পারতো। তার চমৎকার পারফরম্যান্সের পর মাহমুদুল হাসানের সেঞ্চুরিতে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল পূর্বাঞ্চল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে মাত্র ৬ রানের জন্য ৩২৬ রানের টার্গেট ছুঁতে পারল না তারা। ৭ উইকেটে ৩২০ রানে চার দিনের এই ম্যাচে ড্র মানতে হয়েছে তাদের।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ২ উইকেটে ৭১ রানে শেষ দিনের খেলা শুরু করে পূর্বাঞ্চল। ৭৭ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে হাফসেঞ্চুরি করেন আশরাফুল। মাহমুদুলের সঙ্গে ১০৩ রানের জুটি গড়ে ক্রিজ ছাড়েন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ৯৯ বলে ৮ চার ও ২ ছয়ে সাজানো তার ৬৬ রানের ইনিংস।
তারপর তাসামুল হকের সঙ্গে ১১২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন মাহমুদুল। তাসামুল ৩৬ রানে আউট হলে কিছুটা ভাঙন ধরে পূর্বাঞ্চলের ব্যাটিং লাইনে। মাহমুদুল ২৪২ বলে ১২ চারে ১৩৫ রান করেন।
এনামুল হক জুনিয়র ও আবু জায়েদ রাহীর জুটিতে জয় একহাত দূরে ছিল তাদের। কিন্তু খেলা অমীমাংসিত থেকে যায় দিন শেষ হওয়ায়। তাতে স্বস্তির ড্র’য়ের দেখা পায় মধ্যাঞ্চল। ১৬.৮২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে তারা। পূর্বাঞ্চল ১১.৪৪ পয়েন্টে তিন নম্বরে।
দ্বিতীয় ইনিংসে মধ্যাঞ্চলের পক্ষে শহীদুল ইসলাম নেন ৫ উইকেট।
এদিকে, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চলের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ যে ড্র হচ্ছে তা ছিল একেবারে নিশ্চিত। তৃতীয় দিন শেষেও দক্ষিণাঞ্চলের ৩২৯ রানের জবাবে উত্তরাঞ্চলের প্রথম ইনিংস শেষ হয়নি।
৭ উইকেটে ৩৮২ রানে শেষ দিন খেলতে নামা উত্তরাঞ্চল আর ১২ রান করতেই বাকি ৩ উইকেট হারায়। এদিন সবগুলো উইকেটই নেন রাজ্জাক। আগের দিন ৩ উইকেট নেওয়া দক্ষিণাঞ্চল অধিনায়ক তার চার ওভারে সোহাগ গাজী, সানজামুল ইসলাম ও শুভাশীষ রায়কে ফেরান। উত্তরাঞ্চলকে ৩৯৪ রানে অলআউট করতে রাজ্জাক ৫৫.১ ওভারে ৭ মেডেনসহ ১২৬ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। গত আসরের শীর্ষ উইকেট শিকারী এক ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব তিনি দেখালেন এনিয়ে ৩৬ বার।
৬৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে দক্ষিণাঞ্চল দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ২৪৮ রান করে। আল-আমিন ইনিংস সেরা ৭৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১১৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দক্ষিণাঞ্চল প্রতিরোধ গড়ে তার সঙ্গে মেহেদী হাসানের ১৩০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে। ৫০ রানে টিকে ছিলেন মেহেদী। তার আগে ওপেনার এনামুল হক বিজয় করেন ৬৬ রান।
তিন ম্যাচে তৃতীয় এই ড্রয়ে ১১.৪৯ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরেই থাকল উত্তরাঞ্চল। দুই ড্র ও এক হারে ৬.৪৫ পয়েন্টে সবার শেষে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণাঞ্চল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন